somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এশিয়া কাপ রিভিউঃ (ক্রিকেট রম্য)

০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এশিয়া কাপ শুরু হতে না হতেই বাংলাদেশের একেকজন ঝড়া পাতার ন্যায় ঝড়ে গেলো।সাকিব চুলকাতে চুলকাতে গেলো, তামিম ঘেটি সোজা করতে না পেরে সিঙ্গাপুর গেলো, লৌহ মানসিকতার মাশরাফির শরীরখানা আবার মোমের, সে সাইড স্ট্রেনের ইঞ্জুরিতে পড়ে গেলো। আফঘানিস্তানের ম্যাচে ইঞ্জুরিতে পড়ে গেলো সোহাগও। ইঞ্জুরির সোহাগ দলকে ছাড়ছিলোই না। ভারতের সাথে প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক মূশফিকেরও ইঞ্জুরী। ভারতের আছে বিমাড়, ব্যাটে বলে না পেরে মূশফিককে মারা হলো বীমার।তারপরও দেখলাম হাতে ব্যাণ্ডেজ নিয়ে গোটা টুর্নামেন্ট চালিয়ে গেলো মূশফিক। আমার তো মনে হয় সাকিবেরও চুলকানির জায়গায় ইঞ্জুরি ছিলো।এমন জায়গায় ইঞ্জুরি যে কাউকে বলা যায় না। শ্রীলংকার সাথে সিরিজে ২য় ওয়ানডেতে ক্যামেরা তার দিকে ঘুরতেই ইশারায় বোঝাতে চাইলো "দেখো আমার এই জায়গায় ইঞ্জুরি"। ব্যাস! বেরসিক বিসিবি সেটাকে অশোভন বলে দিয়ে দিলো তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা।

আফঘানিস্তানের সাথে ঘা খেয়েও পরের ম্যাচে পাকিস্থানের সাথে রেকর্ড ৩২৬! বিজয় এর উচিত ছিলো ৮০তে যেয়ে ক্যাটওয়াক করে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরির পিছু না হয়ে মেরে খেলে “টাইগার ওয়াক” অব্যাহত রাখা।এতে করে সে যদি দারুন খেলা ইমরুলের মতো আউটও হতো,তাহলেই বরং ভালো হতো, সাকিব আরো আগে নামতো, রান কিছু বেশি হতে পারতো।অল্প কিছুর ভেতরে অনেক কিছু করতে পারে বলেই সাকিব বিশ্বসেরা। তার প্রমান হলো পাকিস্তানের ব্যাটিং-এর সময় সাকিবের ৪৫ ডিগ্রী এঙ্গেল-এর থ্রো থেকে আফ্রিদির রান আউট। অবশ্য আউট হবার আগেই স্পিড বোটের গতিতে ছুটে তীরে তরি ভিড়িয়ে দিয়েছে আফ্রিদি। একবার তো দেখলাম আফ্রিদি ট্রাউজারের ফিতা খুলছে।আমি ভাবলাম আনপ্রেডিকটেবল পাকিস্তান বলে কথা! হয়তো প্যান্ট খুলে মারা শুরু করবে! পরে বোঝা গেলো তার হালকা ইঞ্জুরি।লাটসাহেব আম্পায়ারের কাছে রানারও চেয়ে বসেছিলেন! আক্রমনাত্নক আফ্রিদিকে রোখার মতো পালটা আক্রমনাত্নক কোন পেসার ছিলো না ।আমাদের ছিলো দুই “চিকনি চামেলী” পেসার আল আমিন আর শফিউল। অনেক মেয়ে দিনের পর দিন ডায়েট কন্ট্রোল করেও ওদের মতো স্লিম হতে পারে না। তারপরো আল-আমিন শেষ ওভারে চেষ্টা করে গিয়েছে সাধ্যমতো। শ্রীলংকার সাথেও তার বোলিং ছিলো প্রশংসনীয়।

