সেইসব রমনী, যারা সকাল সন্ধ্যায় পুরুষগনকে বর্বর, অসহিস্নু, প্রতারক ইত্যাদি নাম জানা না জানা কত কিছু বলে সাহিত্যিকভাবে গালাগাল করেন, আর কিঞ্চিত আত্মতৃপ্তি লাভ করেন, নিজেরা সর্বক্ষণ পুরুষালি ভাব ধরে থাকেন, কেউ চুল ছোট করেন, কেউ শার্ট প্যান্ট কিংবা টি-শার্ট পড়ে “আমি কি হনু” ভাব ধরে থাকেন। আমার বড় দুঃখ হয় তাঁদের দেখে।
আহারে কত দুঃখ তাঁদের! কতটা অসহায় তাঁরা! বামুন হয়ে চাঁদ ধরার মতই তাদের অবস্থা। যাদের ঘৃণা করেন, যাদের আচরন নিকৃষ্ট(!)বলে দাবী করেন অথচ সেই তাঁদের মতই হয়ে উঠার হবার জন্য কি প্রবল বাসনা। কতটুকু নৈতিকভাবে খাটো হলে এরকম হতে পারে। প্রকৃতিগতভাবেই তারা কত দুর্বল আর অসহায়! কিছু করতে না পেরে শেষে সৃষ্টিকর্তা কে দোষারোপ করতে থাকে।
আচ্ছা আমার প্রশ্ন এখানে, জানতে মুঞ্চায় আরকি, তর্কের খাতিরে না হয় মেনে নিলাম, মানুষ প্রজাতির মধ্যে পুরুষরা নারীদের সাথে এমন Discrimination তৈরী করে রাখে, তারা (পুরুষেরা) বিভিন্ন রকম অজুহাতে নারীদের কেবল ভোগের বস্তু হিসাবে দেখে, তাঁদের সবসময় করায়ত্ত করে রাখার চেষ্টায় থাকে। ধর্মের দোহাই দিয়ে, কিংবা ধর্মগ্রন্থসমূহ আবিস্কার করে নারীদের গৃহবন্দী করে রাখে। তাহলে এই পৃথিবীতে অন্য যত পশু আছে যারা সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে তাদের প্রায় শতভাগই আমার জানামতে নেতৃত্ব দেয় কিংবা কতৃত্ব করে পুংলিঙ্গের অধিকারীরা। আমাদের গৃহপালিত যে পশু গরু, ছাগল, মহিষ কিংবা ভেড়া সবারই নিজের এলাকাতে বা একই মাঠে এক পুংলিঙ্গ অন্য পুরুষ পশুকে কাছে ভিড়তে দেয় না। যদি তার শক্তিতে কুলায় তবে অনাহুত নবাগত কে দমন করে কিংবা নিজে বশ্যতা শিকার করে অন্যত্র চলে যায়। একমাত্র শুকর কে দেখা যায় নিজের ভাগ অন্যের সাথে শেয়ার করতে। আমি তা দেখেছি সুইপার কলোনির আশে পাশে যেসব শুকর তাঁরা লালন পালন করে সেই খোঁয়াড়গুলোতে কয়েকটা শুকর মিলে এক শুকরীর সাথে সঙ্গম করতে। শুধু গৃহপালিত নয় বনের মধ্যে যে পশু সেই পশুদের মাঝেও দেখা যায় একই ঘটনা। স্ত্রী লিঙ্গের সেই সব প্রানীরা পুরুষের বশ্যতা শিকার করে শত হাজার বছর ধরে বসবাস করে আসছে। কখনো কোন স্ত্রীলিঙ্গের পশু পুংলিঙ্গ হয়ে উঠতে চায় নি। কেনো? মানুষদের মধ্যে না হয় বুজলাম ভাগ্যক্রমে অথবা কাকতালীয় ভাবে পুরুষরা Dictatorship পেয়ে গেছে। তাহলে অন্তত একটা পশুদের মাঝেও কি নারী নেতৃত্ব থাকাটা স্বাভাবিক ছিলো না? অনেকে উদাহরন দিতে পারেন পিপড়া কিংবা মৌমাছির। সেখানেও কিন্তু পুংলিঙ্গই প্রধান। ভালো করে খেয়াল খৈরা কিন্তু। পৃথিবীতে এপর্যন্ত যতগুলো ধর্ম এসেছে সেখানে সব জায়গায় পুরুষরাই নাকি বানিয়ে বানিয়ে এনেছে! আমার প্রশ্ন হলো তাহলে নারীরা এতগুলো বছর কার *ল ছিড়ছে? একটা সামান্য ধর্মও নিজেরা আবিস্কার করতে পারলোনা এতদিনেও। নিজেদের দুর্বলতা ডাকতে এখন বলে পুরুষরা ধর্ম ব্যবহার করে নারীদের ভোগ করে চলেছে। নারীদের থাকার মধ্যে আছে ঐ একটাই, তা হলো তাদের মুখ। তাদের সকল অক্ষমতা ঢেকে দিয়েছে ঐ একটি প্রত্যঙ্গই! যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে সবগুলোতে পুরুষরা নেতৃত্ব দিয়েছে। সকল সাম্রাজ্যগুলোতে শত সহস্র বছর ধরে শাসন করেছে পুরুষরাই।
