somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভয়ংকর ঠগী (চতুর্থ পর্ব)

৩১ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ভয়ংকর ঠগী (প্রথম পর্ব)
ভয়ংকর ঠগী (দ্বীতিয় পর্ব)
ভয়ংকর ঠগী (তৃতীয় পর্ব)

ঠগিরা ছিল বাংলাদেশেও !



অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকে ঠগীদের হত্যাকান্ড তুঙ্গে উঠলেও ১৩ শতক থেকেই উত্তর ভারতে ঠগীদের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। আর বাংলায়? অনুমান করা যায় ঠগীরা পূর্বে দিল্লির আশেপাশে ছিল এবং ১২৯০ সালের পর বাংলায় আসে। ১৩৫৬ সালে ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দীন বারানি “ফিরোজ শাহর ইতিহাস” গ্রন্থে লিখেছেন: ‘ সুলতানের শাসনামলে (১২৯০) কয়েকজন ঠগীকে দিল্লিতে আনীত হইয়াছিল এবং উক্ত সংঘের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া আরও সহস্র ঠগীকে আটক করা হয়। সভাসদরা চাইলেও সুলতান তাহাদের হত্যার নির্দেশ দেন নাই। সুলতান উহাদিগকে নৌকায় করিয়া লক্ষণাবতীতে পাঠাইয়া দিতে নির্দেশ দেন যেন তাহারা আর দিল্লি এবং তার আশেপাশে গোলযোগ না করে।’

এখন প্রশ্ন হল লক্ষণাবতী কোথায়? লক্ষণাবতী বা লখনৌতি হল গৌড় বাংলা। যা অবস্থিত ছিল বর্তমান ভারতের পশ্চিম বাংলার মালদা জেলায়। সে হিসেবে বাংলায় ঠগীদের ইতিহাসের সূত্রপাত ১২৯০ সাল থেকেই। সেসময় বাংলাদেশ ছিল নদী নালায় ভরা। তারপরও বাংলার মানুষ ঠগির আক্রমণ থেকে রেহাই পায়নি।

বাংলার নদী নালার ঠগিদের নাম ছিল ‘ভাগিনা’। ভাগিনারা জলপথে আক্রমণের জন্য বেছে নেয় ভিন্ন কৌশল। জলপথে ঠগিদের শিকার করার পদ্ধতি ছিল অন্যরকম। তারা লোকজনে ভরা কোনও খেয়াঘাটে যাত্রী সেজে নৌকা নোঙ্গর করে বসে থাকত। দলের কিছু লোক ডাঙ্গায় ফাঁদ পাততো। তারা যাত্রীদের কৌশলে নৌকায় এনে তুলত। নির্জন যায়গায় নৌকা পৌঁছলে, ছইয়ে যারা বসে আছে তারা ইঙ্গিত দিত এবং হাল বাওয়া ঠগি পাটাতনে তিনবার বৈঠা ঠেকাত। এই সংকেত পাওয়ামাত্রই ছইয়ে এবং পাটাতনের যাত্রীদের উপর শুরু হয়ে যেত ঠগীদের আক্রমণ। অথবা ঠগিরা দেখল কোনও বেপারির নৌকা ভেসে যাচ্ছে। তখন ঠগীরা তাদের সাথে ভাব জমাত। এরপর দুই-তিনদিন একসাথে নৌকা চলা; একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া। ঠিক হতো সন্ধাবেলা গানের আসর বসবে। সেইমতো আয়োজন হত। ঠগীরা শিকারের আরপাশে গোল হয়ে বসত। গান যখন জমে ইঠত তখনই হত্যার নির্দেশ জারি হত। ব্যাস মুহূর্তেই সব শেষ। ফের যাত্রা শুরু হত।


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ২:২৩
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×