প্রথমতঃ ১৪০০ বছর আগের ঘটনা কে ১৪০০ বছর আগের হিসাবে বিবেচনা করতে হবে, যেমন সেই সময়কার সামাজিক ও যুদ্ধের রীতিনীতি সম্পর্কে।
আপনি যদি শীতের সময় গ্রীষ্মকালকে বলেন আরামের ঋতু আর গরমের সময় শীত কে বলেন ভালো তাহলে এটা মূর্খদের মতো চিন্তা হয়ে যাবে।
যাইহোক আসল কথায় আসি, দেখুন তৎকালীন সময়ে যেসব যুদ্ধ হতো সেখানে নারীদের অংশগ্রহন ছিলো। তারা কখোনো সরাসরি, কখোনো চিয়ার গার্ল তথা নেচে গেয়ে, বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কবিতা আবৃত্তি করে উৎসাহ দেয়ার জন্য নেয়া হতো, কখোনোবা সৈনিক স্বামীর স্ত্রী হিসেবে যেতো । এবং সৈন্য সংখ্যা সেভাবে হিসাব করা হতো। দাসেরা যে শুধুমাত্র মহিলারা হত তা কিন্তু নয় বরং পুরুষদের পরিমান থাকতো সবচেয়ে বেশী।
সে সময়ের যুদ্ধ পরবর্তী আন্তর্জাতিক নিয়ম ছিলো ঃ
১) জয়ী দল সে যুদ্ধবন্ধীদের সাথে যা ইচ্ছা করতে পারতো, এবং তাতে অন্য দেশ কিংবা জাতি কিছুই বলতে পারতো না, বর্তমান জাতিসঙ্ঘ কিংবা বিভিন্ন অরগানাইজেশন এর মতো তথাকথিত স্বীকৃত কোন অরগানাজেশন তখন ছিলো না
২) যুদ্ধবন্ধীদের নুন্যতম কোন অধিকার ছিলো না। মহিলা যুদ্ধবন্ধীদের কে ধর্ষণ কিংবা বেশ্যা হিসেবে বাজারে বিক্রি করে দেয়া নিয়মিত রীতি ছিলো তখন। তাদের কে দাস কিংবা দাসী হিসেবে হিসেবে বিক্রি করা যেতো । এমনকি সেইসকল দাসীর সন্তানেরা দাস হিসেবেই জন্ম নিতো।
৩) সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী বিভিন্নরকম মুক্তিপন আদায় করে তারপর মুক্তি দেয়া হতো।
৪) আর যারা মারাত্মক উগ্র কিংবা যুদ্ধে যদি তার দ্বারা ক্ষয়ক্ষতি বেশী হতো তখন তাদের হত্যা করা হতো ।
সুতরাং এই সময়ে এসে এটা বলা যুক্তিসম্পন্ন হবে না যে যুদ্ধবন্ধিদের ক্ষেত্রে সে সময় অন্যায় আচরন করা হতো। এটা ত বর্তমান প্রেক্ষাপটে একদম সত্যি কথা সে সময় যুদ্ধবন্ধীদের সাথে মোটেও মানবিক আচরন করা হতো না। কিন্তু সেই সময়ের জন্য সেটাই ছিলো যুদ্ধের রীতি এবং সামাজিকভাবে গ্রহনযোগ্য নীতি । এসব বিষয়কে কেউ অন্যায় মনেই করতো না।
এসব কিছু জেনেই মহিলারা যুদ্ধে যেতো এবং সে রকম পরিনতি ভোগ করতো।
এখন আসা যাক মুসলমনেরা কেনো যুদ্ধবন্ধীদের কে গনীমতের মাল হিসেবে নিতো আর না নিলে কি হতো?
আর মুসলমানেরা সেই সময় সেই আইন ই মানত যেটা অন্যরা মানতো। এটা মানাটাই বাধ্যতামুলক ছিলো। কিন্তু মুসলমানেরা যুদ্ধবন্ধীদের সাথে এমন মানবিক আচরন করতো যা এর আগে কখনো কোন অমুসলিমেরা করেনি। পার্থক্য এখানেই আর কোথাও না।
১) মুসলমানেরা ছিলো গরীব তারপরেও তারা যুদ্ধবন্ধীদের নিজেদের ঘরে নিয়ে যেতো এবং তাদের খাওয়া দাওয়া দিতো নিজেরা যা খেতো তাই তাদের দিতো ।
২) যুদ্ধবন্ধীদের যেসব সন্তান হতো সেসব মুক্ত হিসেবে গন্য করা হতো।
৩) কোন দাসী মুসলমান হয়ে গেলে তার সাথে আর যৌন সম্পর্ক করা যাবে না।
৪) মহিলাদের বেশ্যা/পতিতা হিসেবে ব্যবহার করানো সম্পূর্ণ নিষেধ ছিলো।
৫) যদি তার মালিক মরে যেতো তাহলে সে মুক্ত হয়ে যেতো ।
৬) যখন দেখা যেতো যে তারা মুসলমান হয়ে গেছে তখন পুরুষ হলে মুক্ত করে দেবার ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া হতো । আর মহিলা হলে বিয়ের জন্য বলা হতো ।
এখানে একটা কথা প্রসংগত বলা দরকার , আমাদের দেশের তথাকথিত নাস্তিকেরা যে সব নির্যাতনের কেচ্ছা কাহিনী শুনায় তার একটার ও প্রমান দিতে পারবে না। আমি নিজে দেখেছি তাদের লেখা পড়ে কি রকম নির্জলা মিথ্যা তথ্য দেয়। আমি অনুরোধ করবো কেউ যদি এসম্পরকিত কোন লেখা পান আমাকে দিবেন আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতেছি আমি এর সঠিক তথ্য দিতে পারবো ইনশা আল্লাহ।
কোন যুদ্ধে মুসলমানেরা হেরে গেলে মুসলমানদের প্রতিও কিন্তু তৎকালীন সেই আইন ই প্রযোজ্য থাকতো । সে সময় উভয় দলই একই আইনের অধীনে থাকলেও আমাদের তথাকথিত নাস্তিকেরা (পড়ুন ইসলাম বিদ্ধেষীরা) সেই সময়ের আইন নিয়ে সোচ্চার নয় বরং কেবল মুসলমানদের বিরুদ্ধেই তাদের যত সমস্যা ।
টিট ফর ট্যাট, প্রতিপক্ষকে সেভাবেই আচরণ করতে হবে যেরকম তারা আচরন করবে। যদি মুসলমানেরা যুদ্ধবন্ধীদেরকে গনীমত হিসেবে না নিতো তাহলে ত যুদ্ধবন্ধী হতে হবে সেই ভয় ই তাদের থাকতো না, সুতরাং আরো বেশি করেই তারা তাদের মেয়ে, মহিলা আর বাচ্চাদের যুদ্ধে নিয়ে আসতো।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৯