somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিরো ডিগ্রী নিয়ে সামহোয়্যারইনে লেখা মুভি রিভিউ যুগান্তর পত্রিকায় চুরি

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত শনিবার ৭ ফেব্রুয়ারী বলাকা হলের দুপুর ১টার শোতে আমি সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ছবি জিরো ডিগী দেখি। যেহেতু অনেকদিন ব্লগে লেখা হচ্ছে না তাই ভাবলাম একটি মুভি রিভিউ পোস্ট দেয়া যাক। ৯ ফেব্রুয়ারী সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে আমি সামহোয়্যারইনে জিরো ডিগ্রীর মুভি রিভিউ পোস্ট দেই (লিঙ্ক) । সেটি পরদিন সামুর প্রথম পাতায় নির্বাচিত হয়। আমি গতকাল সেটি ফেসবুকেও নোট আকারে লিখি (লিঙ্ক) । ফেসবুকে আমার দুইটি আইডি, একটি দিয়ে আমি ব্লগারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করি, আরেকটি রয়েছে যেখানে আমার আত্নীয় স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবেরা রয়েছে। এই আইডির স্ট্যাটাস আমি সাধারণত পাবলিক করি না তবে এই আইডিতে দেয়া জিরো ডিগ্রী নিয়ে লেখা নোটটি পাবলিক ছিলো। আজকে আমার ফেসবুকের দুইজন বন্ধু ফেসবুকে লিঙ্ক দিয়ে জানায় ‘জিরো ডিগ্রী’ নিয়ে যুগান্তর পত্রিকার প্রতিবেদনে আমার লেখা চুরি করা হয়েছে (লিঙ্ক) । আমি সেই লিঙ্ক দেখি তারপর যুগান্তর পত্রিকাটি কিনে আনি এবং পত্রিকার ১৩ নম্বর পেইজে আনন্দনগর বিভাগে বড় করে লেখা প্রতিবেদনটি দেখতে পাই যেখানে প্রতিবেদকের নাম দেয়া হয়েছে 'এফ আই দীপু'। লেখাটি পড়ে বুঝতে পারি ফেসবুক থেকে নয়, আমার সামুর লেখাটাই এখানে চুরি করা হয়েছে (কি করে বুঝলাম একটু পরে বলছি)।

সামুতে দেয়া আমার পোস্টের শিরোনাম ছিলো “জিরো ডিগ্রী (জিরো এক্সপেকটেশ্নের মুভি রিভিউ), আর যুগান্তরে শিরোনাম দেয়া হয়েছে “যুব সমাজ নষ্ট করার ছবি জিরো ডিগ্রী”। জিরো ডিগ্রী দেখে যুব সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে এ ধরণের বাক্য আমার লেখায় কোথাও ছিলো না। আমি আমার পুরো লেখায় ছবির গল্পে কিছু অসংগতি তুলে ধরার পাশাপাশি ছবির কিছু ভালো দিকও লিখেছিলাম সেই সাথে ছবির মূল চরিত্রগুলোর নাম বদলে দিয়েছিলাম যাতে রিভিউ পড়তে গিয়ে কাহিনী জেনে গিয়ে অন্য কেউ ছবি দেখতে অনাগ্রহী না হয়ে উঠে।পোস্টটি লেখাও হয়েছিলো হালকা মেজাজে এবং জাস্ট ফান করার উদ্দ্যেশ্যে। আমার লেখাটিতে নয়টি প্যারা ছিলো যার মধ্যে মধ্যে ছয়টি প্যারা ঐ প্রতিবেদনে কপি করে বসানো হয় তবে মাঝে মাঝে কিছু লাইনে পরিবর্তন ছিলো।

