somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসা বনাম বেশ্যা

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তুমি একজন বেশ্যা। ‘’হ্যা’’ তোমাকেই বলছি। কথাট শুনতে খুব খারাপ শোনায় তাই না? লোকে হয়ত খুব ভাল নামে চিনে তোমাকে কিন্তু আমি চিনি স্রেফ বেশ্যা নামে। আধুনিক বেশ্যা।
বেশ কয়েক বছর আগের কথা,কিশোর মন কত কিছুইনা চায়। কত বন্ধু-বান্ধবী, কত রঙ্গিন স্বপ্নের হাতছানি। সেই সময় আমার বন্ধু সংখ্যা খুব কম। হাতে গোনা যায় বললেই চলে।রাফি! বেশ কিছু নামের মধ্যে আমার অতি পছন্দের একটি নাম। বন্ধু মহলে রাফিকে খুব ভাল লাগে আমার। স্বর্না রাফির গার্লফ্রেন্ড-জানেমান-স্বপ্নচারীনী ,যে যা বলে আরকি।
দিন গুলোবেশ ভালোই যাচ্ছিল তাদের। কোচিংয়ে দেখা করা। ঊষ্ণতা বিনিময় করা নিত্যনৈমত্যিক ব্যাপার। তখনো স্বর্ণার সাথে আমার পরিচয় নেই। কথাও হয়নি। কিছু দিন পর হুট করে শুনি ওদের ব্রেকআপ- রাফির কাছে জিজ্ঞাসা করার পর বলল বাসায় মেনে নিবেনা তাই আর এগুতে চাচ্ছি না। ভাবলাম একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে বেশি কিছু হবার আগেই ঝামেলা মিটেছে।
অনেক দিন দেখা হয়না কারো সাথে।পরীক্ষা চলে স্কুলে। তাই কোচিংও নাই। বাসায় বসে ল্যাপটপ নিয়ে ঝিমুচ্ছি। হঠাৎ ফেইসবুকে একটি রিকুয়েস্ট মিথিলা আজাদ ওয়ান্টস টূ ইউর ফ্রেন্ড। মেয়ে দেখে একটু ঘাটাঘাটি করে সিউর হয়ে এক্সেপট করলাম। সাথে সাথেই নক।
- তুমি শিহাব না ? আমি রাফির এক্স-গার্লফ্রেন্ড ।
- ও আচ্ছা! হুম… কি খবর
-কি আর খবর! মন খারাপ, রাফির ব্যাপারে।
এর পর থেকে বেশ ভাল বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম।প্রায়ই রাফির কথা শুনতে চাইত। আমিও চাইতাম ওদের রিলেশনটা আবার জোড়া লাগুক । কিন্তু অনেক কারণেই পরে আর জোড়া লাগেনি। যদিও রাফি ওকে অনেক ভালবাসত। স্ট্যাটাস বা অন্য কন কিছুর জন্য নয়। দুজনের ফ্যামিলিও ওয়েল এডুকেটেড। দু জনেই দেশের নাম করা দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনো করে। কিন্তু তারপরও হয় নি।
মাস ছয়েক পড় স্বর্ণার সাথে কথা হচ্ছে ফেইসবুকে, খুব বিষন্ন মনে হল। অনেক মন খারাপ। জিজ্ঞাসা করলাম অনেক বার। উত্তর শুধু একটিই। তার পর-
-নিজেকে অনেক গিলটি লাগছে। অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি জীবনে
-কি হইছে বলবি তো!!!
- আসলে রাফির সাথে রিলেশন ব্রেকআপ করার পর, তুমুল নামের এক ছেলের সাথে পরিচয় হয়। ভার্চুয়াল ভাবেই প্রেম চলতেছিল।আমি অত সিরিয়াস ছিলাম না। রাতে এডাল্ট কথা বার্তা, জানিসই তো কত কিছু হয়। তারপর আর কি!!
- তারপর আর কি মানে? পুরোটা শেষ কর????
- হুম! তোকেই প্রথম বলতেছি! কাউকে বলিস না প্লিজ!
