জ্বালাময়ী
যদি ভালবাসো তবে,
জ্বরের ঘোরে প্রলাপময় এক দুপুরে কপালে হাতের স্পর্শ রাখার জন্যে হলেও
অথবা খানেক জলপট্টি দেয়ার জন্যে হলেও পাশে এসে বসো,তুমিতো জানোনা হে!
তুমি আমার অসুখ!তুমি আমার পিড়া আর তুমিই আমার কুইনিন!
যদি ভালবাসো তবে,
আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি পরের জন্মে আমায় জেনো তোমার চোখের মনি করে দেয়।
আমি তোমার চোখে দেখতে চাই আমাকে!
আর ও জন্মে তোমার চোখে আমায় দেখতে চাই,নিস্পলক দেখতে চাই,ঠিক যেমন এখন দেখছি!
তুমিও খানেক এমন করে চেয়ে নিও কেমন?
যদি ভালবাসো তবে,
আমার ঘুমন্ত মুখে এমন হাজার স্বপ্নের সিঁড়ি বুনে দিও, ঠিক যেভাবে ঢেউ আছড়ে পড়ে তীরে।
জেনো সেভাবেই, যতটা তুমি নেশা,তুমি ঘোর,তুমিই কামনা!
তোমাতে থেকে আমি দুনিয়া ভুলে যাই ঠিক যতটা তুমি যখন আমায় দূরে রাখো
তখন আমি এই কন্টক পৃথিবীর আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাই!
স্বর্গ বিতাড়িত শয়তানের মতো এই জগৎটাকে চষে বেড়াই!
ঠিক ততটা আমায় একজনমে ভালবেসো অথবা খানিকটা তার চেয়েও বেশি!
যদি ভালবাসো তবে,
তোমার কাছে অল্প কিছু রোশনাই আছে,আমার ঘরটা তোমায় দিলে
তুমি বিনিময়ে তোমার রোশনাই গুলো দিয়ে দিও!
তোমার একটা ঘুমন্ত চেহারায় আমি আমার হাজার অভ্যেস বদলে দিতে পারি,
লিখে দিতে পারি ২০০ টা নির্ঘুম রাতের কালজয়ী মহাকাব্য!
বিনিময়ে আমাকে তোমার উপন্যাসে করে নিও কালজয়ী নায়ক।
যদি ভালবাসো তবে,
মাঝরাত্তিরে আমার হাউমাউ কান্না শুনে তুমি জড়িয়ে ধরে বলো,
কি তোমার মন খারাপ কেন...?
চল আজ না হয় দুজন একসাথেই কাঁদি।
এই যে তোমার কাজল চোখের চেহারাটা, এটা আমার ভীষন পছন্দের!
যদি আগামী কয়েকশো বছরের জন্য তোমার ওই মুখটা তাকিয়ে থাকার অনুমতি চাই তবে,
আমাকে এতটুকু সাহস দিও কেমন?
যদি ভালবাসো তবে,
আমার থাকা না থাকা নিয়ে তোমাকে ভাবাবে ভীষণ!
অথবা হঠাৎ নিরুদ্দেশ হলে,হন্যে হয়ে খুঁজবে!
তোমার মুখটা দেখতে কি ভীষন নিষ্পাপ,
শুধু মাত্র তুমি মাত্রই প্রেম তাই- এত পবিত্র লাগে।
শুধু একটু দু'দন্ড নির্ভেজাল সময়, এই শহরের অলিতে গলিতে তোমায় নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর আবদার,
আর এই আবদার পূরনের জন্যে হলেও মিথ্যে করে হলেও বলো আমার আজ কোনো কাজ নেই,
এতটুকু বলো কেমন?
যদি ভালবাসো তবে,
আমার আটকে যাবার কারন তুমি হয়ো!
তোমার মুখের মায়ায় সফল হোক আমার হাজারটা চুম্বন!
জানি তোমার রাস্তা পারাপারের ভীষন ভয়!
তবু তোমাকে সাহস দিতে পারি এ ভেবেই কাটাই কত যে সন্ধ্যা!
মনকে বলি, আমার এমন একটা তুমি আছো যাকে ছাড়তে পারি নারে!!
জীবনবাবুর মত তোমায় বলতে হয়,-
"তবুও তোমায় জেনেছি নারী,ইতিহাসের শেষে এসে;
মানবপ্রতিভার রূঢ়তা ও নিষ্ফলতার অধম অন্ধকারে।
মানবকে নয়, নারী শুধু তোমাকে ভালোবেসে
বুঝেছি নিখিল বিষ কী রকম মধুর হতে পারে!"
সানবীরের দ্বিতীয় অধ্যায়(সানবীর খাঁন অরণ্য)
আগারগাঁও,ঢাকা
৮.৬.১৮