somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসুন আমরা ভাবি মেয়েটির মৃত্যুর কারণ কি হতে পারে

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(লেখাটি আমার নয়,রাজীব হোসাইন সরকার ভাইয়ের,ভালো লাগলো তাই দিলাম)

___একজন প্রেগন্যান্ট যুবতীর পোস্ট
মর্টেম দেখেছিলাম

চমৎকার সুন্দরী। টেবিলের
উপরে শুয়ে আছে। টানটান হয়ে।
মাথার নিচে একটা কাঠের তক্তা।
এই তক্তাটা বালিশ
হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
আমি জানি না কতজন মৃত মানুষের বালিশ হবার ভয়ংকর অতীত
আছে এই কাষ্ঠ দন্ডের।

যুবতীর
সারা শরীরে পাতলা ফিনফিনে সাদা কাপড়ে ঢাকা।সম্ভবত যুবতীর ওড়না।

স্যার জিজ্ঞাসা করল---কারণ
কি হতে পারে?

আমরা সারা শরীরে তাকালাম।
কোন আঘাতের চিহ্ন নাই। ত্বক মসৃণ,
উজ্জ্বল। লাবণ্য
বলতে কি বোঝানো হয় জানি না।
তবুও মনে হচ্ছিল, যুবতীর
ত্বকে লাবণ্য।

লাবণ্যময়ী মৃত যুবতীর মৃত্যুর কারণ কি হতে পারে? আমরা চল্লিশ জনে টিউটরিয়াল
গ্রুপ। চল্লিশজন একসাথে বলল,


-স্যার, মাথায় আঘাত!

ডোমদের কাছে মরা গরুও যা,
মরা মানুষও তা। একজন ডোম
মোটামুটি হাসিমুখে ঝনঝন
করে অস্ত্র হাতে তুলে নিল।

হাতুড়ি, বাটালি, একটা ছুরি।
ছুরি ধারালো। টাংস্টেন লাইটে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে।

প্রথমে কপালে কান বরাবর...
লম্বালম্বি ছুরি দিয়ে চামড়াটা কেটে ফেলতে ধরল।কাটতে গিয়ে দেখা গেল
ছুরিতে ধার নাই।
দুইটা হিন্দি গালি দিয়ে কোথায়
জানি ঘষঘষ করে ছুরিটা ধার দিল। কপালের চামড়া কেটে চুলসহ
মাথার
স্কিনটা সামনে থেকে পেছনে টেনে ছিলে ফেলল।
টুপি খোলার মতো। গরুর
চামড়া ছিলে ফেলার মত। হাতুড়ি আর
বাটালি দিয়ে কপালের
কাছে 'ঠকঠক'
করে খুলিটা ফাটিয়ে ফেলল।
ঢাকনী খোলার মতো 'প্যারাইটাল'
হাড্ডি দুইটা খুলে মাথার মগজ বাহির করল। মগজটা কয়েক
খন্ডে কেটে দেখা হল। কোথায়
জমে থাকা রক্তের চিহ্ন নাই। স্যার আবার জিজ্ঞাসা করল,

-মৃত্যুর কারণ কি হতে পারে? এবার দশজন চুপ করে থাকল,
ত্রিশজন বলল,


-স্যার, হ্যাংগিং। গলায় দড়ি!

স্যার গলা কাটল। বুকের মাংস
লম্বা দাগ দিয়ে চিরে ফেলল।
নাভি পর্যন্ত। কোন কিছু
পাওয়া গেল না। স্যার
জিজ্ঞাসা করল,


-মৃত্যুর কারণ কি হতে পারে? এবার বিশজন নির্বাক, বিশজন
সবাক।


-স্যার, পয়জন। স্টোমাক দেখলেই
ক্লিয়ার বোঝা যাবে।

যুবতীর স্টোমাক(পাকস্থলি)
কেটে ফেলা হল। লিভার(কলিজা),
ফুসফুস সব
তানাটানি করে দেখা হল। কোন
পয়জন নাই। স্যার জিজ্ঞাসা করল,


-মৃত্যুর কারণ কি হতে পারে?

এবার দুই একজন ছেলে আরেক জনের
পিছে গিয়ে, দুই একজন
মেয়ে লজ্জায় ওড়না দিয়ে মুখ
ঢেকে বলল,

-সেক্সুয়াল এসল্ট?

নাভির নিম্নদেশ পর্যবেক্ষন
করা হল। সেক্সুয়াল এসল্টের সাইন-
সিম্পটম নাই। স্যার বলল,

-মৃত্যুর কারন কি হতে পারে?

চল্লিশজন নিশ্চুপ। স্যার
আত্মবিশ্বাসের সাথে বললেন,

-এবার দেখ!