যেমন কাহিনীর অসংগতি তুলে ধরতে গিয়ে উদাহরণ দিতে গিয়ে আমি লিখেছিলাম “জেমসের গান শুরু হতেই দর্শক কড়তালি দিয়ে উঠে এবং সেই গান চলাকালে রীনার সাথে মুশফিকের মৃদুমন্দ জাপ্টাজাপ্টির দৃশ্য দেখানোতে বোঝা গেলো তাদের ভেতরে দ্বন্দ চরমে উঠেছে”। পত্রিকায় লেখা হয়েছে “জেমসের গান শুরু হতেই দর্শক করতালি দিয়ে উঠে এবং সেই গান চলাকালে রুহির সঙ্গে প্রেমিকের বিছানার দৃশ্য দেখানোতে বোঝা গেল তাদের ভেতরে দ্বন্দ্ব রয়েছে”। উল্লেখ্য ওই গানের সময় রুহি এবং তার প্রেমিকের কোন বিছানার দৃশ্য ছিলো না। প্রতিবেদক নিজেই ছবিটি দেখেছেন কি না সেই বিষয়ে আমি সন্দিহান।

আরেক জায়গায় আমি লিখেছি “অনিমেষ আইচের এই চেষ্টা যদি আপনি স্বচোক্ষে হলে গিয়ে দেখতে চান, তাহলে এখনই আমার লেখা শেষ করে উঠে যান। শেষ কটি প্যারা পড়ার আর দরকার নেই। আপনার প্রতি একটাই সাজেশন জিরো এক্সপেকটেশন নিয়ে হলে যাবেন, ভালো লাগার সম্ভাবনা তাহলে হয়তো বেশী থাকবে”। পত্রিকায় লেখা হয়েছে "ট্রেইলার দেখে যারা হলে যাবেন তাদের ধরা খাওয়ার আশংকাই বেশি। অতএব যারা হলে যাবেন তারা যেন জিরো এক্সপেকটেশন নিয়ে যান। তাহলে হয়তো ভালো লাগার সম্ভাবনা তৈরি হলেও হতে পারে। আর সেটা যৌনতানির্ভর”। প্রতিবেদকের উদ্দেশ্য স্পস্ট। তিনি আমার লেখা ব্যাবহার করে কয়েকটি জায়গায় যত্ন নিয়ে ছবির যৌণতার দিকেই ফোকাস করতে চাচ্ছেন। তবে আমি আমার ফেসবুকের নোটে এই জিরো এক্সপেক্টেশন নিয়ে লেখা লাইনটি বাদ দিয়েছিলাম যা ব্লগের পোস্টে লেখা ছিলো।তাই আচ করতে অসুবিধা হয়নি যে ব্লগের লেখাটাই চুরি হয়েছে।


আমি লিখেছিলাম “রেসলিং নির্ভর এ ছবিতে মাহফুজ এর চরিত্রটি অনেকটা আন্ডারটেকার-এর মতো। তিনি বদ্ধ অন্ধকার ঘরে থাকেন, সেই ঘরে এতোই গন্ধ যে জয়ার মতো খুনীও সেখানে ঢুকে নাক মুখ কুচকে ফেলে। আর রুহী তো বলেই ফেলে “বাবাগো, কী গন্ধ”। আমরা তো রহস্যের গন্ধের জন্য হলে এসে কিছুই পেলাম না, জয়া আন্টি আর রুহি আপু এটলিস্ট কিছু একটার গন্ধ পেলেন”। আমি স্রেফ মজা করেই উনাদের আন্টি আর আপু বলে সম্বোধন করেছিলাম। প্রতিবেদনে এডিট করে লেখা হয়েছে “অথচ দর্শকরা রহস্যের গন্ধের জন্য হলে এসে কিছুই পেলেন না। জয়া আর রুহি আন্টি (দু’জনকেই ছবিতে আন্টিদের মতো বয়স্ক লেগেছে) অন্ততপক্ষে কিছু একটার গন্ধ পেলেন।

