দেশকে যেমন ভালোবাসি তেমনি দেশকে নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। দেশ আমাকে খেতে দিতে পারেনা। লেখাপড়ার ভাল ও মানসম্মত জায়গা নেই। মারপিট লেগেই আছে। কিন্তু ব্যাক্তিগতভাবে আমি মন থেকে কখনো কোন অভিযোগ করিনা। কারণ আমার দেশটা নতুন ও কিছুটা হতভাগা। পুরোপুরি ডেভেলপ হবার জন্য যে সময় ও ভাগ্য দরকার তার সবটুকু পাওয়া এখনো বাকি আছে। তারপরেও বাংলাদেশে জন্মের কারনে কোন বিষয়ে যদি আমি পিছিয়ে আছি বলে মনে করি তাহলে তা বিদেশে গিয়ে অর্জন করা সম্ভব। অনেকে সেটা করছেও। দেশে চিকিৎসা মিলছে না তো বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করছে। বাংলাদেশের লেখাপড়া মনসম্মত মনে হচ্ছেনা তো বিদেশে গিয়ে ডিগ্রী নিচ্ছে। অসুবিধা কোথায়? তাই আমি কোন অভিযোগ করিনা। কেবল একটা বিষয় ছাড়া। আর সেটা হল- আমাদের স্বপ্ন দেখার অক্ষমতা।
না আমি কোন সাহিত্যিক না বা কবিও না। বসন্তের বিকালে জৎছনার আলোয় রুটি ভিজিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা বলছি না। বলছি বড় ও মৌলিক কিছু নিয়ে ভাবতে পারার ক্ষমতা নিয়ে। স্কুল কলেজে আমাদেরকে অনেক কিছু শেখানো হয়। গণিত, রসায়নের জটিল ও পেইনফুল সব সূত্র হেফজ করানো হয়। কিন্তু কিভাবে কোন কিছু নিয়ে স্বপ্ন দেখতে হয় তা কেউ শেখায় না। এমনকি প্রাইভেট টিচারও স্বপ্ন দেখা শেখায় না। এই ব্যাপারটা আমার কাছে বেশি প্রকট হল যখন নতুন চাকুরীতে জয়েন করলাম। আমার পদ হল প্রোডাক্ট ডেভেলপার। নতুন নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে ভাবা ও মার্কেটে সেটার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কাটাছেড়া করা। আল্লাহর রহমতে আমার কাজ নিয়ে কোম্পানি সো ফার খুশি। কিন্তু আমি নিজে খুশি না। আমি এমন একটা কোম্পানিতে কাজ করি যারা না থাকলে পৃথিবীর ইতিহাস, ইকোনমি ও মানুষের জীবন হয়ত অন্যরকম হত। সেই আনুসারে আমি তথা আমার ব্রেইন নতুন কিছু নিয়ে ভাবতে বা পৃথিবী বদলে দেবার মত কোন ইনোভেশান করতে অক্ষম। আমি বড় কিছু নিয়ে স্বপ্ন দেখতে অক্ষম। আমি সবচেয়ে কম খরচ ও রিসোর্স ব্যাবহার করে হাই প্রোফিট প্রোডাক্ট ডিজাইন করে দিতে পারি। কিন্তু এমন কিছু নিয়ে ভাবতে পারিনা যা আগে কেউ কোনদিন ভাবেনি।
কেউ প্রশ্ন করতে পারে, আচ্ছা আমাদের দেশে মার্ক জাকারবার্গ, স্টিভ জবস বা বিল গেটসের চেয়ে ভাল ছাত্র বা বুদ্ধিমান তরুন তরুনী নেই? উত্তর- হ্যা অবশ্যই আছে। কিন্তু তারপরেও আমদের দেশে মার্ক জাকারবার্গরা জন্মায় না কেন? এই প্রশ্ন রইল আপনাদের কাছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




