কুরআনঃ “ওয়া ইয়াখিররূণা লিল আযক্বানি ইয়াবকূনা ওয়া ইয়াযীদুহু খুশুআন”। অর্থাৎ আর যারা কাঁদতে কাঁদতে মুখ যুবরে পড়ে যায় এবং তাদের ভয় ও নম্রভাবকে আরো বাড়িয়ে দেয় (সূরা বণী ইসরাঈলঃ ১১০ আয়াত)।
হাদীসঃ হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন একবার হযরত নবী করীম (সাঃ) এমন এক ভাষণ দিলেন, যে ধরনের ভাষণ আমি আর কখনো শুনিনি। তিনি (সাঃ) বলেন আমি যা জানি, তোমরা যদি তা জানতে পারতে তাহলে হাসতে খুবই কম কিন্তু কাঁদতে খুব বেশী। বর্ণনাকারী বলেন এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর সাহাবীগণ কাপড়ে, মুখ ঢাকলেন এবং ডুকরে কাঁদতে লাগলেন । (বোখারী),
ব্যাখ্যাঃ আল্লাহ্ তা’লা মানবজাতিকে তাঁর আবদ হবার জন্য সৃষ্টি করেছেন। খুবই অল্প সংখ্যক লোক আছে যারা সর্বদা আল্লাহ্র অসন্তুষ্টির ভয়ে ভীত থাকেন। পবিত্র কুরআন পাঠে জানা যায় যারা আল্লাহ্র অবাধ্যতা করে ও পাপে লিপ্ত থাকে তাদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি নির্ধারিত আছে। মানুষের আত্মা দুর্বল। তাই সে সর্বদা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। সে ভবিষ্যৎ এর ব্যাপারে জানে না, তাই সে তার ইচ্ছানুযায়ী আচরণ করে থাকে। তবে যারা আল্লাহ্কে মানে, তাঁর সন্তুষ্টি, অসন্তুষ্টি সম্বন্ধে জানে তারা সর্বদা খোদার ভয়ে ভীত থাকে। বিগলিত চিত্তে দোয়া ও কান্না কাটির মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি চায়, তাঁর রহমত চায়।
কান্নাকাটি মানুষের হৃদয়কে নম্র করে, বিনয় সৃষ্টি করে। তাই পবিত্র কুরআন মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছে, মু’মিন খোদার দরবারে কান্নাকাটি করে তার শাস্তি হতে বাঁচার কামনা করে। এর ফলশ্রুতিতে মহান খোদা তা’লা তাদের হৃদয়কে নম্র করে দেন এবং তাঁর অসন্তুষ্টির ভাবকে আরো বাড়িয়ে দেন।
হযরত নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, মানুষ এ পৃথিবীতে হেলায় অনেক সময় নষ্ট করে। পৃথিবীর ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে আল্লাহ্ তা’লা থেকে বিমূখ থাকে। মানুষ যদি জানতে পারতো এর বিনিময়ে পরকালে তাদের জন্য কী অবধারিত আছে তবে তারা খোদা হতে বিমূখ হতো না বরং খোদার শাস্তি হতে বাঁচার জন্য কান্না কাটি করত।
আমাদের সকলের উচিৎ মালিকি ইয়াওমিদ্দীনকে স্বরণ করি আর সেই দিনের বিচার হতে বেঁচে যাবার জন্য খোদার দরবারে কান্না কাটি করি।
আল্লাহ্ তা’লা আমাদের সকলকে এর তৌফিক দান করুন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০৭