ছোট্ট্ একটি নমুনাঃ
চারদিকে যখন সরকারের সাফল্যের জয়জয়কার তখন জনশক্তি রপ্তানিতে ভাটা ও প্রবাসী আয় অনবরত কমতে থাকা সরকারের কোন জাতীয় সাফল্য সেটা হয়তো বের করা একটু মুশকিলই। তবে বলা যায় এতে দেশ ১% হলেও লাভবান হয়েছে যদিও বাকি ৯৯% ক্ষতি হয়েছে।দেশের মানুষ দেশেই থাকছে স্ত্রী সন্তান বাবা মায়ের কাটাকাছি থাকছে এটাও বা কম কিসে।একটি পরিসংখ্যানই বলে দিবে এই দুই খাতে আমাদের বর্তমান অবস্থা।
২০০৭ সালে যেখানে জনশক্তি রপ্তানি হয়েছিল ৮ লাখ ৩২ হাজার ৬০৯ জন সেখানে ২০১৪ সালে প্রথম ৬ মাসে জনশক্তি রপ্তানি ২ লাখ ৭ হাজার ৯৫৭ জন। হয়তো বছর শেষে দাঁড়াতে পারে সেটা ৪ লাখ ১৫ হাজার জনে। অর্থাৎ জনশক্তি রপ্তানির হার অর্ধেকে নেমে এসেছে।
এছাড়াও স্বাধীনতার পর দেশে প্রথমবারের মতো দেশে রেমিটেন্স কমেছে। জনশক্তি রপ্তানির হার কমার পাশাপাশি প্রবাসী আয়ও অনেক কমে গেছে। ২০১২ সালের চেয়ে ২০১৩ সালে রেমিটেন্স কমেছে ৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা যা মোট রেমিটেন্সের ৭% এর সমান। ২০১৪ সালেও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যায়।
আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই এক এক করে বন্ধ হতে থাকে বিদেশে শ্রমের বাজার। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শ্রমবাজার সেীদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায় বর্তমানেও বন্ধ রয়েছে। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে সেীদিতে গড়ে দেড় লাখ জনশক্তি রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ সেখানে গত সাড়ে ৫ বছরে মোট জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৭৭ হাজার।
বাংলাদেশের ২য় জনশক্তি রপ্তানি করা দেশ হল আরব আমিরাত । ১৯৭৬ সালের পর থেকে প্রতিবছরই সেদেশে জনশক্তি রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ কিন্তু ২০১২ সালে আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেয়া বন্ধ করে দেয়। অনেক চেষ্টা করেও রপ্তানির দুয়ার খুলতে পারেনি এই সরকার। জানা যায় সরকারের অদূরদর্শিতায় 'ওয়াল্ড এক্সপো-২০২০' কে সামনে রেখে আরব আমিরাতের পরিবর্তে রাশিয়াকে সমর্থন করায় আমিরাত সরকার বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
ক্ষমতায় আসার পরপরই ২০০৯ সালে কুয়েতের শ্রমবাজার বাংলাদেশীদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।২০১০ সালে শেখ হাসিনা কুয়েত সফর করে এখন পর্যন্ত কোন রাস্তা খুলতে পারেননি ।গত সাড়ে পাঁচ বছরে কুয়েতে জনশক্তি গেছে মাত্র ৭৭৬ জন।
এছাড়াও আরব অন্যান্য দেশগুলোতেও জনশক্তি রপ্তানির হার একবারেই হতাশা জনক।
বাংলাদেশের আরেকটি বড় শ্রমবাজার হল মালয়েশিয়া যেখানে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে চার লাখ কর্মী সেদেশে গেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে মালয়েশিয়াও সেদেশে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে শ্রম বাজার খুলে দিয়ে মাসে দশ হাজার কর্মী নেয়ার কথা থাকলেও গত দেড় বছরে কর্মী গেছে মাত্র ৫ হাজার।
ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামীলীগ নতুন কোন শ্রমবাজার সৃষ্টি না করতে পারলেও হারিয়েছে দেশের বৃহৎ শ্রমবাজারগুলো আর নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির নামে বিদেশ ভ্রমন করে লুটপাট করা হচ্ছে দেশের জমানো সম্পদ।
সরকারের একগেঁয়েমি, অদূরদর্শিতা ও অতিমাত্রায় ভারতপ্রীতি আমাদের জনশক্তি রপ্তানি খাতকে একবারে খাদের কিনারায় নিয়ে গেছে। আশাকরি সরকার নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে খুব দ্রুত বিদায় নিয়ে দেশের এই খাতগুলোকে রক্ষা করবে, দারিদ্রতার কষাঘাত থেকে মুক্তি দেবে দেশের কোটি কোটি মানুষকে।