এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি হইয়াছে আবেগ থেকে, সৃষ্টি হয়েছিল বেগ'এর। সেই বেগ এখনো চলমান। মহাবিশ্বের প্রতিটি গালাক্সি একে অপর থেকে প্রচন্ড বেগে দুরে চলে যাইতেছে। এই গতির কারণেই সৃষ্টি হয় ফিজিক্সের সুত্রাবলী। আরো ভেতরে চলে কেমিস্ট্রির কারসাজি। চলে কোথাও কোথাও লাইফ সেল'র কারসাজি। এইসবের কারণ হইতেছে মহাবিশ্বের শুরু হইয়াছে এক মহা পরাক্রমশালী সত্বার ইচ্ছায়। অদৃশ্য সব সুতোয় তিনি এই মহাবিশ্বের প্রতিটি অনু পরমাণুর খবর রাখেন, পরিচালনা করেন তিনি। তাঁর ইশারায় তারার পতন ঘটে আবার জন্মও হয়। মৃতকে তিনি জীবিত করেন, জীবিতকে সঠিক সময়ে মৃত্যু দেন।
তিনি আমাদের আকল (কমন সেন্স দান করেছেন), এখানেই উনার দ্বায়িত্ব শেষ হইবার কথা কিন্তু তিনি আরো গাইড লাইন দিয়েছেন। এই আকল দিয়েই চিনে নিতে হবে ইশ্বর আছেন কি-না। ইশ্বরের চাওয়া আসলে কি? তিনি আমাদের কমন সেন্সের বাইরে যে জ্ঞান দিয়েছেন তাহা উনার জ্ঞানের সমুদ্র থেকে এক বিন্দু শিশির মাত্র। এই জ্ঞান দিয়ে আসলে ইশ্বরের সৃষ্টিজগত সম্পর্কে কনফিডেন্স সহকারে কোন কিছু বলা যায় না। তাই আমাদের যে জাগতিক জ্ঞান কিংবা লজিক, উহা দিয়ে ইশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করা অসম্ভব। তবে খুবই সম্ভব আকল থেকে উনাকে বুঝতে পারা, উনাকে জানা সম্ভব। এরাই আসলে প্রকৃত পক্ষে সফল, যারা ইশ্বরকে চিনতে পেরেছে। এদের লক্ষণ হইতেছে এই যে, ইনারা শান্ত প্রকৃতির হন, অশান্তির পথে হাঁটেন না, মিথ্যা কথা বলেন না, সর্বদা ইশ্বরের প্রশংসা করে বেড়ান। তাদের কাছে আপনি লজিক খুজলে এঁরা হাসবেন।
সারকথা হইল লজিক মানুষের জন্য একটা টুল(!)। বিজ্ঞান বলেন যুক্তিশাস্ত্র বলেন কিংবা সাহিত্য প্রত্যেকটি গ্রন্থই হইতেছে মানুষের চিন্তার জন্য একেকটি উপায়/টুল। যেকোন একটা দিয়ে সারা মানব জগত ব্যখা করতে গেলেই সমস্যা। লজিক এর কাজ হইতেছে গণনা কিংবা সমস্যার সমাধানের পন্থা খুঁজে বের করা তবে অবশ্যই ইহ-জাগতিক পর্যায়ের। জাগতিক ঘটনার বাইরের কিছু ব্যাখা করার সাধ্য আসলে মানুষের নাই কারণ মানুষ এই মহা বিশ্বের তুলনায় অতি নগণ্য। অতএব ধর্ম/আধ্যাত্মিক ব্যাপারে জাগতিক জ্ঞানের প্রয়োগ মোটামুটি বলদামির পর্যায়ে পড়ে। আধ্যাত্মিক জ্ঞান মানুষ থেকে মানুষে ট্রান্সফার হওয়া খুবই কঠিন। তবে উন্মুক্ত মন নিয়ে যদি কেহ কোন আধ্যাত্মিক শিক্ষিত ব্যক্তির সহিত অনেক দিন থাকেন তবেই ইহা ধীরে ধীরে ট্রান্সফার হইয়া যাইতে পারে(সীমিত)।
যার যার আধ্যাত্মিক শক্তি/জ্ঞান অর্জন করিতে হইবে স্বেচ্ছায় সাধনায়, মেডিটিয়েশন/নামাজের মাধ্যমে। তবেই না মানুষ জন্তু থেকে ইনসান এর পর্যায়ে সিদ্দি লাভ করিতে সক্ষম হইবে। সে যদি শুধু জাগতিক লজিক লজিক করে, কস্মিনকালেও সে ইনসান তথা মানুষ স্তরে উপনীত হইতে পারিবে না। (দেখতে তো সকলেই মানুষ, কর্মে কয় জনা?)
তাই আমার আহবান থাকবে, পরম শক্তিশালী সত্বার প্রতি অভিমুখি হয়ে তার শক্তির, জ্ঞানের কাছে আত্মসামর্পন করা। এটাই বুদ্ধিমানের কাজ। মানুষ হইতে পারা এখানেই নিহিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৪:০০