somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনলাইন ক্লাস পরিচালনার কলা কৌশল

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



"অনলাইন ক্লাস" ২০২০ এ এসে এই নতুন রকম ক্লাসের নামটি শুনতে কারো বাকী নেই। বেশ কিছু বছর ধরেই কাজ করছি বাচ্চাদের সাথে। যদিও পেশায় আমি লেখাপড়ার টিচার তবুও নানা রকম এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিজ যেমন নাচ, গান, আবৃতি, ছবি আঁকা, গল্প বলা বা আর্টস এন্ড ক্রাফটসের সাথেও জড়িত থাকায় প্রায়ই এসব শেখানোর গুরু দায়িত্বটুকুও আমার কাঁধে পড়ে। আর তাছাড়া শিশুদের শিক্ষায় শিক্ষকদের এসব বিদ্যা একটু শিখে রাখলেই ভালো কারণ একটি শিশুর মাঝে বহুমুখী প্রতিভা বা হাজারও শিশুর মাঝে নানা ধরণের প্রতিভার স্ফুরণ ঘটাতে একজন শিশু শিক্ষকের এসকল বিষয়ে একটু জ্ঞান থাকাটা বিশেষ জরুরী। আর সকলে যদি নিজেদের অতীতে একটু চোখ বুলিয়ে আসেন তো দেখতে পাবেন প্রায় সকলেই জীবনে শিশু থাকতে কম বেশি সৃজনশীল কর্মকান্ডের চর্চা করে ফেলেছেন নিজের অজান্তেই। কাজেই সেইটুকু বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে বা শিশু থাকতে নিজেদের কি ভালো লাগতো আর লাগতো না এসব ভাবনাকে কাজে লাগিয়েও সফলতার সাথে শিশুদের যোগ্য টিচার হিসাবে নিজেকে গড়ে তোলা যায়।

এখন কথা হলো অতীত অভিজ্ঞতা। আমাদের জীবনে আমরা ক্লাসরুম, ক্লাস টিচার বলতে যে টেবিল চেয়ার, বেঞ্চ ডেস্ক, চক ডাস্টার দেখে এসেছি তা আরও অতীতের মাদুরে বসে বেঁত হাতে পড়ানো পন্ডিৎ মশায়ের সাথে হুবুহু মিল না থাকলেও সিংহভাগই মিল ছিলো। পড়া লেখা, গান বাজনা ছবি আঁকা এসবই মূলত গুরুমুখী শিক্ষা। হাতে কলমে হাতে খড়ি দিয়ে পড়ালে শেখালেই তা যোগ্য শিক্ষা হয়ে ওঠে বলেই জেনেছি। জন্ম থেকে এই ২০২০ পর্যন্ত আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি এই শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শুধুমাত্র শিক্ষা ব্যবস্থাই নয় পুরো স্কুলই স্কুল বিল্ডিং, বেঞ্চ ডেস্ক ব্লাক বোর্ড হ্যোয়াইট বোর্ড ছেড়ে উঠে আসবে এক টুকরো মনিটর বা স্ক্রীনের মাঝে।

কিন্তু সেটাই হলো । আর বাজ ভেঙ্গে পড়লো মাথায়। বেশ কিছু বছর এই পেশায় কাটিয়ে নানা রকম ক্লাস পরিচালনার ট্রেইনিং নিলেও তো এই অনলাইন ক্লাস ট্রেইনিং নেই আমাদের। কি করবো? কেমনে পড়াবো? কিভাবে এত ছোট বাচ্চাদেরকে হাত না ধরে লেখাই শেখাবো এসব ভাবতে ভাবতে ঘুম হারাম হয় হয় অবস্থা। জানতে পেলাম জ্যুম এপ দিয়ে নাকি ক্লাস করানো হয়। কি এই জ্যুম এপ, কি এর ব্যবহার কিছুই জানিনা। স্কুল থেকে ট্রেইনিং হলো, নিজেও ইউটিউব ঘেটে জেনে নিলাম রকম সকম। এত বছরের অভিজ্ঞতা খাঁটিয়ে লেগে গেলাম কাজে।