আমর লেখাটির শেষ দিকে লিখেছি “আমার মনে হয় বাংলা সিনেমার ডিরেক্টররা যারা একটি নতুন ধারা তৈরীর চেষ্টা করছেন তারা একটি ট্র্যাপে পড়ে গিয়েছেন। তারা আইটেম গান দিয়ে ছবি বানালে মনে হয় বলিউডকে ফলো করছেন, অলৌকিক এ্যাকশন সিন দিলে মনে হয় তামিল ছবি প্রভাবিত, আবার খোলামেলা দৃশ্য দিলে কলকাতার আর্ট ফিল্ম অনুসরণ করার ঝুকিতে থাকেন। আবার এ সবই বাদ দিতে গেলে সিনেমার বদলে নাটক বানিয়ে ফেলেন”। এটি বাংলা সিনেমায় চলমান ট্রেন্ড নিয়ে আমার অবজারভেশন কিন্তু পত্রিকায় এটই অবজারভেশন শুধু অনিমেষ আইচের দিকেই ঘুরিয়ে লেখা হয় “মনে হয়েছে পরিচালক একটি ট্র্যাপে পড়ে গিয়েছেন। ছবিতে বলিউডকে ফলো করা হয়েছে, তামিল ছবি দ্বারা প্রভাবিত এবং যৌন দৃশ্য সংযোজন করে হলিউডকে অনুসরণ করার বিষয়টি প্রকট। এসব বাদ দিলে জিরো ডিগ্রীকে একটি নাটক বলা যায়”। এছাড়া যেসমস্ত কথা হুবুহু কপি পেস্ট করে বসানো হয়েছে সেইগুলো আর নাই বা বললাম, লিঙ্কেই এর প্রমান রয়েছে।

লেখায় প্রতিবেদক নিজে থেকে আরো কিছু সংযোজন করেছে যার সবই নেতিবাচক কথা। সেই কথাগুলোলো আমার নয়। প্রতিবেদক ইতিবাচক বা নেতিবাচক যেভাবে খুশী লিখবেন কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো যুগান্তরের মতো একটি জাতীয় দৈনিকে একটি ছবির বিরুদ্ধচারন করতে গিয়ে আমার অনুমতি না নিয়ে আমারই লেখা কেন ব্যাবহার করবে? যুগান্তরের ফেসবুজক পেইজ থেকেও লেখাটি শেয়ার করা হয়েছে (লিঙ্ক) ।সেখানে ২০ হাজার লাইক পড়েছে, ৬০০ এর উপরে শেয়ার হয়েছে এবং প্রায় ১০০০ এর উপরে কমেন্ট পড়েছে। প্রতিবেদক যেভাবে একপেশে লিখেছেন তাতে বোঝা যায় মুভি ক্রিটিকের জন্য নয় বরং বিতর্ক তৈরীর উদ্দেশ্যেই লেখাটি লেখা। যুগান্তরের পেইজে সেই লেখা নিয়ে এখন পাঠকদের জমজমাট বিতর্ক হচ্ছেও এবং আমার লেখা ব্যাবহার করে এতগুলো মানুষের সাথে প্রতারণা করে যুগান্তরও তাদের সাইটে হিট কামিয়ে নিচ্ছে। আমি যুগান্তরের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে এবং প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা নেবার দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ জানাতে যাচ্ছি তবে ব্লগেও এই পোস্টটি দিয়ে রাখলাম যেহেতু ব্লগ থেকেই লেখাটা চুরু হয়েছে। এর আগেও সামুর ব্লগারদের লেখা নানা পত্রিকায় তাদের অনুমতি না নিয়েই অন্য নামে ছাপানো হয়েছে। যেহেতু সামুতে পোস্ট দিলে পোস্টের নিচে লেখা উঠে “বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার ও সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশনাকারীর...” সেক্ষত্রে আমাদের কোন লেখারই দায় সামু নিবে না এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই সুযোগে সামুর ডেডিকেটেড ব্লগারদের লেখা ব্যাবহার করে অন্য পত্রিকারা ঠিকই হিট কামিয়ে নিচ্ছে। তাই কীভাবে নিজের ব্লগারদের লেখাগুলোকে অনলাইনে নিরাপত্তা দেয়া যায় সে ব্যাপারটি নিয়ে মনে সামুর নতুন করে ভেবে দেখা দরকার। এ বিষয়ে সামুর সহ ব্লগারদেরও দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৮
২০টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×