আরেকজনের কথা কথা না বললেই নয়,সে হলো মমিনুল। মালনিউট্রিশনে ভোগা ছেলেটা আসলে মাল। ঠিকই বুদ্ধি করে ফিল্ডারদের চিপা-চুপা দিয়ে বল মেরে রান করে ফেলে। এই চিকনি চামেলী আর মাল নিউট্রিশনের স্কোয়াডে একমাত্র সুঠাম দেহী অলরাউণ্ডার জিয়াউর রহমান। প্রাক্তন কোচ হোয়াটমোর বলেছিলেন বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন দিয়ে বাংলাদেশের একজন পেস বোলার অলরাউণ্ডারের খোজা দরকার। বহু আরোধ্য জিনিষ পাওয়া গেলে সেটাকে ব্য্যাবহারের বদলে সাজিয়ে রেখে দিতে ইচ্ছে হয়। জিয়াকে পেয়ে মুশফিক ভাবলো “এর যদি নজর লেগে যায়”! সেই কারণেই বোধহয় পাকিস্তানের সাথে বোলিং দেয়া হলো না (পাকিস্তানিরা আবার নজর বেশী দেয় কি না), শ্রীলংকার সাথে যখন রান রেট বাড়ানো দরকার তখন তাকে না নামিয়ে নামানো হলো রিয়াদকে। ঢিলা রিয়াদের সাথে আছে আইলসা রাজ্জাক যার কিনা আফঘানিস্তানের সাথে রান নেবার সময় ক্রিজে ব্যাট রাখতেও আলসেমী লাগে। টেম্পরারি সলিউশনে রাজ্জাক রিয়াদকে বাদ দেয়া যেতে পারে কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে দলের জন্য ভালো পেসার দরকার। এতো এতো নতুন স্টেডিয়াম না বানিয়ে একটা পেস বোলার একাডেমী বানালে উপকার হতো। ক্রিকেটারদের বিজ্ঞাপনের মডেল হবার প্রতি মনোযোগকেও সরিয়ে আনতে হনে। ড্রেসিংরুমে সাকিবের চুলকানি হয়তো টিফিন বিস্কুটেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ‘গ্লাক্সসোস ডি’ খেয়ে ভালোই ক্যাচ ধরা শিখেছিল নাসির। আফঘানিস্তানের সাথে চার চার বার ক্যাচ তুলেই কিনা পরীক্ষা করতে চেয়েছিলো আফঘানিস্তানের কে কে গ্লাক্সসোস ডি খায়।ওদিকে তামিম ম্যান’স ফেয়ারনেস ক্রিম মেখে সবাইকে পটিয়ে বেরাচ্ছে, একমাত্র ইঞ্জুরীকে পটানো গেলো না। পত্রিকায় পড়লাম সিঙ্গাপুরে যাবার পর ডাক্তাররা বলেছে অপারেশন লাগবে না।তাহলে ডাক্তারদেরও পটানো হয়ে গিয়েছে???


৮ই মার্চ ছিলো নারী দিবস।সেদিন এশিয়া কাপের ফাইনালে “মহিলা” জয়বর্ধনে আর থিরামান্নের পার্টনারশিপে ভর করে আফ্রিদির নারী ভক্তদের ম্লান করে পাকিস্তনাকে হারিয়ে দেয় শ্রীলংকা। এ সকল দিবস কতটা কাজে আসে? আমরা তো আজও সব দোষই মেয়েদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছি। যেমন সাকিবের সব দোষ চাপছে তার বউ শিশিরের উপর। ভার্সিটি বাসে চড়ে যাচ্ছি, দুইজনের আলাপ শুনতে পেলাম।

১ম জনঃ সাকিবের চরিত্র শ্যাষ।ক্যামেরার সামনে এইটা কি করলো?
২য় জনঃ চরিত্র গেছে ওর বউ এর লাইগা।ওর বউ এরও...... (বাকিটুকু সেনসরড)

