শয়তানকে যখন আদমকে সেজদা করতে বলা হল তখন শয়তান আদমকে সেজদা করেনি। পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করে মহান প্রভুর সাথে তর্কে নামে। আর সেই কারণেই ইবলিশ শয়তানে পরিণত হয়। চির অভিসম্পাত হয় তার নিত্য নিয়তি। মোটামোটি তখন থেকেই শুরু হয় রব্বে আলার প্রিয় সৃষ্টির সাথে শয়তানের লড়াই। সত্য মিথ্যার সংগ্রাম। ইতিহাসের প্রথম যুক্তি ছিল শয়তানের দেয়া সেই যুক্তি। যুক্তির পথ চলার এই ঐতিহাসিক প্রক্ষোপট থেকেই শুরু হয় আরেকটি নেগেটিভ শব্দের পথ চলা সেটি হল অকৃতজ্ঞতা । আবার আমরা দেখতে পাই ঔদ্ধত্যের পথ চলাও শুরু হয় ঠিক শয়তানের হাত ধরেই।
তো কেন শয়তান এমনটা করেছিল? এর বেশ কিছু কারণ থেকে কয়েকটা হল- নিজের প্রতি অতি আত্মবিশ্বাস, অহংকার, কর্তৃত্ব মানতে না পারার মানসিকতা, যুক্তিকে ধ্রুব মনে করা, অকৃতজ্ঞতা, কোড অব কন্ডাক্ট মানতে অক্ষমতা , অবাধ স্বাধীনতা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা, ঔদ্ধত্যপনা, জ্ঞানকেই মুক্তির পথ ভাবা, নিজের প্রভৃত্তি কে প্রধান্য দেয়াসহ আরো কিছু কারণও ছিল।
আর আজ মানব সৃষ্টির সুদীর্ঘকাল পর আমরা কী দেখতে পাই? স্রষ্টার বিধান মেনে সুশৃঙ্খল জীবন যাপন মানতে না চেয়ে নিজের প্রভৃত্তিকে প্রধান্য দিয়ে একদল লোক প্রতিনিয়ত শৃঙ্খল মুক্তির কী কোশেষই না করছে। শৃঙ্খল মুক্তির আর অধিকারের নামে পশুবৃত্তির দিকে ক্রমধাবমান এই মানুষ(?)গুলো অজাচারকেও বলছে এটা নাকি প্রাপ্ত বয়স্ক(ধরনী একটু জায়গা দাও পালাই) মানুষের মিউচুয়ালের বিষয়।
স্রষ্টাকে মানতে হলে আরো কিছু বিষয় মানতে হবে। জীনকে করতে হবে পরিশুদ্ধ।(যারা স্রষ্টাকে মানে তারা সব যে পরিশুদ্ধ তাও নয়। কারণ শয়তান কই যাবে???) পাপ ও পুণ্যের অনুভূতি থকতে হবে। থাকতে হবে তওবার মত চরম নিবেদনে নত হওয়ার গুণ। জাগতিক লোভ-লালসা, কাম-ক্রোধ, পাশবিকতা, শটতা ইত্যাদি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে হবে। আর সেই সব ঝামেলা থেকে বাঁচার একটা সহজ পথ হল আমি স্রষ্টাকেই মানিনা বলে যুক্তির ঝঁপি নিয়ে হামলে পরা।
আমার ব্লগ জীবন খুব বেশি দিনের নয়। কিন্তু যে টুকো দেখলাম তাতে আমার কাছে মনে হল শয়তান যে বিষয়গুলো শুরু করেছিল তার সবগুলোই আছে নাস্তিকদের মাঝে।
এরা যুক্তির মত এক মরিচিকার পেছনে দৌড়ছে নিত্য দিন।(অথছ যুক্তির স্বাভাবিক প্রবণতা হল সে কখনই সীমানায় যাবেনা।বিতর্ক প্রতিযোগিতায় কয়েক বছর সময় দেয়ার অভিজ্ঞতায় বলে।কারণ, সব সময় মনে হতো আহ এই কথাটা বা যুক্তিটা দিলে ওদের বাপেও এটা খন্ডাতে পারতোনা।) অথচ এই যুক্তির ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছিল শয়তান।
ওরা নিজেদের জ্ঞানের প্রতি চরম আস্থাশীল- কারণ তারা বলে আস্তিকদের বুদ্ধি হাটুর নিচে( কই থাকে? মেলা খুজলাম পাইলাম না হাটুর নিচে কোন বুদ্ধির পাত্র? দুর তুই তো আস্তিক!!! স্যাটায়ারই বুঝছ না।) আর নাস্তিকদের বুদ্ধিই কেবল মগজে। [বাট আমার মনে লয়! হেগোর বুদ্ধিতে গিলুটা কম।] তো শয়তানও এমনি করে নিজের জ্ঞানের প্রতি আস্থাশীল ছিল।
নাস্তিকরা নিজেদের মত ও বানানো পথে নিজেদের মানবিক উৎকর্ষতা সাধন করার ব্যাপারে অতি আত্মবিশ্বাসি। শয়তানও তার এবাদতের প্রতি অতি আত্মবিশ্বাসী ছিল।
এরা রবকে মানেনা। কারণ আল্লাহ আছেন এর কোন প্রমাণ নাই। তাই আল্লাহ ও তাঁর আইন মানারও প্রশ্ন আসেনা। আল্লাহকে না মানার আরেকটা কারণ হল - আল্লাহকে মানলেই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। তার প্রতি অনুগত থাকতে হবে। নাস্তিকরা এই কৃতজ্ঞতাটুকোও প্রভুকে দিতে চায়না। আর শয়তানও এমন অকৃতজ্ঞতা দেখিয়ে আল্লাহর আদেশকে লঙ্ঘন করেছিল।
নাস্তিকরা নিজেকেই নিজের পরিচালক মনে করে এবং আল্লাহকে চ্যালেঞ্জ করে। ফেরাউন ও নমরূদও আল্লাহকে চ্যালেঞ্জ করেছিল।তাদের পরিণতির কথা তো ইতিহাসে আছে মানুষের বোধদোদয় হওয়ার জন্য।
আরো লেখা যেতো কিন্তু বড় হয়ে যাচ্ছে তাই থামলাম। আবার কথা হবে অন্য কোন দিন।
গালি দেয়াটা তাদেরকেই মানায়। যাদের পাত্র খালি। কারণ আরবী একটা প্রবাদ আছে বাংলাটা এমন_ যার মনে যা তাই সে ঢালতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫২