somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বলি এক নারী পশুর কথা ........ সত্য ঘটনা

০৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাম তার রিতা (কাল্পনিক নাম) । বাড়ির সবচেয়ে আদরের মেয়ে । ছোট বোন মিতা তাকে দিদু বলে ডাকে । পিতা মাতা, ভাই বোন কেউ কোন দিন তাকে জোরে ধমক বা গায়ে হাত তোলে নি । কোন বিপদ আপদ তাকে কখনো স্পর্শ করতে পারে নি । সকলের নয়নের মণি বলতে যা বুঝায় তাই ছিলো রিতা । কিন্তু তবুও তথাকথিত প্রেমের মোহে আচ্ছন্নে থাকা রিতাকে কোন ভাবেই পারিবারিক ভালোবাসা দিয়ে ফেরানো যায় নি চলে গেছে তার ভালোবাসার মানুষের কাছে। মনোবিজ্ঞানিরা বলে থাকেন কেবল পারিবারিক স্নেহ মমতা ভালোবাসা দিয়েই এই অন্ধকার পথ থেকে ফেরানো সম্ভব কিন্তু রিতার বেলায় এই সুত্র কাজে আসে নি ।

রিতাকে একবার পবিত্র কোরআন শরীফ স্পর্শ করিয়ে শপথ করানো হয়েছিলো যে সে আর ওই ছেলের সাথে যোগাযোগ করবে না এবং পরিবারের সিদ্ধান্তের বাহিরে যাবে না । কিন্তু অল্প কিছু দিন পরেই সে তার শপথ ভেঙ্গে ছিলো । বাবার অসুস্থতার সুযোগে সে গোপনে কাজী অফিসে বিয়ে করে । বাবা হসপিটালে , মা কে হসপিটাল রেখে আমি রিতা কে অনেক বুঝাই এবং তার সম্মতিতে ডিভোর্স করাই । ডিভোর্সের ১ মাস পর বাবা মারা যায় । আর বাবা মারা যাওয়ার ৪০ দিন পর রিতা পুনরায় প্রেমিকের বাড়ি চলে যায় পরিবার ছেড়ে । পুনরায় কাবিন করা ছাড়াই এখন সংসার করছে ।

বাবার হাসপাতালের শেষ দিন গুলোতে পাশে ছিলো বড় ভাই সজিব । রিতার জীবন নিয়ে বাবা কতটা চিন্তিত ও আকুতি ছিলো তা কেবল সজিব অনুধাবন করতে পারে । বাবা শুনে গিয়েছিলো যে তার মেয়ে রিতা এই অন্ধকার জীবন থেকে ফিরে এসেছে , তখন বাবার হাস্যজ্জল চেহারা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো সজিবের । বাবা মারা যাওয়ার পর খুব বেশি দেরি করে নি রিতা, বাবার কুলখানির আয়োজনের আগে পালিয়ে না যাওয়াটা ছিল পরিবারের প্রতি রিতার সবচেয়ে বড় বদান্যতা । সারাজীবন সকলে মিলে পদ লেহন করলেও তার এই ঋণ শোধ হবে না । বাবা অনেক সৌভাগ্যবান কারন মেয়ের এতটা অধঃপতন দেখার আগেই তিনি গত হয়েছেন ।

রিতার মা, সদ্য স্বামী হারা হয়েছেন । অনেক আগেই নিজের বাবা মা, শ্বশুর শাশুড়ি, ভাই হারিয়েছেন এখন স্বামী হারানোর ব্যথাই ভুলতে পারেন নি তার উপর পাষণ্ড তথাকথিত মেঝো মেয়ে রিতা ভালোবাসার টানে বাড়ি ছেড়েছে । আল্লাহ্‌ সম্ভবত সব মায়েদের এমন আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা দেন না । সদ্য স্বামী হারা মা প্রেমিকের বাড়ির সকলের সামনে রিতার পা ধরে অনুনয় বিনয় করেও নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে পারেন নি । শেষে অজ্ঞান হয়েছেন । তারপর থেকে একটু পর পর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেই চলেছেন । মা যখন কাঁদছেন তখন হয়ত রিতা প্রেমিকের বাড়ির কাকে সালাম করতে হবে , কে কার কি লাগে তা মুখস্ত করাতেই ব্যস্ত । মা বার বার ফোন করতে চাচ্ছেন কিন্তু তার সরল মন এটা বুঝে না যে তার মেয়ে ত এখন কিভাবে বাসর ঘর স্মরণীয় করে রাখা যায় তার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত ।
একমাত্র বড় ভাই সজিব, অনেক স্বপ্ন দেখতেন বোন রিতা কে নিয়ে । বড় ভাই সুলভ নয় বন্ধুর মতই পাশে থেকেছেন । আশা করেছিলেন কমিশন পদবীতে সেনাবাহিনীতে ভর্তি করাবেন কিন্তু বিধি বাম ! প্রেমিকের বাড়ির অনেক অপমান ও কিল ঘুসি সহ্য করেও ফিরিয়ে নিতে পারে নি তার বোনকে । বাবার মতই পাশে থাকতে চেয়েছিলো তার ভাই । বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় ছোট বেলায় কোলে নিয়ে রাখা বোনটি আজ প্রেমের টানে বাড়ি ছেড়েছে । পরিবারের প্রতিটি সদস্যের sacrifice এর মূল্য এভাবেই দিতে হলো ?