ফেসবুকে কিছু লোকজনকে দেখলাম সাকিবকে গালি দেবার সময় শিশিরকেও গালি দিচ্ছে। ভারতের সাথে বাংলাদেশ ম্যাচ হারার পরও সব দোষ শিশিরের। আব্দুর রাজ্জাক সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে বলে এসেছে, " শিশিরের কারণে আমাদের বোলাররা বল গ্রিপ করতে পারে নাই"। তারপরো বাংলাদেশকে অভিনন্দন পাকিস্তানকে হারিয়ে দেবার জন্য। মানে আমি বাংলাদেশ প্রমিলা ক্রিকেট দলের কথা বলছি।পাকিস্তান প্রমিলা ক্রিকেট দল সিরিজ হেরে বসেছে বাংলাদেশি মেয়েদের কাছে। আর ছেলেদের ম্যাচেও আলোচিত ছিলো পাকিস্তানের সাথে ম্যাচে গ্যালারির সেই পাঁচ তরুনী যারা মুশফিকের ক্যাচ মিস দেখে একে অপরকে জড়িয়ে মরাকান্না শুরু করে দিয়েছিলো। সরি বয়েজ, সময়টা পুরোপুরি ছিলো মেয়েদের দখলে।

স্পিকিং অফ ওমেন, আমার প্রস্তাব হলো ক্রিকেট ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের যেমন রেকর্ড রাখা হয় কে কত রান করলো তেমনি ম্যাচের ক্যামেরামানদের রেকর্ড রাখা যেতে পারে কে কত গ্যালারীর সুন্দরী জুম করলো। এমনটা করা হলে রেকর্ড ঘেটে পাওয়া যেতো চ্যানেল নাইনের ক্যামেরাম্যান এশিয়া কাপের প্রতি ম্যাচেই গ্যালারির সুন্দরী জুম করায় ডাবল সেঞ্চুরি হাকিয়েছেন। তিনি এক হাতে হারিকেন আরেক হাতে ক্যামেরা নিয়ে নামেন।হারিকেন দিয়ে সুন্দরী খুজে বের করেন তারপর ক্যামেরা দিয়ে জুম করেন। মাঠের ব্যাটসম্যানরা যেমন শুরুতে ধীরে সুস্থে খেলে শেষের দিকে মারতে শুরু করে তেমনি ক্যামেরাম্যান সাহেবও শুরুতে একটু আধটু সুন্দরী দেখিয়ে সেট হয়ে নেন, এরপর শেষের দিকে পাওয়ার প্লে নিয়ে টানা জুমের পর জুম করতে থাকেন। ব্যাটসম্যানরা পেটাতে পেটাতে অনেক সময় মিসটাইমিং করে ক্যাচ তুলে দেয়, তেমনি ক্যামেরাম্যানও সুন্দরী সুন্দরী দেখাতে দেখাতে মিসটাইমিং করে গ্যালারির কিছু পুরুষ দর্শক দেখিয়ে দেন।

বাংলাদেশ-শ্রীলংকা সিরিজে মাছরাঙ্গা টিভির ক্যামেরাম্যানের স্বভাব ছিলো আরো খারাপ।সেই লোক ক্যামেরা তাক করে রাখতো খেলোয়ারদের ড্রেসিংরুমের দিকে। খেলোয়াররা খালি গায়ে ঘুরছে, তাওয়াল পেচিয়ে চুলকাচ্ছে এসব দেখানো হতো।সাকিব আল হাসান তো সেই ক্যামেরাম্যানের লালসার ফাঁদে পড়েই ক্যামেরার সামনে চুলকানির দায়ে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হলো। তাই মাছরাঙ্গা টিভিরও উচিত সুন্দরী দেখাতে পারে এমন কোন ক্যামেরাম্যানকে নিয়োগ দেয়া। চুলকানী দেখার চেয়ে সুন্দরী দেখা ভালো।


বিগতবারের এশিয়া কাপ নিয়ে আমার আরেকটি পোস্টের
লিঙ্ক রইলো
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×