তো শেষমেষ দীর্ঘ দশ মাস পাড়ি দিয়ে জানলাম ও নিজেই উপলদ্ধি করলাম-

অনলাইন ক্লাসের মূল ব্যপারটাই হলো উপস্থাপনা বা প্রেজেনটেশন - এই উপস্থাপনা বা প্রেজেনটেশন ব্যপারটাই সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। যদিও উপস্থাপনা বা প্রেজেন্টেশন ব্যপারটা আমাদের অনেকের কাছেই কমফোর্টেবল না বা আনন্দের বিষয় না। আমরা যতদিন ধরেই শিক্ষকতা করি না কেনো? ক্লাসরুমে শত বাচ্চাকে পড়ানো আর স্ক্রীনে একা একদিক থেকে অপরদিকে ২০টা বাচ্চাকে কন্ট্রোল করা আর শেখানো, তাও আবার শুধুই কথার মাধ্যমে সহজ নয় বটে। আরও একটা বিশেষ সমস্যা বাচ্চাদের সাথে থাকেন অভিভাবকেরা। মানে বাবা মা এবং কিছু ক্ষেত্রে বাড়ির অন্যন্য সদস্যেরাও। সবাই তাকিয়ে আছে এই ব্যপারটিই ঘাবড়ে দেয় প্রায় সবাইকেই। আর তাই প্রয়োজন নিজেকে নিজের কাছে ও অন্যের কাছেও সহজ করে তোলা। হ্যাঁ তবে সহজ কথা যায় না বলা সহজে।তাই মনে করতে হবে যেন আমরা একটা গল্প বলছি।

এই ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে গল্প যখন আমরা শুনি সবচাইতে ইন্টারেস্ট ফিল করি যে যতটা ইন্টারেস্টিং করে গল্প বলতে পারে তার গল্পতেই। এইখানে মনে আসতে পারে ছোট্টবেলার দাদী নানী বা যে কোন প্রিয় শিক্ষকের গল্প বলার স্টাইল হতে শুরু করে আবদুল্লাহ আবু সাইদ স্যারের ইন্টারেস্টিং ওয়ে অব টকিং বা সহজবোধ্য খুব সহজেই সকলের সাথে মিশে যাওয়া বা নিজেকে গ্রহনযোগ্য করে তোলার ব্যপারটা।

প্রেজেন্টেশন মাস্ট বি ইন্টারেস্টিং নট বোরিং- অনলাইন ক্লাস তথা ফিজিক্যাল ক্লাসেও প্রেজেন্টেশন এমন হতে হবে যেন তাতে দু মিনিটেই মানুষ হাঁপিয়ে না ওঠে বা দীর্ঘ বোরিং কথা বলায় ঘুমিয়ে না পড়ে। এই কারণে স্টার্টিং বা শুরুটা খুব জরুরী। এই শুরুতেই ইন্টারেস্টিং বা চমক লাগিয়ে দেওয়া যায়। টিচিং ট্রেইনিং এ একটা টার্ম আছে আইসব্রেক। শুরুতেই এমন কিছু করা বা দেখানো তা হতে পারে যে কোনো আনউজ্যুয়াল শব্দ, গান বা বাজনা বা একটিভিটি যা মূহুর্তেই সকলের মনোযোগ আকর্ষন করে ফেলে। এতে শিক্ষকের জন্য ক্লাসের সবচাইতে দুষ্টু বাচ্চাটির মনোযোগও এক নিমিষে পাওয়া সম্ভব।

সিটিং এ্যারেঞ্জমেন্ট - সিটিং এরেঞ্জমেন্ট ক্লাসরুমে যেমন জরুরী বিষয় অনলাইন ক্লাসেও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এটা হতে হবে টিচারের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রযোজ্য। বিশেষ করে মনিটরে টিচারের অর্ধেক মাথা আসছে নাকি ফুল বডি এটা আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে। ক্যামেরায় যেন অন্তত হাত পর্যন্ত দেখা যায় এ দিকে খেয়াল রাখতে হবে। খুব কাছে বা খুব দূরে না বসে মোটামুটি একটু দূরে কিন্তু সঠিক দূরত্বে বসতে হবে। এই কারণে কর্ডলেস মাইক্রোফোন বা হেডফোন জরুরী।