এমনিভাবে প্রেমের টানে বাড়ি ছেরে সকলের স্বপ্নকে কবর দেয়া এক নারীকে পশু বললেও হয়ত পশুরা তাদের আদালতে আমার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবে । বাড়ি ছাড়ার আগে রিতা একটা চিঠি লিখে যায় যেখানে পালিয়ে যাওয়ার কিছু শিশুতোষ হাস্যকর যুক্তি দাড় করানো হয়েছে । এসব যুক্তি তার স্বল্প এবং উগ্র জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ । বোধয় দুনিয়ার সব পালিয়ে যাওয়া প্রেমিক প্রেমিকারা খর কুট যুক্তি দিয়ে তাদের অপকর্মকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছে । রিতা কিছুটা স্বাধীনচেতা মেয়ে (!) । পারিবারিক বাধ্যবাদকতা তার নাকি তেমন পছন্দ নয় ! যতটা জানি নিজের বাড়ির চেয়ে বেশি স্বাধীনতা একটা মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে পায় না ।

প্রেমিক রিতার ক্লাস মেট । রিতার সাথে HSC ২য় বর্ষে পড়ুয়া । রিতার বিশ্বাস সে ভবিষ্যতে অনেক কিছু করবে সুতরাং সে আমার যোগ্য ! মানুষ ২০০ টাকা দিয়ে বর্তমানে ফল ধরা আম গাছটাই কিনতে চায়, ২০ টাকা দিয়ে চারা গাছ কিনতে চায় না কারন পোকার আক্রমণে বা ছাগলের জন্য বা ছায়ার জন্য গাছের ভাগ্যে ভবিষ্যতে অনেক কিছুই হতে পারে । রিতার জন্য পরিবার ফল ধরা আম গাছটাই কিনত চারা গাছ নয় ।

নিজের পরিবার একটা মেয়ের জীবনে পেছনের খুঁটির মত কাজ করে , যেটা আলগা হলে তার পথ চলা খুব রিস্ক হয়ে যায় । নিজের জীবন নিয়ে এমন বাজি ধরা কোন বুদ্ধিমতি মেয়ের কাজ হতে পারে না । রিতা তার একটি চাওয়াকে সত্যি করতে গিয়ে অনেকের স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে যারা তার জীবনের সুখে দুখে পাশে ছিলো ।যে পরিবারে রিতা ২০ বছর লালিত পালিত হয়েছে তারা রিতার কাছে ধন সম্পদ, টাকা পয়সা কোন কিছু চায় নি শুধু চেয়েছে নিজেরা দেখে শুনে বিয়ে দিতে তাও সেটা তার ভালোর জন্যই ।এই অধিকারটা কি পরিবার প্রাপ্য ছিলো না ? স্বামী হারা জন্মদাত্রী মাকে প্রেমের মোহে অন্ধ হয়ে যে মেয়ে এতটা কষ্ট দিতে পারে সে নারী সমাজের জন্য কেবল কলঙ্ক হয়ে থাকবে ।

এখানে উল্লেখিত সজীব ছেলেটি আমি । যদি কোন নারীবাদী প্রগতিশীল ব্যক্তি লিখাটি পড়ে থাকেন তবে মন্তব্য করা থেকে দূরে থাকবেন । রিতা প্রাপ্ত বয়স্ক, ভালো মন্দ বুঝার বয়স হয়েছে , দেশের আইন অনুযায়ী ঠিক আছে এমন সব মন্তব্যই হয়ত আপনারা করবেন । কিন্তু বোন পালিয়ে যাওয়ার ব্যথা কেবল আমার মত ভাই বুঝতে পারে । আমার নিজের জীবনেও প্রেমের ঘটনা আছে কিন্তু পরিবার রাজি না তাই এটা নিয়ে ঝামেলা করি নি । জীবনের এই পর্যায়ে এসে মনে হয় একমাত্র ইসলামী অনুশাসন পারে এইসব কাজ থেকে দূরে রাখতে । আপনারা যারা নারীবাদীতা , প্রগতিশীলতা , মুক্তমনার কথা বলেন তারা পারেন কেবল নারীর কপালে বড় লাল টিপ আর মিনি স্কারট পড়িয়ে রাস্তায় নামাতে আর দূর থেকে মজা দেখতে । (sorry to say)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:২১
১১টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×