বর্যা, তুমি চলে যেও না
দেখো, কত্ত সুন্দর সংসার আমাদের
কি নেই বলো, কি নেই আমার,
ব্যংকে রক্ষিত টাকা সব তোমার নামে
জায়গা বিক্রির টাকা, তাও তোমার নামে
তিন জায়গায় তিনটি দোকান
সব তোমার নামে গড়েছি, তবুও
তবুও তুমি যা চাও তাই দিবো কিন্তু
এভাবে আমাকে একা ফেলে
চলে যেও না বর্যা।
দেখো, একদিন অজ পাড়া গায়ের থেকে
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেছি তোমাকে
কি ছিলো তোমার বলো?
তুমি ছিলে একটি মাটির দলা, আমি
আমি সেই মাটিকে শিল্পে রুপ দিয়েছি
নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষা ছাড়া
কথা বলতে পারতে না, হাই হিল
জুতো পড়ে তুমি হাটতে পারতে না,
ইংরেজীতে তুমি ভীষণ কাচাঁ ছিলে,
ড্রাইভিং, কম্পিউটার এইসব কিছুই জানতে না,
এই আমি, পইঁ পইঁ করে তোমাকে শিখিয়েছি
নিজের জমানো টাকা খরচ করে তোমাকে
ভোগ ইনিষ্টিটিউট থেকে ফ্যাশন ডিজাইনার বানিয়েছি,
ফেইসবুক, ড্রাইভিং, হিল পড়ে হাটা সব সব কিছু
তুমি আমার মাধ্যমে শিখেছো, ইংরেজীতে কথা বলা,
শুদ্ধ বাংলা বলা শিখেছো, কত্ত সুন্দর ফুটফুটে এক
বাচ্চা দিয়েছি তোমাকে, কিন্তু তুমি হায়
সবকিছুকে ভুলে গিয়ে আমাকে বন্দী করলে
কেনো আমি একটা ধাক্কা দিয়েছি তোমাকে
তার শোধ তুলতে গিয়ে তুমি আমার নামে
নারী নির্যাতনের মামলা করে বসলে
আমি কি কষ্ট ভোগ করেছি/করছি, সে কথা বলার নয়,
কিন্তু আজ তুমি আমাকে জেলে ফেলে রেখে
আমার সবকিছু নিয়ে চলে যাচ্ছো, প্লীজ, দোয়ায় তোমার
তুমি এমন করতে পারো না, আমার মেয়ের অধিকার
আমার সৃষ্টিকে নিয়ে তুমি এভাবে চলে যেতে পারো না
বর্যা, আরেকটিবার ভাবো, দয়া করো, না হয় একটু
করুণা করো, কারণ তেরোটি বছর কাটিয়েছি এক বিছানায়
কত স্মৃতি, কত আনন্দ মূহুর্তু সব কিছুকে জলাঞ্জলি দিয়ে
তুমি চলে যাবে, আমি কিছু ভাবতে পারছি না,
বর্যা যদি যেতেই হয়, সব নিয়ে যাও, শুধু
আমার মেয়েটিকে আমার কাছে দিয়ে যাও
দেখো, আমি ঠিকই ওকে মানুষ করবো
বর্যা, তুমি কি শুনবে আমার কথাগুলো
বর্যা, প্লীজ একটিবার শুনো
একি, তুমি চলেই যাচ্ছো, তুমি মেয়েকে নিয়ে
শেষ পূর্যন্ত চলেই গেলে, হায় র্বষা
আমি তোমাকে রুখতে পারলাম না
আমি ব্যর্থ বর্যা, আমি সত্যি আজ পরাজিত।
২১শে জানুয়ারী/২০১৬ইং।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৭