বাংলাদেশ ক্রিকেট যে কি দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তার প্রমাণ আইসিসির এমন কর্মকান্ড।লিখাটা কিভাবে লিখব জানি না।গুছিয়ে লিখতে পারব কিনা আদৌ সেটাও জানি না।শুধু একরাশ কষ্ট,আর অনেক রাগ নিয়ে লিখতে বসলাম এটুকু জানি। মাশরাফি ছেলেটা ৬ টা সার্জারীর পরও মাঠে নামছে।সহানুভূতি না দেখায়,পারফরম্যান্স বিবেচনা করি।৬ টা সার্জারীর পরও সে পারফর্ম করছে,দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।দিনশেষে হয়তবা হাঁটুর ব্যথায় ককিয়েও উঠছে।ছেলেটার শেষ টি২০ বিশ্বকাপ হয়তবা এটা।আবেগ থেকে যদিও বা তাঁকে আরো ২ টা বিশ্বকাপে দেখতে চাই। ছেলেটা কখনো মনের জোর হারায় না,যার ফল ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে আমরা দেখছি।কিন্তু তাঁকে যখন আজকে কাঁদতে দেখলাম মনটা খারাপ হয়ে গেল।প্রসঙ্গঃসানি,তাসকিন নিষিদ্ধ হওয়া নিয়ে।কি লিখব বুঝতে পারছি না।আইসিসিকে ধিক্কার দিব নাকি মাশরাফিকে শান্তনা।দ্বিতীয়টা মানায় না।প্রথমটাই করি।এই আইসিসি কয়েকদিন আগে না আমাদের টেস্ট স্ট্যাটাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল,এই আইসিসি না ২০১৫ বিশ্বকাপে নিয়ম ভেঙে মোস্তফা কামাল(সাবেক সভাপতি) কে কেবল বাঙালি হওয়ার দায়ে ট্রফি তুলে দিতে দেয় নি বিজয়ী দলের কাছে। আসুন এই আইসিসির বিশ্লেষণ দেখি একটু।বাবা-কাকার কাছে শুনেছি বাংলাদেশের ক্রিকেটের উঠার পিছনে জগমোহন ডালমিয়ার অনেক অবদান ছিল।অস্বীকার করছি না সে অবদান,কিন্তু এন শ্রীনিবাসন নামক লোকটার রাহুর গ্রাস থেকে বাংলার ক্রিকেট যেন মুক্তি পাচ্ছে না।বাংলাদেশকে দমাবার সকল প্রচেষ্টায় করা হচ্ছে।প্রথম থেকেই।বিশ্বকাপ ২০১৬ এর দিকে একটু তাকান।একটা টিম সম্পূর্ণ একটা টূর্ণামেন্ট স্পোর্টিং উইকেটে খেলার পর তাদেরকে নামিয়ে দেয়া হল ধর্মশালার মত একটা উইকেটে।সেখানে টিকে না থাকতে পারলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শেষ।এই হল মোদ্দাকথা।কিন্তু আমরা পেরিয়ে আসলাম সেই বাধা।তারপর আমাদেরকে ইডেনে দেয়া হল ফ্ল্যাট একটা উইকেট।তারা জানে যে বোলাররাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।তাই এমন উইকেট।এটা যে এক ধরণের ষড়যন্ত্র তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ পাবেন গত কালকের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে।একটা টুর্ণামেন্ট যেই উইকেটে খেলা হয়,সব ম্যাচ একই উইকেটে খেলতে হয়,উইকেট নিজ থেকে পরিবর্তন না হলে কিউরেটররা পরিবর্তন হয়তবা করতে পারেন না।কিন্তু কালকের ম্যাচে ইডেনে যে স্পোর্টিং উইকেট পাওয়া গেল তাতে এটা তো বলাই যায় যে খেলাটা একপেশে। ভারত ট্রফির জন্য লড়ছে,আর বাকিরা রানার আপ হওয়ার জন্য।আইসিসিকে এরকম এক "অসাধারণ নিরপেক্ষ" অবস্থান নেয়ার জন্য সাধুবাদ জানাই। ক্রিকেটটাকে নষ্ট করার জন্য অভিনন্দন! অনেক তো ক্রিকেট খেলল সবাই,এবার নাহয় ভারত একাই খেলুক।তাসকিনের প্রসঙ্গে আসি। ফেসবুকে একজনের কাছে সেদিনকার ম্যাচটার ২৪ টা ডেলিভারিই দেখলাম,কোনো খুত নাই একশনে।একটা বলেও না।সানিরটা মেনে নিলাম,সে একটু হয়তবা ইলিগাল ছিল।কিন্তু তাসকিনের নরমাল ডেলিভারি আর ইয়র্কার(যা সেদিন সে ম্যাচে দিয়েছিল) তাতে কোনো খুত ছিল না।একটা নো বলও না।তাহলে হঠাত এমন করে একশন নিয়ে সন্দেহ করাটা রহস্যজনক নয়?