এরপর নাভীর উর্ধদেশ কাটা হল।
জরায়ু( ইউটেরাস)
কেটে একটা মাংসপিন্ড বের
করা হল। আমি নিশ্চিত আমার
মতো অনেকেই সেদিন
কেঁপে উঠেছিল।

এতো চমৎকার লাল টকটকে ছোট্ট শিশু আমি কোনদিন
দেখি নি। বাচ্চাটাকে বের
করে কাটাছেড়া করা লাবণ্যময়ী যুবতীর
পাশে আস্তে করে শুইয়ে রাখা হল।

মর্গের ভেন্টিলেটর
দিয়ে বেলা তিনটার রোদ আসছে।
সরাসরি শিশুটার উপর। আমার
মনে হচ্ছিল, শিশুটা জেগে যাবে।
যেকোন মুহুর্তে জেগে যাবে।
ট্যাওট্যাও করে কান্নাকাটি শুরু করবে। গলায় কিছু আটকে আছে।
কেউ উল্ট
করে পিঠে দুইটা থাবড়া দিলেই
শিশুটা জেগে যাবে।
কান্নাকাটি করবে।

জেগে উঠলে শিশুটা কি করবে?
তাকে মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে।
মা তো কাটা ছেড়া। বুকে দুধ নেই।
শিশুটা যদি বুঝতে পারে তার
মা মৃত, সে কি করত?
যদি আমাদের
মতো বুঝতে পারত, তার
জন্মদাত্রী মৃত, শিশুটা কি করত? জানার ইচ্ছা করছে। সব
জানতে হবে এমন কথা নেই।
শিশুটাকে কেউ থাবড়া দিচ্ছে না।
কেউ দিবে না। ইচ্ছাও নেই।
এটা যুক্তিহীন কাজ। যুক্তিহীন কাজ করার অর্থ নেই।

আসল কথা বলে শেষ করি। দেড়শবার নক করা একটা মেয়ের
মেসেজ পেলাম। মেসেজটা Archived
এ ছিল। দেড় মাস পুরনো। চেক
করা হয়নি। বিশাল মেসেজ। দীর্ঘ সময়
নিয়ে লেখা। অনেক বানান ভূল। ভূল
বানান আছে বলেই
আমি মেসেজটাকে বিশ্বাস
করে ফেলেছি। সত্য
সামনে এসে দাড়ালে বানান ভুল- সঠিকের সময় নেই। শেষ মেসেজটা মোটামুটি এমন
ছিল,

-সে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।
তার একজন সৃষ্টি আমার পেটে। এখন
একা একা আমার কোন উপায় নেই
ভাইয়া। আমি কিছু বলতে পারলাম না।
আইডিটা স্ক্রোল
করে চমকে গেলাম।

শুরুতে সেলফি আর সেলফি। সব
বয়ফ্রেন্ড। সম্ভবত সুখের দিনগুলো,শেষ দিকে...feelings এর স্ট্যাটাস।
এক লাইনে। খুব কষ্টে আছে।
কি করবে বুঝতে পারছে না।

আইডিটা গত এক সপ্তাহ থেকে বন্ধ। আমি পাওয়া মাত্র
ফেসবুকে রিপ্লাই দিলাম। কিছুক্ষন
বোঝাব। ফোন নাম্বার নিয়ে কিছু
হালকা কথাবার্তা বলে বোঝানোর
বৃথা(?) চেষ্টা করব। হয় নি।

মেসেজ
seen হয় নি। এবার পাবলিক স্ট্যাটাস দিলাম।
মেয়েটি একবার ভূল
করে ফেসবুকে ঢুকে আমার
মেসেজগুলো...আমার বা আপনার
স্ট্যাটাসগুলো তার
চোখে পড়বে...নতুন কিছু ভাবার সুযোগ পাবে। বিশ্বাসী(!) ছেলে-
বন্ধুটিরও ফেসবুক
টাইমলাইনে হয়তো এইসব
লেখা ভেসে উঠবে। আত্মশুদ্ধিরও
সুযোগ পাবে। সেই অপেক্ষায়! এর মাঝে হয়তো... মেয়েটা এবরেশন
করে ফেলবে, এজন্য ফেসবুক
ছেড়ে কিছুদিন ব্যস্ত থাকবে। এর
পরের কনসিক্যুয়েন্স?

___নয়তো সঙ্গীর অপেক্ষায়
থাকবে। যাকে বিশ্বাস
করে একদিন অনিয়ন্ত্রিত,
অনিরাপদ, অবিশ্বাস্য কিছু
ঘটে গিয়েছিল। একসাথে-
একছাদের নিচে।

ছেলেটা এসে বলবে, চলো,
বিয়ে করে ফেলি।
বাচ্চাটাকে একসাথে বড় করি।
সন্ধায় নিউমার্কেট
থেকে কয়েকটা খেলনা আর বাবুর
'পিটিপিটি' কাপড় কিনে আনি।
যা শীইইত! হয়তো...সেই মানুষটার ফিরে আসার
অপেক্ষা করতে করতে... একসময়
হয়তো এবরেশনের অবস্থাও
থাকবে না।

সেদিন? আপাতত কিছুই করার নেই।

___আসুন...আমরা ভাবি...মৃত্যুর কারণ
কি হতে পারে?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×