ভিজুয়ালাইজেশন- যে সকল রিসোর্স টিচার দেখাবে তা যেন ঠিক ঠাক দেখা যায় এবং মনিটরে যে সকল ছবি বা ভিডিও দেখানো হয় সেসবও যেন ক্লিয়ার ও বোধগম্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মোট কথা টিচারের নিজের অবয়ব ও যে সকল রিসোর্সেস ইউজ করতে তা শিক্ষার্থীর কাছে স্পষ্ট হতে হবে। মনিটরে না তাকিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। টিচারের বসার স্টাইলটা হবে ক্যামেরা ও তার নিজের আই লেভেল বরাবর।

ড্রেস আপ- অনেকেই ভেবে থাকেন বাড়িতেই আছেন কে আর আলসেমী ছেড়ে সেজেগুজে ক্যামেরায় বসে। কিন্তু এটাই সবচেয়ে বড় ভুল। একে তো শেখ সাদীর গল্প যাদের জানা আছে তারা সকলেই জানেন পোশাকেরও যে একটা মূল্য আছে। তা ছাড়াও আমরা মনিটর বা স্ক্রিনে কি দেখে অভ্যস্থ? ম্যুভি, নাটক, ভিডিও মিউজিক এসব পোশাকী সাজসজ্জার অনুষ্ঠান বা চিত্র। কাজেই হঠাৎ করে জীর্ন শীর্ন ভাঙ্গচুর দশার চেহারার কেউ কথা বলছে সেই দৃশ্য একটি শিশু বা শিক্ষার্থীর কাছে খুব একটা গ্রহনযোগ্যতা পাবে না। এ ছাড়াও নিজেই যখন আমরা যথার্থ পোশাক পরে পরিপাটি হয়ে কোনো কাজে সামিল হই তা হয় যেমনই প্রফেশন্যাল তেমনই সেই ব্যাক্তিটিও নিজের কাজের প্রতি কতটা যত্নবান ও ভালোবাসার পরিচায়ক সেই সাক্ষ্য বহন করে।

লাইটিং- নর্মাল ক্লাসরুমেও পর্যাপ্ত আলো বাতাসের সঞ্চালন বিশেষ জরুরী ঠিক একই ভাবে অনলাইন ক্লাসে আলো ও শব্দের নিয়ন্ত্রন প্রয়োজন। মাথার উপরে বা পিছে লাইট থাকলে শিক্ষকের মুখ আলো আঁধারে শিক্ষার্থীর মাঝে উদ্দীপনার পরিবর্তে ভূতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি করতে পারে যা মোটেও একটি ক্লাসের জন্য মোটিভেটিং না। টিচারকে এমনভাবে লাইট এরেঞ্জমেন্ট করতে হবে যেন মুখের উপর লাইট পড়ে ও টিচারের মুখ কথা বলা সবই যেন স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।

ব্যাক গ্রাউন্ড - অনালইন ক্লাসে নানা রকম ব্যাকগ্রাউন্ড সৃষ্টি করা যেতে পারে। পিছে নানা রকম ছবি বা বোর্ড বা পোস্টারের আয়োজন করে আবার একইভাবে ভারচুয়াল ব্যাকগ্রাউন্ডে সমুদ্র আকাশ বা ভলকানো নিয়ে পড়াবার সময়ও আমরা সেসব পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি ব্যাকগ্রাউন্ডের মাধ্যমে। তবে অতিরিক্ত আনউজ্যুয়াল জিনিসপত্র রেখে বা অপ্রয়োজনীয় আনপ্রফেশন্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড শিক্ষার্থীর মনোযোগের ব্যঘাৎ ঘটায়। এ ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে।

ম্যুভিং রিসোরসেস - আজকালকার বাচ্চারা কম্পিউটারে নানা রকম গেইম খেলছে, এনিমেশন ম্যুভি দেখছে নিজেরাই নানা রকম থ্রিডি এফেক্ট এমিউজমেন্ট পার্কে যাচ্ছে। তাদের কাছে স্থবির চিত্রের বইগুলি বা ক্লাসরুম তার তুলনায় কম ইন্টারেস্টিং। অনলাইন ক্লাসে তাই অতি সহজেই আমরা ম্যুভিং রিসোরসেস ইউজ করে, ভিডিও বা নানা রকম গেইমের আয়োজন করে তাদের মনোযোগ দ্রুত আকর্ষন করতে সক্ষম হতে পারি। তবে এ ক্ষেত্রে টিচারের মানষিকতা বিশেষ জরুরী। সময় ও শ্রম দিয়ে এই নতুন ব্যবস্থা শিখে নিতে হবে।

