(অনেকদিন কিছু লেখার চেষ্টা।
সতর্কীকরণঃ অনেকের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে)
৩ টা চরিত্র ধরি, আফজাল, রানা ও রহিস সাহেব।
প্রথমের ধরি আফজাল সাহেবের কথা। তিনি নতুন গাড়ি কিনবেন। সারাজিবন ধরে তার ইচ্ছা তার মাকে গাড়িতে চড়াবেন। কিন্তু মানুষের সাধ্য বলে একটা জিনিস আছে এবং এই জিনিসটাই তার জন্য বাধা হয়ে দাড়াল। কাজেই গাড়িটা তিনি কিনতে পারলেন না। কিন্তু একটা মটর সাইকেল কিনার মত টাকা আছে সেইটাই কিনলেন।
রানা নতুন বিয়ে করবে। বাসা থেকে মা চাপ দিচ্ছে। খুব শীঘ্রই করা লাগবে। ২ টা মেয়ে দেখা হয়ে গেছে। দ্বিতীয় মেয়েটাকে অনেক ভালও লেগেছিল তার। কিন্তু মেয়ের অসম্মতি। প্রথম মেয়েটাও ভালো। চাকুরী করে। বাপের সম্পত্তি অনেক। সো করেই ফেলি না, ভাবে সে। হয়ত সে এর থেকে ভালো সুন্দর মেয়ে আর পাবেও না।
এরকম ধারণা বাংলাদেশের হাজার যুবকের মধ্যে সব সময়ই থাকে।
রহিস সাহেব নতুন বিয়ে করেছেন। বাড়ির বড় ছেলে। তার সন্তান হবে। তার ইচ্ছা তার সন্তান জন্ম নিবে প্রাইভেট হাসপাতালে। কিন্তু এত টাকা দেয়া সম্ভব না। রাতে ঘুমানোর সময় ভাবলেন সবার কি আর জন্ম হয় প্রাইভেটে? কিন্তু তারাও তো মানুষের মত মানুষ হয়।
এরকম আরো হাজারো উদাহরন দেখানো যায়, আমার ইচ্ছা আমি পরব ফিজিক্সে। কিন্তু বিধিবাম। চান্স হল ম্যাথ এ। কিন্তু কি আর করা নিজের অজান্তেই হয়ত নিজের জিবনের সবচেয়ে বর লক্ষ্যের সাথে কম্প্রমাইজ করা হয়ে গেল।
পড়তে চাই বুয়েটে। অনেক ভালো ছাত্র আমি। কিন্তু হায়, ফিজিক্সে এ প্লাস ছুটে গেল। সো ফাইনান্সের সাথে কম্প্রমাইজ। শুনতে অবাক লাগে কিন্তু অনেক ন্যারো মাইন্ডের মানুষ আশা করে তার ছেলে হবে। পরে মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। পরিবার খুশি না। কিন্তু পালতে তো হবে। এটাও তাদের জন্য কম্প্রমাইজ।
মানুষের জীবন পুরাটাই কম্প্রমাইজ বা খাপ খাওনো নিয়ে। ইংরেজিতে যেটা এডাপ্টেসান। কিন্তু কম্রপমাইজ বা এডাপ্টেসানের শাব্দিক অর্থ আবার এক না। আরো বিশ্লেষন করে বলতে গেলে কম্প্রমাইজের সাথে খাপ খাওয়ানো। এই জিনিস্টার সাথে আমি মনে করি একটা মানুষের জিবনে সবচেয়ে বেশি দেখা সাক্ষাৎ হয়। কিন্তু অনেক সময় মানুষ ব্যাপারটা ঘটার সময় ঠিক সঠিকভাবে বুঝতে পারে না। সময়ের অভাবে চিনতে করতে পারে না।
এই জিনিসটা নিয়ে আরেকটু চিন্তা করলে আসে একটা কথা। যে মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য কি তাহলে কম্প্রমাইজ করে যায়া সব সময়। কোনো ভালো জিনিস কি তার জন্য কখনো অপেক্ষা করে না ?
মুসলমান হিসেবে আমি এক আল্লাহতে বিশ্বাসী। ধর্ম পালন করলে মানুষ বলে এই কম্প্রমাইজগুলা করতে হয় না। সঠিকভাবে দোয়া করলে আমরা একটা জিনিস পাই। কিন্তু এই কথাতেও একটা কথা আছে। আল্লাহ এর কাছে আমরা অনেক কিছুই চাই। কিন্তু যে জিনিসটা আমাদের জন্য ভালো আমারা সে জিনিসটাই পাব। আল্লাহ কখনই আমাদের খারাপটা দিবেন না। সুতরাং সেই খারাপ জিনিসটা না পাওয়া আমাদের জন্য যে খারাপ সেইটা আমরা যতদিন না উপলব্ধি না করি ততদিন সেটাও এক ধরেনের কম্প্রমাইজ।
অবশেসে তাই সব কম্প্রমাইজ পজিটিভ দিকে নিয়ে শেষ করতে চাই।
হয়ত বা যে বুয়েটে পড়ল না সে ফাইনান্সে পড়ে বিদেশে স্কলারশিপ পেল।
প্রাইভেটে জন্ম নিলে হয়ত রহিস সাহেবের ছেলে মারা যেত। হয়তবা অই পরিবারে ছেলে জন্ম নিলে সন্ত্রাসী হত। হয়তবা ছেলেটা ম্যাথ এ দেশসেরা হল।
কে জানে?
মুসলমান হিসেবে আমি বলব যে সব তাকদীর এবং সব ভালোর জন্যই।
কিন্তু ভাই লেখাটা নেগেটিভলিও শেষ করায় যায়।
যে বাচ্চাটা হয়ত সরকারিতে মারা যায়। মেয়েটা হয়ত তার জিবনে শুধু বাধাই পায়।
আর ছেলেটা ফাইনান্সে কখনই কিছু করতে পারে নাই।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৩৮