somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রকৃতির মাঝে মানবসত্ত্বা

৩১ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকাল কখনও কাক ডাকা শুভ্রতা নির্মল বাতাসে ভরপুর। চোখ বুঝে বুখ ভরে নিঃশ্বাস নেয়ার মত একটা সময় সকাল। হঠাৎ কে যেন ডেকে যায় দূরে টেনে নিতে চায় হাতছানি দিয়ে। দূর হতে চেতনা ভাঙা নবসুর এসে কানে লাগে। মিষ্টি কণ্ঠে সুমধুর গান এসে ভীর জমায় পাখিদের গলায়। গাছে গাছে গুল্ম লতাপাতার নাচন মনকে আন্দোলিত করে। সবুজ ঘাস আর মাটির সঙ্গে রক্ত মাংসে গড়া জ্ঞান সঞ্চারনে মানব চরণের একাত্মতা দেহমনে শিহরণ জাগায়। প্রাণে প্রাণে স্ফুরন হয় সজীবতার। উর্দ্ধমুখী হলে তাকিয়ে থাকে অসীম নীল আকাশ। কোথায় তার সীমানা কারও জানা নেই। সব জানা থেকে সব চেনা থেকে হিংসা থেকে পরশ্রীকাতরতা থেকে মুক্ত থাকার ক্ষণিকের সময় এই তো সকাল। এখানেই সংস্কারমুক্ত চিন্তায় উদ্বেলিত হয় মহৎ প্রাণ। বিস্তীর্ণকায় আকাশ, সবুজ অরণ্য আর নির্মল বাতাস শিক্ষাগুরু হয়ে দীক্ষা দেয় আমাদের। এখানে ব্যস্ত কাক প্রত্যাহিক দিনের ন্যায় জীবিকার সন্ধানে পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখতে।
সকালটা সুন্দর হয় ফুটফুটে শিশুর মত, কি পরিত্রতা তার ফুটে ওঠায়। গোলাপ; হাসনাহেনা; কামিনী আর দোলনচাঁপার ঘ্রান বিমোহিত করে। রাতের অন্ধকার ভেদকরে ওরা বেরিয়ে আসে, শুধু সকালের প্রতীক্ষায়......
কখনও জ্যোৎনার আলোর পায়, কখনও না হয় আমাবস্যা। তবুও সেতার লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর, সেই অন্ধকার তিমির রাত্রি যতই বিধে ফেলুক কাটা হয়ে, সে নিরাশ হয়না। পূর্নিমার আলোতে কিংবা অন্ধকারে শিশের নিস্তব্দতা টুপটাপ শব্দে ঠিকই ঝরে পড়ে, তখন কেঁপে ওঠে কিন্তু হু হু করে ওঠেনা। তবু সে পাপড়ি মেলে চায়; সমস্ত প্রতিকূলতা জয় করে শুধু সকালের প্রত্যাশায়।
শিশু মায়ের গর্ভে আসে ভ্রুন আকারে। মাতৃগর্ভে মানব শিশুর রূপ নিতে দীর্ঘদিন, দীর্ঘ সপ্তাহ, দীর্ঘ মাস অপেক্ষা করে। তার মায়ের নিবিড় আত্মত্যাগ তাকে পৃথিবীতে আসতে সাহায্য করে। প্রতিটি মানুষ এভাবেই তো ধরণীর মুখ দেখে। মা প্রতীক্ষায় থাকে প্রতিটি মূহুর্ত। স্বপ্ন দেখে অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে। শিশু মাতৃগর্ভের সুখময় আঁধার পেরিয়ে পৃথিবীর প্রত্যাশিত আলোয়ে স্থান করে নেয়ার জন্য বেড়ে উঠতে থাকে ধীরে ধীরে। মায়ের মনে ভেসে আসে অস্পৃশ্য আধোমুখ। মা সকল যন্ত্রণা ভুলে গিয়ে তাকে জড়িয়ে নেয় আত্মার নিগুঢ় বন্ধনে। নারীর টান তার চিরকাল সন্তানের জন্য স্থায়ী হয়ে যায়।
শিশুতো ফুলের মত। কুড়ি মঞ্জুর থেকে বেরিয়ে আসে। পেরিয়ে আসে রাত্রির অন্ধকার। ভ্রুন থেকে নবজাতক শিশু শৈশব, কৈশর পেরিয়ে তারুণ্যে জ্বলে ওঠে যৌবন ছুঁয়ে যায়। ধীরে ধীরে বয়োপ্রাপ্ত হয়ে ফুলের মত মাটিতে মিশে যায়। সমাধি হয় মৃত্যুর মধ্যদিয়ে। এখানেই শেষ নয় এরই মাঝে সে বেঁচে রবে কর্মের দ্বারা প্রত্যাহিক জীবন ধারায়। ফুল রোদ, বৃষ্টি, ঝড় পেরিয়ে কামিনী, হাসনাহেনা, ছোলনচাঁপা, রজনীগন্ধা হয়ে বেঁচে থাকে আমাদের অন্তরে। সমস্ত প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে অন্ধকার ভেদ করে ফুটে থাকে তার সুবাস ছড়িয়ে আমাদের আনন্দদানের প্রত্যাশায়। সে ফুল যতই শুকিয়ে ঝরে পড়ে যাক সে কখনও অসলিন হয় না।
সবুজ ঘাস সীমাহীন ধৈর্য্য নিয়ে দাড়িয়ে থাকে রাস্তার দুধারে ধূ-ধূ করা মাঠের পরে। পায়ের নিচে তার আবেশটুকু বুলিয়ে দেবার জন্য। যে আবেশের মাঝে তার ছোট প্রাণের অমরত্ব লুকিয়ে আছে। তেমনি মেঘ বেঁচে থাকে তার জলধারায়। পৃথিবীকে দাহনমুক্ত করে পবর্তশৃঙ্গ তার ভিতরে অগ্লিলাভাবে আগলে রাখে।
তবে কেন মানুষ পারবেনা একটুখানি ধৈর্য্য একটিখানি ত্যাগ। একটুখানি শৃঙ্খলা মেনে চলতে। সবুজ ঘাস ও ফুলের মত আমাদের রয়েছে কিছু না কিছু করার। তা খুজে নেয়ার মাঝে আমাদের দায়বদ্ধতা লুকায়িত। আমাদের সংগ্রাম থেমে যাবার নয়।
আমি, সে অথবা তারা সবার অন্তরালে অন্তঃরীক্ষে শুধুই মানুষ। মানুষের বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার মাঝে মানুষের স্বার্থকতা। ‘আশা’ চিরন্তন সজীব প্রাণবন্ত সকালের মত। সফলতার দৃঢ় প্রত্যয় জাগরিত হয় মানবতার জয়ধ্বনিতে...
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×