somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কারাগারে থাকা শিশুগুলো কেমন আছে ?

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


: কারাগারে থাকা শিশুগুলো কেমন আছে ?

: কারাগারে থাকা শিশু মানে...! শিশুরা কি জেল খাটছে ?

: হ্যা, অনেকটা তাই। মার সাথে শিশুগুলো রয়েছে। মা জেল খাটছেন। সে সুবাদে শিশুগুলোও কারাগারে বন্দি।

: প্রশ্ন হচ্ছে শিশুগুলো কেমন আছে ?

: জবাব দেওয়ার আগে একটি ছবির কথা বলছি। ছবি হচ্ছে নিরব জবাব প্রদানকারী। প্রায় ২০ জন শিশুকে নতুন পোশাক পরিয়ে আনা হয়েছে। ছবি তোলা হয়েছে। একটি শিশু কাঁদছে, মা’র কোলে ক’জন শিশু, কারো মুখে হাসি নেই। উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে শিশুগুলো। একজন মার কোলে একটি শিশু, নতুন জামা পরেছে, কেমন যেনো দৃষ্টি নিয়ে দূরের দিকে তাকিয়ে মার শাড়িটি মাথার দিকে ছেঁড়া, শিশু এবং মা’গুলোর পায়ে সেন্ডেল নেই। যারা শিশুগুলোকে নিয়ে ছবি তুলেছেন তাদের মধ্যে একজন হাসছেন এবং অন্য ১৩ জন পরিদর্শনকারী গম্ভীর এবং উদাস। এই ছবিটি বলে দিচ্ছে জেলখানার অভ্যন্তরে বন্দি মা’র সাথে অবস্থানকারী শিশুগুলো কেমন আছে ? একজন মা’র পরনে ছেঁড়া শাড়ি বলে দিচ্ছে তিনি বা তাদের জীবনমান কেমন ?

: যে ছবিটির কথা বললাম সে ছবিটি ঈদের প্রাক্কালে বন্দি থাকা শিশুদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণের। আমাদের সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যা বেশি বলেই এমন শিশুদের কথা ভাবা হয়েছে। এ কাজটি করেছেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইট কমিশন। চট্টগ্রাম জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম এমন মানবিক কাজটি করেছেন। জেনেছি তাদের জীবন তথ্য শুনে বাথরুমে গিয়ে অনেকক্ষণ তিনি কেঁদেছেন। এ কান্না অসহায় শিশুদের জন্য, মানবতার জন্য। ছবিটি দেখে বারবার মনে হয়েছে শিশুগুলো হাসতে পারলো না কেন ? নতুন জামা পরে শিশুদেরতো হাসার কথা। কারারুদ্ধ অসহায় মার সঙ্গী শিশুগুলো কি জানে তাদের মার অপরাধ ? সে বয়সতো তাদের হয়নি। একটি শিশু নতুন জামা পরে চোখ বাঁকা করে উদাসী দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছে। স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে তার দু’টি পা কেমন যেনো বাঁকা। বোধ করি পলিও রোগে আক্রান্ত। সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে কিনা তা জানিনা।

: কারাগার মানে অপরাধী মানুষের সাময়িক আবাসস্থল। এমন কথা কিন্তু সব ক্ষেত্রে সঠিক নয়। অনেক সময় নিরপরাধী মানুষও নানা জটিলতায় অপরাধী হয়ে যান। অপরাধী বা নিরপরাধী সে প্রসঙ্গে আসছি না। বলতে চাইছি কারাগারে যারা বন্দি রয়েছেন তাদের জীবন মান কেমন ? মনে রাখা প্রয়োজন যে কারাগারে বন্দি যারা রয়েছেন তারাও মানুষ। তাদেরও সম্মান, ইজ্জত নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। বাড়ি ঘরের মতো তারা খেতে পারেন না, তবে খেতেতো ইচ্ছা করে। বন্দি জীবনের অভিজ্ঞতা যাদের রয়েছে তারাই জানেন খাবার কষ্টের কথা, গোসলের কষ্টের কথা এবং নারী বন্দিদের শাড়ি বা পেটিকোটের কষ্টের কথা। এমন সব কিছু বন্দি রয়েছেন যাদের স্বজন পরিজনরা তাদের খবর রাখে না। বিশেষ করে নারী বন্দিদের কষ্টের কথা বলছি। যাদের সংগে শিশু রয়েছে তাদের কথাটা একবার চিন্তা করুন। অনেক সময় না খেয়েও থাকতে পারা যায়, কিন্তু ছেঁড়া শাড়ি পরেতো থাকা যায় না। ইজ্জত আব্রু ঢেকে রাখার জন্যই প্রয়োজন একটি শাড়ি এবং একটি পেটিকোটের। পুরুষ হলেতো প্রয়োজন অন্তত একটি লুঙ্গির। ছেঁড়া শাড়ি পরা ঐ একজন কারাবন্দি নারীর কথা চিন্তা করে বলছি কারাগারে তিনি বা তারা কেমন আছেন ? ভালো যে নেই সে প্রমাণতো ছবিটিই বলে দিচ্ছে।

: বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস কমিশন ঈদের প্রাক্কালে যে মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন কারাবন্দি শিশুগুলোর মুখে হাসি ফোঁটাতে সে জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাতে হয়। আমরা অনেকেই ঈদের প্রাক্কালে নানাভাবে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াই কিন্তু কারাবন্দি শিশুদের কথা খুব একটা ভাবি না। তারা যে ভেবেছেন সেটাতো প্রশংসার দাবি রাখে। শিশুগুলোর কথা ভেবেছেন এবং আমাদেরও ভাবা উচিত। অন্তত ঐ বোনটির কথা যদি ছেঁড়া শাড়ি পরে শিশু পুত্রকে নিয়ে ছবি তুলেছেন কারা অভ্যন্তরে। তাদের জন্য আমাদের ভাবতে হবে। আমরা যদি চেষ্টাকরি তাহলে প্রতিজন মা’বোনকে অন্তত একজোড়া শাড়ি, একজোড়া পেটিকোট এবং পুরুষ কয়দিদের জন্য একজোড়া লুঙ্গি দেয়া সম্ভব। এটা কিন্তু ঐ আমাদের সচেতনরা করতে পারেন। আমি পারি, আপনি পারেন এবং আরো অনেকে। একটি কথা কিন্তু আমার আপনার মনে রাখা উচিত এবং সচেতন ভাবেই মনে রাখা উচিত যে কারা অভ্যন্তরে যারা আছেন সবাই কিন্তু অপরাধী নয়। বিশেষ করে নারীগুলোর কথা বলছি, শিশুগুলোর কথা। সেদিন জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম বলছিলেন, এতিমখানায় গিয়ে শিশুদের দেখে কষ্ট হয়েছে। তারা আইসক্রীম খেতে চেয়েছে। আপনার ঘরের শিশুরা যা খেতে চায় আপনি দেন কিন্তু এসব শিশুরা কি যা ইচ্ছা তা কি খেতে পায় ? তাই আসুন, আমরা এদের সবার জন্য কিছু করি।

[সউত্র
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×