somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

*** মর্নিং টি, আফটারনুন টি, ইভনিং টি সব টি এর মাঝে আমার ভেরী ভেরী স্পেশাল হাই টি ***

০৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



"হাই টি" এই শব্দটাই শুনি জীবনে প্রথম আমাদের স্কুলের বৃটিশ প্রিন্সিপ্যাল যেদিন আমাদেরকে স্কুল শেষে হাই টি এর জন্য ইনভাইট করেছিলেন সেদিন। লাঞ্চ না ডিনার না নিদেন পক্ষে টি পার্টিও না এটা আবার কি "হাই টি"? এটা নিয়ে কেউ কেউ আলাপও করে জেনে ফেল্লাম ব্রেকফাস্ট এবং লাঞ্চের মাঝে সময়ের কম পার্থক্য যখন মানে যখন মানুষ বেলা গড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে বেলা চড়িয়ে কিছুমিছু খায় তখনই তাকে ব্রাঞ্চ বলে যেমন তেমনই হাইটিও বেলা গড়িয়ে বিকেল বিকেলে ভারী বা ঠিক ভারীও না এমন কিছু খাওয়াকেই হাই টি বলে। যাকগে সেসব নিয়ে ভাবনার সময় ছিলো না আসলে। আমরাও বেলা গড়িয়ে চড়িয়ে সেই হাই টি পার্টিতে এত শত কেক বিস্কিট দেখেই খুশি। খেয়ে তো বটেই। সেই হাই টি এর মেন্যু কি হয় কেমনে হয় এত সব ভাবনার সময় নেই তখন আর।



এরপর এক যুগ কেটে গেছে। জ্ঞান বুদ্ধি বাড়ার সাথে সাথে জানাও হয়েছে অনেক কিছুই। শুধু হাই টি বললেই হলো না বা আফটারনুন টি বললেই হলো না সেসব কেনো বলছে কি কারণে সেসবও জানতে হয় এখন আমাকে। মানে সোজা কথা বয়স বেড়েছে তো। যাইহোক নিজে জানার সাথে সাথে ভাবি আমার মত যারা হাই টি তে যায় বা খায় তারাও অনেকে হয়ত আমার মতই ঠিকঠাক জানে না এসব কি কারা এনেছিলো কেনোই বা এনেছিলো বা কেউ কেউ জানে কিন্তু যারা জানে না তাদের জানতে দোষ কি? আর আমি যদি একটু জানাতেই পারি। তাই ভাবলাম এবার এই শিক্ষা দীক্ষা নিয়ে একটু লিখি ও আমার হাতে কলমে হাই টি টেবল সজ্জার কিছু চিত্র প্রদর্শনী করি।



হাই টি মানে কি উচ্চ চা!! ওমা এটা আবার কেমন কথা!
তখনও চা চক্র বা টি পার্টি কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, কিন্তু উচ্চবিত্ত শ্রেনীরা লাঞ্চ ও ডিনারের মাঝে চা পান করতেন। সাথে কিছু মিছু বিস্কিট কেক ইত্যাদি ইত্যাদি। উচ্চবিত্তরা তো কত কিছুই খায় কত কিছুই করে কিন্তু শ্রমিক শ্রেণীগুলির জন্য কি আর সেসব সাজে বা সাজতো? সে ছিলো অষ্টাদশ শতাব্দীর দিকের কথা। উচ্চবিত্তরা যাই করুক না করুক শ্রমিকদের এই টি খাবার জন্য ছিলো ভিন্ন সময়সূচী এবং ভিন্ন বাজেট। চা তখনও এতটাই দামী যে শ্রমিক শ্রেণীর জন্য চায়ের পিছে অর্থ নষ্ট করার সামর্থ্য ছিলো না। ক্লান্ত শ্রান্ত কারখানার কর্মীরা যখন সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বাড়ি ফিরতেন বা আরও পরে তখন তারা থাকতেন ক্ষুধার্ত! তাই সে সময়ে যুক্তরাজ্যের শিল্প এলাকায় উত্তর ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ স্কটল্যান্ডের শ্রমিক শ্রেণীর জন্য প্রচলন করে এই হাই টি এর। বৃটিশ হাই টিতে থাকে চা, রুটি, সবজি, পনির এবং মাঝে মাঝে মাংসের আয়োজন। বৈচিত্র্যের মধ্যে থাকে পাই, চিপস এবং ক্র্যাকার এসব।এই হাই টি তখন উচ্চ শ্রেণীর মানুষের জন্য সামাজিক অনুষ্ঠান তবে শ্রমিকদের জন্য এটি বড় প্রয়োজন ছিল।




