যুগে যুগে বঙ্গদেশে প্রেমের নামের ধরন পাল্টিয়েছে। কোন এককালের লাইন করা, খাতির করা,পিরিত করা, পেম করা,বাইরাইয়া যাওয়া থেকে আজকের তথাকথিত প্রেম। কিন্তু শুধু যে প্রেমের নামই পাল্টাইছে সেটা কিন্তু নয়। প্রেমের ধরনও পাল্টাইছে। তবে তা এমন পাল্টান পাল্টাইছে যে প্রেম আর এখন, প্রেম আদৌ আছে কিনা তা জগদীশ্বরই একমাত্র বলতে পারবেন।
আধুনিকতার নামে প্রেম নিয়ে এখন চারদিকে যা চলছে তাকে সম্ভবত এভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় প্রেম হচ্ছে- “No emotion, No love, Only sex”
চারপাশে বন্ধুদের দেখি সকাল বিকাল প্রেমিকা পাল্টাতে। আজ সারা রাত হয়ত একজনের সাথে চ্যাট করে সময় কাটাল, কাল আবার আরেকজনের সাথে বোটানিক্যাল গার্ডেনের কোন এক কোনায় সময় কাটাল। পরশু হয়ত সারাদিন সারারাত আরেকজনের সাথে ফোনে সময় কাটাল। তারপর দিন হয়ত আরেকজন কে নিয়ে কে এফ সি আড্ডা দিল। এখন যার যত বান্ধবী, সে তত বেশি স্মার্ট।
একসময় লেখকরা কিংবা শিল্পীরা কোন একজন প্রেয়সী কিংবা প্রিয়জনের প্রেমে পড়তেন। তাদের লেখার কেন্দ্রে থাকতেন ওই একজন। কিন্তু এখন চারপাশে আধুনিককালের লেখকদের দেখি শামসুল হকের ‘খেলারাম খেলে যা’ অপন্যাস এর বাবরের ন্যায়। তেনারা সকাল বিকাল তেনাদের খেলার পার্টনার পাল্টান। আর মনে করেন বহুগামিতাই হচ্ছে লেখার এবং অবশ্যই জীবনের মূলমন্ত্র। তাই তাদের বিকৃত যৌনাচার থেকে নাবালক শিশু থেকে সত্তর বছর বয়স্করাও বাদ যান না।
মানুষের কথা না হয় বাদই দিলাম।একটা সময় ছিল লেখকরা মাছের,গাছের,পাখির, মাটির প্রেমে পরতেন।আর এখন লেখকরা গাছের সাথে, মাছের সাথে, মাটির সাথে, পানির সাথে অবিরাম সঙ্গমে মেতে ওঠেন। কারন তাদের কাছে প্রেম মানে হচ্ছে দেহ আর দেহ মানে প্রেম।
গ্রাম্য কিছু মোল্লারা যেমন ষাট বছর বয়সে ভীমরতি আসলে রক্ষণাবেক্ষণের নামে ছোট ছোট দরিদ্র মেয়েদের তাদের শিকারে পরিনত করে তেমনি সাহিত্য সৃষ্টির নামে এই সকল চটি সাহিত্যিকরা অবিরাম প্রেমের নামে তাদের খেলা চালিয়ে যান।
প্রেম। বড়ই আকাল প্রেমের। প্রেমহীন মানুষ, প্রেমহীন জাতি কি করে আগাবে সামনে? প্রেমহীন ভালবাসা যেমন সুখের সংসার ভেঙ্গে দেয়, তেমনি প্রেমহীন জাতির ধ্বংস অনিবার্য।
এখন আর বাইরে বৃষ্টি হলে প্রেমিকার কথা মনে পরে না,এখন আর আকাশে জ্যোৎস্না দেখলে প্রেমিকার অভাব অনুভূত হয় না, এখন আর সাগরের জলে নামার সময় প্রেমিকার হাত ধরতে মন চায় না, এখন আর প্রেমিকার খোঁপায় কদম জড়িয়ে দেয়ার প্রশ্ন আসে না, এখন আর জল ভরা মাঠে প্রেমিকাকে নিয়ে নাচার ভাবনা মাথায় আসে না, এখন আর প্রেমিকাকে প্রেমিকা ভাবতে মন না।
এখন প্রেমিকাকে মনে পরে ঘুমাতে গেলে কিংবা বিছানায় গেলে ...... মনে হয় মেয়ে মানুষেরা খাদ্য। এবং অবশ্যই আমিষ .........
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০০