- ওকে! প্রমিজ! বল…
- তুমুল একদিন দেখা করতে চায়। আমারও সময় ছিল, তাই দেখা করতে গেলাম। দেখা করার পর ও বলল একফ্রেন্ডের বাসা আছে আমাকে নিয়ে যাবে। আমিও গেলাম। তখনো এতো কিছু হবে ভাবিনি। বাসাটা খালি! কেউ ছিল না সে সময়। একটু ভয় লাগতেছিল।তারপর- ও আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিতে থাকে! তখন নিজেকে আর সংবরণ করতে পারিনি। সেক্সুয়াল একটা বিষয় হয়ে গেসে। আমি অনেক কান্না করে বলছিলাম ওর কাছে যে করবনা। কিন্তু নিজেও ফিলীংস আটকাতে পারিনি ও নিজেও সংযত হয়নি। ফলে যা হবার তাই।
-ও আচ্ছা! এই ব্যাপার। টেনশন নিস না ! যা হবার হয়ে গেসে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চা এবার! কোন দিন আর এসবে দিকে যাস না।
অনেকটা সান্তনা দেবার জন্যই বললাম। আসলে জানিনা এরকম পরিস্থিতিতে কি করতে হয় বা বলতে হয়। এরপর থেকে আমাদের বন্ধুত্বটা আর গাঢ় হয়। চলছিল এভাবেই।
এর মধ্যে স্বর্ণা আবার আমারই এক ফ্রেন্ডের বড় ভাই এর সাথে রিলেশনে ছিল কিছু দিন। পড়ে যা শুনতে পারি, সেখানে শুধু যৌনতা ছাড়া কিছুই ছিল না। এই কারণে ঐ বড় ভাইও মেয়ে বেশি এগ্রেসিভ দেখে সম্পর্কটা ভেঙ্গে দেয়।
কিছুদিম পর জনাতে পারি ও স্বর্ণা আরেকটা ছেলেকে ভালবাসে নাম ‘’সানি । একই সাথে পড়ে কোচিং এ। শুরু হল একটি মেয়ের জীবনের সব থেকে নষ্টা অধ্যায়। এর পর একে একে ফাহিম, যে কিনা এলাকার পাক্কা প্লে বয় উপাধি প্রাপ্ত , জামিল, মাহাদী আর অনেকের সাথেই তার রিলেশন চলে বা চলছে, কিংবা চলবে। সবার সাথেই প্রায় সেক্সুয়াল ব্যাপারটা ছিলোই।
সবই জানতে পারলাম তবে অনেক দেরিতে। সব শুনে ওকে একদিন বোঝাচ্ছিলাম যে সে এগুলো কেন করতেছে, কিন্তু যে মেয়ে কিনা আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে কিছু বলত না সেই মেয়ে বলে কিনা
-তুই আমার লাইফ নিয়ে কোন কথা বলবি না। আমি আমার বিএফ নিয়ে অনেক হ্যাপি আছি।
(কিছুক্ষন পর স্বর্ণার আইডি থেকে )
- এই তুই কেরে? কোন *** থেকে বাইর হইছিস? সাথে **** *** * * *** ** ** ** **** * । *( অনেক গুলা বাচ্চাদের মত থ্রেট)
আর কিছু বোঝার বাকি থাকলনা ।কিছুক্ষনের মধ্যেই দেখি আমার আইডি ফোন নাম্বার সব ব্লক লিস্টে রেখে দিয়েছে। ভাবলাম কই ভাল করতে গেলাম আর ওর গুনধর বয়ফ্রেন্ড নিজের উদ্দ্যেশ্য হাসিল এর জন্য এসব করাল । ভেবেছিলাম ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষএবং একই সাথে অসম্পুর্ন রইল।
আজ পর্যন্ত জীবনের কোন দিন আমিও যোগাযোগের চেষ্টা করিনি । আমার গুনধর বান্ধবীও করেনি।
সম্প্রতি জানতে পারি স্বর্না এখন প্রায় উচ্চ বর্গীয় ফ্যামিলির ছেলেদের সবারই রাতের স্বপ্নচারীনী।
এখানে দোষটি কার? মেয়ের ? ছেলেদের? যারা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মেয়েটিকেবারবার ভোগ্য সম্পদ বানিয়েছে? নাকি সমাজের? আমি অন্তত এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বলল দোষটা মেয়েরই সে চাইলেই নিজেকে পবিত্র রাখতে পারত। আধুনিকতা নামের এ কোন ধরনের শিল্পাচার? সম্ভবত এটা হচ্ছে বেশ্যা বৃত্তির নতুল কৌশল। যার নাম আধুনিক ভালবাসা-
যুব সমাজ আজ কোথায়? ভবিষ্যত কি তাদের?
আল্লাহ তাদের উপর রহমত দান করুক। এই দোয়াই করি।
[ ঘটনাটি সম্পুর্ন বাস্তব।নিরাপত্তার সার্থে স্থান,কাল, পাত্র বদল করা হয়েছে]
৩১ জানুয়ারি ২০১৫ | মিরপুর
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×