আরোপিত বিদ্যের চোখ-রাঙানি ঠেলে
বারবার কোথায় ছুটে গেছি!
নুয়ে পড়া আখের ক্ষেত
ধানকাটা হয়ে গেলে কৃষকের পুনঃ প্রস্তুতি
দূরে নাড়ার দহন, মাটি ফুঁড়ে সোনামুখো
বীজের উল্লাস,
মরা নদীর সুতো, আমাকে টেনে নিয়ে
সঙ্গোপনে রেখে দিয়েছে।
দুধের গ্লাসে মায়ের সতেজ স্পর্শ থেকে গেছে,
পড়ার টেবিলে বইয়ের পাহাড় দিনে দিনে
বেড়েই গেছে
জানালার ফোঁকরে
রোদ এসে আবার ফিরে গেছে
দূর দেশ থেকে ছুটে আসা পাখিদের ক্লান্তি
নিয়ে
আমিও লুকিয়ে গেছি কুয়াশায়।
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশিবার শোনা
মধুর সুর -ট্রেনের হুইসেল
ডিমওয়ালা মাছের মতো -
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশিবার স্বপ্নে দেখেছি
মালবোঝায় ট্রেনের মুখ।
আমার পাঁজরের দুটো নল খুলে দেখ -
সেখানে দুদিক দিয়ে বয়ে গেছে রেললাইন।
'আবার আসিব ফিরে'- না এবার আর
ধান সিঁড়িটির তীরে নয়, -রেলকলোনীতে।
যখন যা দেখেছি, যা বুঝেছি, যা পড়েছি
প্রজাতির মতো কল্পনার রঙে ভেসে ভেসে
তাই হয়েছি
কখনো গোর্কির মতো নির্জন নদীতে
আত্মহত্যা করতে চেয়েছি
কীটসের মতো যক্ষ্মায় ভুগে ভুগে
তবুও লিখতে চেয়েছি দ্রোহের কবিতা
এভাবে রবীন্দ্র
জীবনানন্দ
বিষ্ণু ..
ইতিহাসের সফেদ দেয়ালে বারবার
ঘষতে চেয়েছি মাথা!
শেষ বিকেলের রোদ্রের মতো -যে দুটো
চোখ, সেই কবে মিলিয়ে গেছে জানালায়,
সে কি আজো আমার মতো
কিছু একটা হতে চেয়ে বসে আছে?
আমি আজ হতে পারিনি কিছুই
এমনকি আমার মতোও না
তবুও মনে হয়
বিশ্বকর্মার মতো যদি কেউ কেউ
আর একবার এগিয়ে আসতো
তাকে বলতাম, সুইস ব্যাংকের সমস্ত
রিজার্ভ তোমার ঝুলিতে ফেলে দিলাম,
তুমি শেষবার, - দলবল নিয়ে
স্রোতের বিপরীতে রথের চাকা ঘুরাও।
-