ষড়যন্ত্রের আভাস ও পাওয়া যাচ্ছে বটে। ২৪ টা ডেলিভারির কোনোটাই বাউন্সার ছিল না,তাহলে তাঁকে কেন ল্যাব টেস্টে ৯ টা বাউন্সার দিতে বলল।তাও আবার ৩ মিনিটে।একটু চিন্তা করুন ।এক মিনিটে তিনটা বল করা।তাও আবার ফাস্ট বোলার।এবং তা বাউন্সার(পেস বোলারের সবচেয়ে অনিয়ন্ত্রনশীল বলগুলোর একটি হলো বাউন্সার)।মানে হল তারা জানত ৩ মিনিটে ৯ টি বাউন্সার দিতে গেলে তাসকিন ভুল করবেই।তাদের ভাষ্যমতে করলও ।৩ টি ইলিগাল ডেলিভারি। মানলাম।এবার আসি আইসিসির নিয়মের মধ্যে।নিয়ম বলে কোনো বোলার যদি তার নরমাল ডেলিভারি ব্যতীত অন্য কোনো বলের কারণে সন্দিহান হয় তবে সে খেলা চালিয়ে যেতে পারবে,কিন্তু ঐ পার্টিকুলার ডেলিভারিগুলোর ক্ষেত্রে তাঁকে সাবধান থাকতে হবে।তাসকিনের নরমাল ডেলিভারি হলো গুড লেংথ বোলিং।সেখানে কোনো ফল্ট নেই।কারণ বাউন্সার হলো শর্ট লেংথ ডেলিভারি।তাহলে এখানে প্রশ্নটা হলো তাসকিনকে নিষিদ্ধ কেন করা হলো? দ্বিতীয় প্রশ্ন,আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী কোনো বোলার যদি আম্পায়ারের চোখে সন্দিহান হয় তবে সেই বোলারের স্পেসিফিক বল উল্লেখ করতে হবে আম্পায়ারের রিপোর্টে যে কারণে সে সন্দিহান।এমনটি রিপোর্টে করা হয় নি।করা হয় নি তার বড় প্রমান ল্যাব টেস্ট আর নেদারল্যান্ডসের ম্যাচ।তাসকিনকে ল্যাবে বাউন্সার দিতে বলা হয়েছিল,অথচ যে ম্যাচে সে সন্দিহান হয় সে ম্যাচে কোনো বাউন্সার ছিল না।তাহলে অভিযোগের ভিত্তি কি?
এবার আসি খেলার প্রসঙ্গে।এশিয়া কাপ,বিশ্বকাপ দুটাতেই তাসকিন,সানি কি বোলার ছিল।তাসকিন এক প্রান্তে প্রেস্রার ক্রিয়েট করে অপর প্রান্তে আল আমিন উইকেট তুলে নিচ্ছিল। তাই একটা চলন্ত টুর্ণামেন্টে তিনটি ম্যাচ (পড়ুন ভারতের ম্যাচ) বাকি থাকা অবস্থায় তাঁকে দেশে পাঠিয়ে লাভটা কার? এটা বোঝার জন্য বুদ্ধিমান হওয়া লাগে না। এখন বিসিবির সঠিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।ক্যাপ্টেনও তাই বললেন।আশা করি এইখানে বিসিবি কোনো আপোষ করবে না।করলে একটা ফাস্ট বোলিং সেনসেশন অচিরেই হারিয়ে যাবে। সবাই আল আমিনের মত শক্ত মানসিকতার হয় না।তাসকিনের বয়সও কম।তার ক্যারিয়ার নিয়ে আশা করি বিসিবি কোনো রিস্ক নিবে না।সানি ফিরে আসবে ।এটা শিওর।তার মনোবল অনেক। কিন্তু তাসকিন যাতে হারিয়ে না যায়।মাশরাফির চোখের জল,আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া হয়তবা নতুন কিছুর সূচনা করবে।হয়তবা আন্দোলনের।অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের।সংগ্রামের ইতিহাস বাঙ্গালির সহস্র বছরের।আজকেও আমরাই এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাড়াতে চাই।প্রয়োজনে যুরিখে আন্তর্জাতিক আদালতে আইসিসির বিরুদ্ধে মামলা করা হোক।তবুও ন্যায় বিচার চাই। ও হ্যাঁ আরেকটা কথা।আহত বাঘ দেখসো?আহত বাঘ? তার থাবা? দেখো নাই? এইবার দেখবা আইসিসি।।বাঘ কি জিনিস বিশ্বকাপেই বুঝবা।ম্যাশ জানি তোমার জেদ,জানি তুমি কি করতে পারো দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে।বাংলাদেশ টিম।বাঘের জাত।জাস্ট জাতটা একটু চিনাইয়া দাও পৃথিবীকে। কালকে অস্ট্রেলিয়ার সাথে মযাচ।মযাচ বাই ম্যাচ আগাও।পারবা তোমরা।।এই বিশ্বাস আছে।এগিয়ে যাও
#বাঘের_গর্জন
#আমি_তাসকিন
#আমি_সানি
#এগিয়ে_যাও_বাংলাদেশ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:০৫