যখন সরকারী ফোর্স ব্যবহার করে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে এ দেশের মানুষকে ডাউন করে রাখতে চেয়েছিল পাক সরকার তখনকার প্রতিকূল পরিবেশ বোঝা এই জেনারেশনের পক্ষে সম্ভব না। সেই ভয়াবহ অবস্থাকে ভয় না পেয়ে যারা অস্ত্র হাতে দানব শক্তির বিরুদ্ধে নামতে স্পর্ধা করেছিল, যে আবেগ নিয়ে যুদ্ধে নেমেছিল সেটা এখনকার জেনারেশন বুঝতে পারবে না।
তখন যদি এই সোনার সন্তানেরা না নামত হয়ত আজো উর্দুভাষীদের দ্বারা নির্যাতিত নিপিড়িত হইতে হইত আমাদের। জামাত/রাজাকার দলগুলো তখন ক্ষমতা পরিচালনা করত আর জীবনকে ত্যানা ত্যানা করে ফেলত।
যাইহক, সেই ভয়াবহ অবস্থা থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন। জামাত নামক বিষফোঁড়া থেকেও এই দেশ মুক্তি পাবে আশা করা যায়। কিন্তু স্বাধীনতার সুফল জনগণকে না দিয়ে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এর শুরুটা করেছিলেন স্বয়ং বংগবন্ধু। তাঁর উচিত ছিল ইন্দিরা গান্ধীর সাথে থেকেই দেশ পরিচালনা করা। একক বাকশাল ইত্যাদি রাশিয়ার পরামর্শ মেনে করা হয়েছিল যা বংগবন্ধু'র সাথে যায় না। কিন্তু ভুল পথে পা দিয়ে ফেরত আসা খুবই কঠিন, সেই ভুলের মাশুল দিতে হইল তাঁকেই।
মাওলানা, তাজ সাহেব উনাদের সাথে নিয়ে কওমী নেতৃত্ব নিয়ে ভালই দেশ চালান যেত যা শেখ সাহেব গোনায় ধরেন নি। ফলে অবিসংবাদিত নেতা' হিসাবে অবিতর্কিত অবস্থান তাঁর জন্য প্রযোজ্য হইতে পারে না।
আজকে দেশের যে ভয়াবহ দুর্নিতি ইহা শেখ সাহেবের ব্যর্থতার ক্রমাগত ফলাফল। উনার থেকে ক্ষমতা আনার্কি, তারপর জিয়া, তারপর এরশাদ।
লেঃজেঃ এরশাদ সাহেব করেছিলেন খারাপ কাজ। ভনিতা করে, দুর্নিতির বিষ ছড়িয়ে দেশকে আজকের এই অবস্থায় নিয়ে আসার ভয়াবহ প্লট করেছিলেন তিনিই। সাধারণ মানুষদের এত কষ্ট করতে হচ্ছে এই ক্রিমিনাল লোকের কারনে।
অথচ উনার আগে মেঃজেঃ জিয়ার শাসনের সময় দেশে নববিপ্লব সাধিত হয়েছিল যার মধ্যে গার্মেন্টস শিল্প, বিদেশে জনশক্তি প্রেরণ, মেডিকেল ইত্যাদি ছিল। এই দেশের আজকের বৈদশিক ভান্ডার সমৃদ্ধ হইতেছে মুলত গার্মেন্টস আর জনশক্তির প্রেরিত পয়সা থেকেই। আজকে এই দেশের মুরাদ টুরাদ বধমাইশগুলা দেশে তেলতেলাইয়া চলতে পারতেছে সরকারে টাকা থাকার কারনেই। যদি রিজার্ভে এই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার না আসতে থাকত তবে ভিক্ষার থালা হাতে নিয়া ভারত, চীন দৌড়ান লাগত।
কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী, আমাদের সেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না বরং আওয়ামীলীগ সরকার সহ অন্যান্য সরকারের সময়ে ক্রমাগত দেশের বিভিন্ন সূচকে উন্নতি দেখা যায় যা ভারত, পাকিস্থান থেকেও অনেক সময় ভাল।
কিন্তু যতই সূচক ভাল হউক, এই দেশের পদে পদে সমস্যা, দুর্নিতি। দেখলে গা জ্বলে। আমি দুবাইয়ের টিকিট করতে আজ বিমানের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখি টিকিট করার অপশনই নাই। ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে দেখা যায় নাই। অথচ বছর শেষে ট্রেনের আর্থিক ক্ষতি বেশি থাকে। একটা আট হাজার টাকার কম্পিউটারের দাম দেখান হয় চার/পাঁচ লাখ টাকা। বালিশ দুর্নিতি শুধু রুপপূরে না, সব খানেই আছে। ১০ টাকার সকালের নাস্তা ৩০০ টাকা বিল দেখান হইতেছে হসপিটালে। জেলের কয়েদীদের যে খাবার দেওয়া হয় তার ১০% তাদের খাছে পৌছে কি না সন্দেহ।
যাক, এইসকল হতাশার চেয়ে আরো বড় হতাশার দেশ হইতে পারত বাংলাদেশ। মুক্তিযোদ্ধাদের লাখো সালাম, যে তাঁরা সেই শোষন থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।
দেশ মাতৃকার প্রতি এই ভালবাসা মুক্তিযোদ্ধাদের ছিল, আজও আছে। কিন্তু আমাদের এই জেনারেশনের কেন নেই?
এখানে আওয়ামীলীগ সরকারের সীমাহীন দুর্নিতি (আগের সরকারের চেয়ে ধারণাতীত বেশি), চাকুরেদের লোভ, প্রশ্নফাঁস ইত্যাদির কারনে আমরা এগুতে পারছি না।
বংগবন্ধুর রেখে যাওয়া দল এর এই অবস্থা যদ তিনি দেখতে পারতেন তবে হয়ত বলতেন, এই তো চাটার দল না, রাক্ষসের দল, আমি কি এই রাক্ষসের দল চেয়েছিলাম?
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