টকিং স্টাইল- কথা বলার জড়তা পরিহার করার চেষ্টা করতে হবে। এই ক্ষেত্রে শুধু মাত্র অনলাইন বলেই না প্রতিটা শিক্ষকের চর্চা বিশেষ জরুরী। কথা বলার সময় হাসিমুখে কথা বলতে পারার দক্ষতা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে গ্রহনযোগ্যতা বাড়ায় বলেই আমি মনে করি। যে কোনো বয়সের মানুষেরই মেন্টাল সেইফ ফিলিং আসে যা যে কোনো শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রেই বিশেষ জরুরী।

গোমড়া মুখে বা খুব ধীর গতীতে সময় নিয়ে কথা বললে অনেকেই বিরক্ত হয়ে ওঠে তাই কথায় ছন্দ ধরে রাখতে হবে। টিচার নিজেকে যত এনার্জেটিক ও এক্সাইটেড দেখাতে পারবে ততই শিক্ষার্থীর মাঝেও এক্সাাইটমেন্ট ও এনার্জীটা পাস করতে পারবে। মানুষ নিজের অজান্তেই টিচার, নেতা ম্যুভির নাটকের নায়ক নায়িকাদের চলন বলন সহ কথার স্টাইলে প্রভাবিত হয়। এই কারণে টিচারের আদর্শটা সবসময় মাথায় রাখতে হবে।

স্টুডেন্টস টিচার রিলেশনশীপ এন্ড এনগেইজমেন্ট - স্টুডেন্টস টিচার রিলেশনশীপ ও এনগেইজমেন্টটা বিশেষ জরুরী। অনলাইন ক্লাসে টিচারের পক্ষে অপরদিকে মনিটর বা স্ক্রীনের আড়ালে শিশু কি করছে সব সময় বুঝা সম্ভব না তাই প্রশ্ন করা ও প্রায়ই নাম ধরে ডেকে কিছু জিজ্ঞাসা করার অভ্যাস বজায় রাখতে হবে। যেন শিক্ষার্থী সব সময় এলার্ট থাকে তাকে যে কোনো সময় ডাকা হতে পারে। তাদেরকে ইমোশনাল সেফটি দিতে হবে। কোনো কিছুর উত্তর না পারলে অভিভাবক বা বাড়ির অন্যান্য সদস্যের কাছে যেন হেয় না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে সঠিক উত্তর দানে সহায়তা করতে হবে।

সাইকোলজী অব প্যারেন্টস এন্ড স্টুডেন্টস - প্রথমে স্টুডেন্ট সাইকোলজী এবং তারপরই প্যারেন্টস সাইকোলজী বুঝতে পারাটা একজন যোগ্য টিচারের বিশেষ যোগ্যতা বলে আমি মনে করি। নিজেদের অতীতে তাকালেই আমরা দেখতে পাবো পরীক্ষায় খারাপ করলে বা ক্লাসে কোনো দুষ্টুমী করলে বাড়ীতে এসে বাবা মায়ের বকা ঝকা শাস্তির ভয়টা শিশুমনে কিভাবে কাজ করতো। সেই বয়স থেকে আমরা চলে এসেছি আজ অতীত ভেবে আমাদের হাসি পায় তবে সেই বয়সে আছে আপনার শিশুটি, আপনার ছাত্রটি কাজেই সেই ভীতিকর মেন্টালিটিটাকে হঠিয়ে দিয়ে আমরা শিশুদের শিক্ষা যাত্রাকে কিন্তু চাইলেই আনন্দময় করতে পারি। কাজেই অনলাইন ক্লাসে প্যারেন্টসদের সামনে কোনো উত্তর ভুল বলে অপদস্ত হতে পারে এমন বাচ্চাকে আমরা সহায়তা করবো যেন সঠিক উত্তর দিতে পারে বা কোনো ভাবেই এমবারেস ফিল না করে।

একই সাথে বাবা মাকে বা অভিভাবককে এই সস্থিটুকু দিতে হবে যে টিচার তার বাচ্চার ব্যাপারে যত্নশীল। আর তাই প্রতিটি বাচ্চার ইম্পরুভমেন্ট ও মোটিভেশনের ব্যপারে খেয়াল রাখতে হবে। দরকারে এক্স্ট্রা হেল্প দিতে হবে। তবেই একজন টিচার হয়ে উঠবেন সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য ও সফল।

পারসোনাল কন্টাক্ট - যেহেতু অনলাইন ক্লাসেও প্যারেন্টস মিটিং হয়ে থাকছে অনলাইনেই কাজেই শিশুর অসুস্থতা অনুপস্থিতি এবং ক্লাস পারফরময়েন্সের ব্যাপারেও প্যারেন্টসের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। এতে শুধু দায়িত্বই না মানবিকতা ও দু পক্ষের মাঝে মানষিক আস্থার সৃ্ষ্টি হবে যা একজন মানুষ হিসাবেও দু পক্ষকেই উন্নত করে।


এবারে বলবো অনলাইন ক্লাসের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ভিজ্যুয়াল হাইজিন আর টেকনিকাল হাইজিন নিয়ে।

ভিজ্যুয়াল হাইজিন - যখন কোনো লেসন আমরা পাওয়ার পয়েন্টে বা স্লাইডস তৈরী করবো তখন যা যা মাথায় রাখবো তা হলো-

সহজ বোধ্য চোখে আরাম দেয় এমন ক্লিয়ার ছবি ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত রংচঙে এনিমেশন এসব এভোয়েড করাই ভালো। টেক্সট অংশ মাঝে রাখাই উচিৎ যেন শিক্ষার্থীর মনোযোগ সেখানেই থাকে। বুলেট পয়েন্টে স্লাইডস বানালে তা বুঝতে সহজ হয়। ছবিগুলি যত বড় হয় ততই ভালো।

টেকনিকাল হাইজিন- ক্লাস নেবার সময় সকল অপ্রয়োজনীয় এপলিকেশনগুলি সরিয়ে ফেলাই ভালো। প্রেজেনটেশনের জন্য পিডিএফ ফাইল করে রাখা এই বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে। এছাড়াও রয়েছে নেট কানেকশন সমস্যা। ডিভাইস সমস্যা এসকল সুষ্ঠ ব্যবহার নিশ্চিৎ করতে হবে।


চোখের সমস্যাও একটি বিশেষ সমস্যা। এ কারণে ড্রাই আই ড্রপ ইউজ করা যেতে পারে। অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে। এছাড়াও সবুজ গাছ, নীলাকাশ চোখের সস্থি দেয় তাই কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে ডিভাইজ ব্যবহার ক্ষতি কমাতে পারে। এছাড়াও দীর্ঘক্ষন এক নাগাড়ে স্ক্রীনে চোখ মেলে বসে থাকায় নানা রকম শাররিক সমস্যা, বোন এবং মাসল পেইন হয়। তাই ছোট খাটো ব্যায়াম আর সঠিকভাবে বসার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

অনলাইনে ক্লাস নেওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। যারা নেয় তারাই কেবল তা জানে। এক একটি ক্লাসের পিছে কি পরিমান শ্রম ও সময়ের ব্যয় সাথে মানসিক অস্থিরতা ও অবসাদ তাও কেবল তারাই জানে। আগে যে স্কুল টাইম ছিলো ৭/৮ ঘন্টা তা যেন হয়েছে ২০/২২ ঘন্টা। বাকী দুঘন্টা ঘুম সাথে দুঃস্বপ্ন। হা হা তবুও মানুষ এক অপরাজেয় প্রানী। এত সহজেই হেরে যাবে? কখনও নয় আর তাই কলাকৌশলগুলো রপ্ত করে ফেলি, গাই আনন্দময় জীবনের জয়গান....


দীর্ঘ ১০ মাস কোনোরকম অনলাইন ক্লাস ট্রেইনিং ছাড়াই অনলাইন ক্লাসে নানা রকম টেকনিক খাটিয়ে সেই অভিজ্ঞতার উপরে ভিত্তি করে গতকাল প্রথম একটা ওয়ার্কশপ Best practices of presenting on PowerPoint /Google Slide করেই মাথায় এসে গেলো এই লেখাটা। আশা করি সকল অনলাইন টিচারেরাই চোখ বুলিয়ে ঝালিয়ে নেবেন কতটা মিলে গেলো বা আরও কি কি মিলানো যায় । পৃথিবীর সকল টিচারদের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা.....
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৯
১১৭টি মন্তব্য ১১৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×