আফজাল সাহেব আর নিতেন বাবু পড়শী। আর দশটা পড়শীদের মত সম্পর্ক তাদের নয়। সবসময় খিটখিট লেগেই থাকে। কিন্তু একদিন সম্পর্ক ভাল হয়ে গেল একটি ঘটনার পর। আফজাল সাহেব হঠাত তার চাকুরী হারিয়ে ফেললেন। এই মন্দের বাজারে কোথায় তিনি নতুন জব পাবেন এই ভেবে যখন পেরেশান তখন নিতেন বাবু তার জন্য একটা বেশ ভাল চাকুরী যোগাড় করে দিলেন। আবেগে আপ্লুত আফজাল সাহেব নিতেন বাবুকে বললেন-
আ: আপনি আমার যে উপকার করলেন দাদা তার প্রতিদান আমি একদিন অবশ্যই দিব।
নি: আচ্ছা আমি আপনাকে জানাব যদি কখনো হেল্প লাগে।
এখানে উল্লেখ্য যে তাদের বাড়ি পাশাপাশি হলেও নিতেন বাবুকে মুল রাস্তায় যেতে হলে পিছনের পুকুর কস্ট করে ঘুরে যেতে হয়। এতে যেমন সময় নস্ট হয় তেমনি বর্ষাকলে পুকুরে পিছলে পড়ার সম্ভবনা থাকে। অথচ যদি আফজাল সাহেব নিতেন বাবুকে উঠানের মধ্য দিয়ে যাতায়াতের সুযোগ করে দিতেন তাহলে আর পুকুর ঘুরে যেতে হত না। আগে অনেকবার ভেবেছেন এই ব্যাপরে আফজাল সাহেবের সাথে কথা বলবেন কিন্তু সেই সুযোগ ছিল না। তবে এখন আবস্হা চেন্জ হয়েছে। তাই একদিন নিতেন বাবু তার সাথে দেখা করতে গেলেন এবং এই কথা সেই কথা বলতে বলতে আসল কথায় আসলেন..
নি: দাদা আপনি তো জানেন আমাদেরকে কত কস্ট করে পুকুর ঘুরে রস্তায় যেতে হয়। তা আপনি যদি আপনার উঠানটা ব্যবহার করতে দেন তাহলে আর এই সমস্যা থাকে না।
আ: আসলে আমার তো আপত্তি নাই তবে বাড়ির লোকজন প্রাইভেসি নিয়ে অভিযোগ তুলবে।
নি: আরে ঐটা কোন ব্যপার না। আমরা এমনভাবে যাতায়াত করব যেন কেউ বিরক্ত না হয়।
আ: তাহলে তো আমার বাড়ির মাঝের ঘরটা ভাংতে হবে যেন আপনারা সহজে যেতে পারেন।
নি: আফজাল সাহেব আমি আপনার জন্য যা করেছি তার পর আমার জন্য এইটুকু করতে নিশ্চয় পিছপা হবেন না।
আ: ওকে। কিন্তু লজ্জার বিষয় হল এখন আমার হাত পুরা খালি, কিভাবে এই কাজের খরচ যোগাব বলেন?
নি: হাত তো আজ খালি কাল ভর্তি। ব্যাংন্ক থেকে লোন নেন। পরে দিয়ে দিবেন।
আ: নতুন চাকুরীতে জয়েন করলাম এই সেদিন। ব্যাংন্ক আমাকে লোন দিবেনা।
নি: আহ আপনি বেশি চিন্তা করেন। আমি আছি না.. লোন আমি দিব। সুদ একটু বেশি তবে টাকা এখনি রেডি।
আ: এইসব কথা বউ আর বাড়ির লাকজন জানলে আমার খবর আছে। আমাকেই ঘর থেকে বের করে দিবে।
নি: ওদেরকে আসল কথা বলার কি দরকার? বলবেন বাড়িতে আলোবাতাস কম তাই মাঝের ঘরটা ভেংগে ফেলছি। আর সেই কাজের জন্য লোন নেওয়াটা খুবি জরুরী ছিল।
আ: হুম।
এর পরের ইতিহাস হল- বাড়িতে এমনিতেই ঠিকমত খাবার, করেন্টবিল, দৈনন্দিন খরচ দিতে পারতেন না আফজাল সাহেব। তারর উপর এমন বেকুবি বুদ্ধিতে কারো কথার কেয়ার না করে লোন নিয়ে পরিবারটিকে আরো খারাপ আবস্হায় ফেলে দিয়েছেন। এই কারনে শেষে তার উপর রাগের কারনে বিরক্ত হয়ে তার বউ আর ছেলেমেয়েরা তাকে ঘর থেকে লাথ্থি মেরে আজীবনের জন্য বের করে দি্যেছে। লোকমুখে শোনা যায় এখন তিনি নৌকার জন্য লগি বৈঠা বানিয়ে কোনমতে জীবন ধরন করছেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




