কেবলা পরিবর্তন
এতেকাফ শেষ হয়ে গেছে। খড়মের
বাহু বিরামহীন গাছের লাফে—গুটিয়ে নিচ্ছো
নাচসমগ্র। বিনাবাক্যে লুটিয়ে যাচ্ছি
প্রার্থিত সংকল্পে। প্রস্তুত কান্নারা, নেই আর বাকী।
পরিবর্তিত কেবলা নীল রেকাবির
ফুটনোটে তাতাচ্ছে অজুত। বেহুলার ভেলা থেকে
ফিরে ফিরে তাকাচ্ছে ছলাৎ। দুঃখগুচ্ছ
নতুন কেবলায় সহ্যের কৃপা ছুঁয়ে ধ্বসে যাচ্ছে!
রাখালের হাটে হামাগুড়ি দিয়ে বৈঠা
লিখেছো; পুষ্প স্রোতের বিন্দুতে। অন্যত্র ছবিয়াল
ঝুকে দেখে দুর্দিন—কিভাবে নৃত্যের
ছায়া ঠোঁটের পাঠ থেকে দ্রুত উড়ে যায় বিষে—
সীতার কেবলা। আঁচলের প্রার্থনায়
বিনিময় হচ্ছে জানেনি তোমার বিস্ময় ভূতেরা।
গন্তব্য
এতটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছো; কেন? শেষ রাতে আর
কান্নার গভীরতা বাড়িয়ে কী লাভ বলো। তব কেন
ডেকে যাও ভীরু বাঁকের শ্মশানে। উল্টো কাঁধে জমে
আছে কত পাপ, তার খাপ নেই কোনো। জ্বরময়
পরি’র ভ্রমণে হাঁটুজল ঠেলে বন্ধি হয়ে যায়
খণ্ডিত আখ্যান। খদ্দের এলেও মাথা নিচ করে
পঠিত হয়েছো; কিছুই রাখোনি পাশাপাশি বাড়ি।
অথচ আয়না অসখে জড়িয়ে আছো থই; ঘরময়।
গচ্ছিত খৈলানে পিচ্ছিল হচ্ছিলে দরে গেলে কত
মাপিনি বৈঠার মেকাপ। ঠকেছি তব; হেসে হেসে
রুইয়ে দেখেছি কতটুকু বাঁচে ভুলো মন। আর
দালানের ডালে সঞ্চিত প্রহারে কত হয় জয়।
পেত্নির কাগজে যেসব চিঠিরা হাসে রোজ রাতে
তাদের কলবে বন্যারা বাঁচুক, ভালো থেকো ভাতে।
নিবেদন
কেনো ভালোবাসতেই হবে, উগড়ে দিতে হবে সব
ঘটনার ফসল। কেনো গড়তেই হবে, ছড়াতে
হবে—দৃশ্যের পাহাড়। আমার কোকরানো পাঠ্যে
এইসব ভূগোল নেই। নেই কোনো বনেদি ভুল,
কুমারীর কসম। ভ্রমের শব্দে হাঁটছি স্বদেশ,
বিকাচ্ছি শ্রমের ঘামে। রুখে দিতে পুইয়ের বেড়ে
ওঠা, ভেজা হাতে শুকাচ্ছি আগুন—শুয়ে পড়ছি
মাচায়। কেনো বাঁচতেই হবে, অর্জিত হতে
হবে নিষিদ্ধের বাজারে। কেনো আঁকতেই হবে—
মুছে যেতে হবে দ্রোহের ফাঁপরে। হরিজন আমি
পায়েসের ভ্রুণে দ্রবিভুত হচ্ছি, দ্রুত। ঘুড়ি নেই
আমার বিচ্ছেদের সংঘে—নেই কেনো ওষধির
প্রতিজ্ঞা। সহস্র পাতাল গড়ে উঠছে ইটে, ভিটে
মিশে যাচ্ছে গ্রামে আর আমি রুইয়ে যাচ্ছি পাথর।
ব্রত
এই চোখকে বিশ্বাস করো—প্রত্যাহত শব্দের
সাথে আমিও মিশে আছি ধুলোর শোকে। সান্ত¡নারা
পিঠে করে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে—আর্যের খোয়ারে;
প্রতিহত হও। পরন্ত ইচ্ছায় নাক ফেলে রাখো।
পুরোহিত কানের কাছাকাছি হাত রাখো। সহস্র
মোমের মমিতে স্বামীর প্রেতাত্মা। ঘুণে ছয়লাব
হয়ে গেছে হতাশার পানাহার। চোখে তাকাও—
গভীরে নেমে যাও। বিশ্বাস করো ক্লান্তির প্রোপজ!
মাটির ক্রোধ নিয়ে ফসলে মিশে আছি বে-রহম।
কালো পৌরুষে ঘৃণা রাখিনি কোথাও। মুছে ফেলেছি
ঈশ্বরের দাগ! বিশ্বাস করো আমাকে, নেমে যাও
—আমার চোখে, দ্রুত। সমুদ্র অধিক ঢেউ পাবে।
মহাশোকের বিভৎসতা পাবে। ক্ষরণ উৎসবে
মিইয়ে যাবে বটের বিভা। আমার চোখে তাকাও।
সাক্ষী
আমি চুরি করার সময় তুমি দেখে
ফেলেছো ভেবে হাসো—কানাকানি করো। বদনাম
ছড়াও। আমার বুদ্ধিমত্তা ও মূর্খতা
নিয়েও নানান কথা বলো। তন্দ্রার ঘোরে প্রচণ্ড
তৃপ্ততে ভুগতে থাকো—তুমি আমার
চুরিবিদ্যার একমাত্র সাক্ষী আছো জেনে। ভেবেও
রাখো ব্ল্যাকমেইল করবে আমাকে।
আমিও হাসি। তোমার মূর্খতা দেখে আমার ভালো
লাগে। ভাবতে ভালো লাগে আমিও কারো
মূর্খতা নিয়ে হাসতে পারি। পৃষ্ঠায় দেখো; উড়তে
থাকা পাখায় আগুন লেগে যেতে পারে,
তবুও তোমার মনের গোপন সুখ ধরে রাখো।
ছুরিযুদ্ধ শেষ হলে জেনে যাবে তুমি;
সব চুরিতেই আমি সাক্ষী রাখতে পছন্দ করি।
প্রপ্তিস্থান: অনুপ্রাণন প্রকাশন, স্টল নং ৫৯২-৫৯৩
#সানাউল্লাহ_সাগরের_কবিতা
#অমর_একুশে_গ্রন্থমেলা_২০২৩
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৫৪