আচ্ছা একে 'হাই টি' বলা হয় কেনো?
এর একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হল যে এটি টেবিলে পরিবেশিত হত, আরামদায়ক চেয়ার বা সোফায় বসা যেত। যদিও উচ্চবিত্তরা তাদের নিজস্ব স্টাইল গড়ে তুলেছিলো।চা কেক বিস্কিটের সাথে সাথে স্যামন ফিশ এবং ফলের সংযোজন করা হয়েছিলো। আবার পাইও ব্যবহার করা হয়। হা হা পাই এর সাথে হাই এর একটা মিল আছে। যাই হোক আর তাই হোক আমি এত কিছু বুঝিনা বুঝতেও চাই না। আমি জানি আনন্দধারা বহিয়ে দাও ভূবনে.....



তাই যখন গতকাল কেউ কেউ বাসায় আসিবেন ও বৈকালিক নাস্তা খাইবেন বলিয়া আব্দার করিলেন আমি বিরক্ত হইতে হইতে গট দ্যা আইডিয়া হাই টি!!!!!!!!!!! :)



কিনে আনলাম মিঃ বেকার থেকে আমার প্রিয় পেস্ট্রী নানা রঙ্গের নানা ঢঙ্গের। সুফিয়াকে বললাম কিমার চপ বানাতে কারণ মাংসের আইটেম বাংলাদেশি নিজস্ব স্টাইল হাই টি আমার।


এরপর বসলাম পাস্তা কালারফুল আর্টিস্টিক লুক দিতে ব্রকলী, গাজর মাজর এইসব মিশাতে, এরপর কেশুনাট সালাদ চিকেন আইটেম বাড়াতে। এরপর একটা ট্রেতে মিটলোফ বিফ লোফ পনির টনির বিস্কিট মিস্কিট আঙ্গুর টাঙ্গুর দিয়ে বানালাম কিছু মিছু।




তারপর সব্জী ড্রাই চিপস। এটা কিন্তু ইয়াম্মী ঢালী থেকে এনেছি।



আরও নানা রকম নাটস। সাসলিস থেকে স্যুগার পাফ এবং কেশুনাট কেক। এরপর স্যুইট কর্ণ ক্রিম ফ্রাপো দিয়ে উপরে আবার স্ট্রবেরী বসিয়ে দিলাম। টিন কুচি কুচি সব্জী দিয়ে সালাদ আবারও দেশীও স্টাইল আনতে পটাটো চানাচুরের সাথে পনির গুড়া মিশিয়ে কিছু মিছু বানালাম আর কি।



ওহ প্রিঙ্গেলসও সাজিয়ে দিয়েছিলাম রঙ্গে ঢঙ্গে। যাইহোক সব কিছু সাজিয়ে গুছিয়ে মাঝে বসিয়ে দিলাম আমার সেন্টেড ক্যান্ডেলের ভোটকা জারটাকে। আর ফুলদানীতেও কিছু মিছু ফুল ছিলো। যাইহোক সব সাজিয়ে আমি আনন্দে আত্মহারা। এইদিক দিয়ে ছবি তুমি ঐ দিক দিয়ে তুলি। শান্তিই হয় না।






















সুফিয়া বলে- আফা পাফগুলা তো নরম হইয়ে যাবে, পাস্তা তো ঠান্ডা হইয়ে যাবে হেন তেন পেন পেন।
আমি বললাম= চুপ ...... দেখছো না আমি ছবি তুলছি।
সুফিয়া বলে আফা ঠান্ডা খানা আর নিমচানো কুচমুচি কি ভালা লাগবো কাইতে ? খাওন যাইবো?
আমি বললাম চুপ থাকো মানুষের ভালো লাগলো কি লাগলো না খেতে পারলো কি পারলো না তাতে আমার কি???
আমার কাজ সুন্দর করে খানা সাজানো আর ছবি তোলা। মানুষজন খেতে পারলো কি পারলো না তাদের কাজ....... :)
উহা আমার কাজ নহে....... :)

সকল বিরক্তিকর কাজের মাঝেও আনন্দ খুঁজে নেওয়াই আমার কাজ। ঝগড়া ঝগড়ি, মারামারি হলেও। :)

যাইহোক আপাতত হাই টি এন্ড বাই টি.......

মানে লেখা থেকে বাই বাই এবং হাই টি চিত্র প্রদর্শনী চলুক...... নিন্দুকেরা ডু নট সে হাই টি না ছাই টি :)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:০৮
৫৫টি মন্তব্য ৬১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×