বিকল্প উপায়ে ফেসবুক ব্যবহার প্রসঙ্গে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম গত কদিন যাবত বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন, যেগুলো আলোচনার দাবি রাখে। তিনি যা বলেছেন, তার সার হচ্ছে: বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহার আইনত অবৈধ; যারা এভাবে ফেসবুক ব্যবহার করছে, তাদেরকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে এবং কাউকে কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো:
১। সরকার কি জনসাধারণের ওপর এই মর্মে কোনো আইন জারি করেছে যে, ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে না বা করলে 'ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে' মর্মে গ্রেপ্তার ও দণ্ডের শিকার হতে হবে? এই প্রশ্ন এই কারণে উঠছে যে, কেবল ফেসবুক ব্লক করার মধ্য দিয়েই এটি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আরোপিত হয় না, এর জন্য পৃথক আইন জারি করতে হয়।
সুতরাং, ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ হলে সেটি স্পষ্ট করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে জনসাধারণকে জানানো দরকার। কেবল মন্ত্রীর মুখের কথা এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।
২। সরকার যদি ফেসবুক 'ব্যবহারের' ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং এটিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দেয়, সেক্ষেত্রে আরো একটা ঝামেলা অবধারিতভাবে তৈরি হবে। বাংলাদেশের যেসব নাগরিক দেশের বাইরে বসবাস করছেন, তারাও এই ফৌজদারি আইনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। কারণ দণ্ডবিধির ৩ ও ৪ ধারা অনুসারে, বাংলাদেশের আইনে যে কাজকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত হলেও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং আইন মনে করবে যে অপরাধটি বাংলাদেশেই সংঘটিত হয়েছে।
অর্থাৎ এই নীতি অনুসারে, বাংলাদেশের বাইরে বসবাসরত প্রবাসীরাও ফেসবুক ব্যবহারের দায়ে অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন এবং যেহেতু ফৌজদারি অপরাধ কখনোই তামাদি হয় না, সুতরাং ভবিষ্যতে যেকোনো দিন এই অপরাধের দায়ে তাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে।
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কি বিষয়টা এই জায়গা থেকে ভেবে দেখেছেন?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৬