কিছুদিন আগে একজন কে ফেসবুকের স্ট্যাটাসে লিখতে দেখলাম তিনি নাকি পোষাকের (পোষাক বলতে গ্যাঞ্জি, টি শার্ট বুজাচ্ছেন আর কি) নিচে ব্রা পড়েন না (বাপরে! কি মহা বড় কাজ) এমনকি ব্রা’র সাইজ সম্পর্কেও উনার ধারনা নেই! অবশ্য এটা জানান নি উনি প্যান্টের নিচে প্যান্টি পড়েন কিনা। অথবা এ বিষয়ে উনার ধারনা কতটুকু। একজনের কোন বিষয়ে অজ্ঞতা থাকতেই পারে। তা নিয়ে আমার মাথা ব্যথার কোন কারন থাকা উচিত না। উনি যা ইচ্ছা পড়বেন বা ন্যাংটা হয়ে ঘুরে বেড়াবেন সেটা সম্পূর্ণ উনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। তা আমাদের কেনো জানাচ্ছেন? এর মানে কি বুঝায়? আমরা কি কখনো বলে বেড়াই আমি আজ জাঙ্গিয়া পড়িনি বা কখনই পড়ি না, কিংবা জাঙ্গিয়ার সাইজ সম্পর্কে আমার কোন ধারনাই নেই। তাঁরা প্রায় সময়ই বলে পুরুষের কুদৃষ্টি! আশ্চর্য বিষয়! দৃষ্টির আবার “সু” আর “কু” কি? দৃষ্টি ত দৃষ্টিই। তাদের যেমন যা ইচ্ছে পড়ার স্বাধীনতা আছে, ঠিক তেমনি আমাদেরও অধিকার আছে যা ইচ্ছে দেখার এবং যেভাবে ইচ্ছে দেখার, যেরকম ইচ্ছে অনুভব করার। এই নারীরাই এসব দৃষ্টিবিভেদ তৈরী করে রেখেছে। পুরুষরা কখনো আগবাড়িয়ে তাদের দিকে যায় না বরং নারীরাই নিজেরা এসে পুরুষদের কাছে বিলীন হতে চায় বলেই পুরুষরা তাদের ফিরিয়ে দেয় না। একটা পশুর যখন প্রাকৃতিকগত কামভাবের উদয় হয় সে তখন তাঁর আশেপাশের স্ত্রী পশুর উপর উপগত হয়, স্ত্রী পশুও সেটা প্রাকৃতিক বিষয় বলে মেনে নেয় এবং কাজ শেষ হলে আবার তার কাজে চলে যায়। কিছুদিন পড়ে ঠিকই বাচ্চা জন্ম দেয় বাচ্ছাকে দুধ পান করায়, খাবার সংগ্রহ করে এনে দেয়। তারা কখনোই জাত গেলো বলে চিক্কুর দিয়ে আকাশ আর জমিন এক করে দেয় না। যার শক্তি বেশি তাঁর বশ্যতাই শিকার করে নিতে হয়। এটাই স্বাভাবিক। যদি কখনো এমন আসে যে নারীরা প্রবল পরাকান্ত হয়ে গিয়েছেন, আর সব পুরুষরা শক্তিহীন হয়ে গেছে, নারীরা সব কিছুকে দাবরে নিয়ে বেড়াচ্ছে আর সে সময় যদি পাঁচ ছয়জন মিলে কোন পুরুষের উপর উপগত হয়, তখন আমরা ও তাদের বশ্যতাকে মেনে নিবো। নাকিসুরে কেঁদেকুটে কারো কাছে নালিশ দিতে যাবো না কিংবা নিজেরাই নিজেদের অক্ষমতা প্রকাশ করে তাদের দয়া ভিক্ষা করবো না। কথা দিলাম।
কামনা, হিংস্রতা (তাদের ভাষায় বর্বরতা) এসব কিন্তু পুরুষের প্রকৃতিগত জৈবিক বৈশিষ্ট। এগুলো থেকে সে কখনোই বের হতে পারবে না। বরং নিয়ম থেকে বেড়িয়ে রবীন্দ্রিক হতে গেলেই তখন প্রকৃতিতে অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি হবে।
আরেকটা কথা প্রায় সময় বলতে শুনি অনেককে, নারীদের অধিকার দিতে হবে। আমার অবাক লাগে চিন্তা করে! অধিকার কি চেয়ে নেবার জিনিস? অধিকার কি দান দক্ষিনার ব্যপার? কোথাও যদি তোমার অধিকার ক্ষুন্ন হয় তবে কেড়ে নাও। যাদের কে প্রতিনিয়ত হিংসা করো সে তাদের কাছে তোমাদের হাত পাততে লজ্জা করে না?
বাসের মাঝে আলাদা সিট, স্কুলে কলেজে, চাকরীতে, সংসদে আলাদা বরাদ্ধ! কি মজারে! ক্যানো? লজ্জা করে না ভিক্ষুকের মতো করে চেয়ে নিতে? হ্যডম থাকলে করে দেখাও। চেয়ে নিও না। এভাবেই যখন তাঁরা পারে না কিছু করতে, তখনই ময়ুরের পেখম পড়ে কাকও ময়ুর হতে চায়।
(দয়া করে উপরের লেখার সমালোচনা করতে গিয়ে মা আর বোন কে উদাহরণ নিয়ে আসবেন না, আমি সামগ্রিকভাবে নারী নিয়ে লিখেছি, আশা করি সেভাবেই সমালোচনাগুলো আসবে।)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৭