বাংলাদেশে খুব সস্তায় ডাক্তারি পরামর্শ পাওয়া যায় । আপনার মাথাটা খুব ধরেছে এটা শুনার পর দেখবেন কতজন কত পরামর্শ নিয়ে আপনার কাছে হাজির হয়, অন্তত ৫-৬ রকমের ওষুধের নাম আপনি জেনে যাবেন মুহূর্তেই । সঠিক ওষুধ না খেলে হতে পারে হিতের বিপরীত । আজকাল সমান তালে বেড়েই চলেছে হুজুরের সংখ্যা । ধর্মের ব্যাপারে কোন জিজ্ঞাসা থাকলেই দেখি নানা জনের নানা মত । চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক রোগের জন্য বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিভিন্ন ওষুধ থাকতে পারে কিন্তু ধর্মের ব্যাপারে ত একটাই মত থাকা উচিত, রাসুল (সঃ) এর মত ।
কথা হলো রাসুল (সঃ) এর মত আমরা কোথায় খুজবো । সেটা অবশ্যই সহি হাদিসে । কিন্তু এই পর্যায়ে এসে আমরা ভাগ হয়ে যাই । বুখারি, মুসলিম, তিরমিজির মত প্রায় নির্ভুল হাদিস গ্রন্থ এমন কি কিছু ক্ষেত্রে কোরআন কে পাশ কাটিয়ে আমাদের বড় পরিচয় হয়ে যায় আমি ত হানাফি, আমি ত আহলে হাদিস, আমি ত অমুক তমুক ইত্যাদি । আমরা সবাই বিশ্বাস করি কোরআনের পরে বুখারি সবচেয়ে বিশুদ্ধ কিতাব কিন্তু বুখারির কিছু হাদিস আমরা মানতে নারাজ এক্ষেত্রে আমাদের মাঝে দেয়াল হয়ে দাড়ায় মাযহাব । যেমন – বুখারিতে ঈমামের সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর মুক্তাদিদের জোরে আমীন বলার কথা বলা হয়েছে, এটা মহানবীর সুন্নাত । কিন্তু আমি এটা মানতে নারাজ কারন আমি ত হানাফি মাযহাবের !!! এটা আহলে হাদিস রা করবে ! পাঠক আমরা কি ঈমাম আবু হানিফার মাযহাব মানতে গিয়ে মহানবীর সুন্নাত পরিত্যাগ করবো ?
পাঠক, মুসলিম পরিচয়ের চেয়ে কেন আমাদের হানাফি বা আহলে হাদিস পরিচয় টা বড় হয়ে যায় ? মাযহাব আমরা অবশ্যই মানবো কিন্তু যেখানে আমরা রাসুল (সঃ) এর স্পষ্ট সহি হাদিস পাবো সেখানে মাযহাব কে কম গুরুত্ব দিব । একটা কথা আমাদের মাথায় রাখা উচিত যখন হানাফি, শাফিঈ,মালিকি এবং হাম্বলি মাযহাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো তখন সহি হাদিস কিতাব গুলো সংকলিত হয়নি তাই কিছু ক্ষেত্রে মাযহাবে গরমিল থাকতে পারে কিন্তু সেটা নিয়ে গোঁড়ামি করা উচিত নয় । যেখানে রাসুল (সঃ) এর স্পষ্ট সহি হাদিস থাকবে সেখানে মাযহাব ইজমা কিয়াস কোন কিছুই গ্রহনযোগ্য নয় ।
আহলে হাদিস অর্থ হাদিস বিদ বা হাদিস বিশারদ !! আপনারা সবাই নিজেদের গণহারে হাদিস বিদ ভেবে সমাজে কাদা ছোরা ছুরি কোনভাবেই উচিত নয় । আমাদের দেশে যে হারে ধর্ম ব্যবসায়ির সংখ্যা বাড়ছে তাতে যার যার ধর্ম শিক্ষার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে । পরিশেষে বলতে চাই বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসুল (সঃ) আমাদের কোরআন এবং হাদিস আঁকড়ে ধরে থাকার কথা বলেছিলেন যাতে আমরা পথ না হারাই কিন্তু আজ আমরা সুন্নি, শিয়া, মাযহাব, পীর-দরবেশ ইত্যাদি গোঁড়ামির কারণে পথ হারা মুসলিম ।
(এটা পর্ব- ১ । আগামী পর্বে এই ব্যাপারে আরও ব্যাপক বিশ্লেষণ ধর্মী আলোচনা করা হবে)
আল্লাহ্ হাফেজ
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