somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধু বকুল তোমার কথা বলছি

১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শত বছর আগে কোন বৃক্ষ প্রেমিকের হাত হতে বন্ধু বকুলগাছের গাংনী থানা চত্বরে জন্ম। জন্মের কয়েক বছর পরেই আমার সাথে তার পরিচয়। প্রথম দিকে চলার পথে মাঝে মাঝে বকুলের সাথে আমার দু’ একবার দেখা হত কি হত না। তবে বকুল যৌবনাবতি হবার পর সব সময় আমি তার কাছেই ছিলাম । এমন কি আহার নিদ্রাও হত আমার বকুলের সাথে। বড় শাসন বারনের মধ্যে আমাকে সে রাখতে চাইত। তারপরও কখনও পাশের বাড়ীর পেয়ারা খাওয়ার লোভ ছাড়তে পারিনি। কতনা বকা খেয়েছি বকুলের। আমি আর বকুল দু’জনেই অল্প দিনেই খুব ঘনিষ্ট বন্ধু হয়েছিলাম। তার অনেক অজানা কথা ও স্মৃতি রয়েছে আমার হৃদয়পটে। বার্ধক্য জনিত কারনে আমার বন্ধু বকুল মারা গেলেও আমি এখনও অক্কা পায়নি। বয়োভারে বৃদ্ধ তাই অনেক কিছুই হয়তো মনে নেই। তারপরও বকুলের কষ্টের কথাগুলো আমার মাঝে মাঝে খুব মনে পড়ে। আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কেননা আমি আপনাদের মতো সৃষ্টির সেরা জীব নই । তারপরও আমি বলব পেয়ারা চুরি করে খাওয়া ছাড়া অনেকটায় আমি ভালো । তোমাদের মতো আমি এত অকতৃজ্ঞ নই। রাজনীতির আদর্শহীন নেতাদের মতো আমি মঞ্চে দাঁড়িয়ে মিথ্যা বলিনা। স্বার্থের জন্য নিরীহদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি আমাদের কেউ করেনা।
যাক বিগত দিনের স্মৃতি রোমন্থন করতে হবে তাই আর বেশী কথা বলতে চাইনা, কেননা আমি বন্ধু বকুলকে কথা দিয়েছি সে মারা যাবার পর তার কিছু কথা আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন বকুলের সাথে আমার কি সম্পর্ক । আরে বাবা সম্পর্ক হবে না? আমি তার উপর বসে আহার করেছি দিন রাত কাটিয়েছি। বকুল যখন যৌবনে পা দিয়েছে হাত,পা গুলো শক্ত হয়ে উঠতে শুরু করেছে তখন পুলিশ বাবুরা আসামী ধরে এনে বকুলের কাঁধে চড়িয়ে অকথ্য নির্যাতন করত, কত দেখেছি শুনেছি বকুলের কষ্টের কথা। গভীর নিস্তব্ধ রাতে আসামীদের উপর পুলিশের লোমহর্ষক নির্যাতন সইতে না পেরে কেঁদেছি আমি আর বকুল। এই দৃশ্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেখে গেছে বন্ধু। কিন্তু আফসোস যেসব রাজনীতিক ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানীর জন্য আমার বন্ধুর কাঁধে ঝুলিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছে তারা জীবদ্দশায় ক্ষমতা হারিয়ে কোথায় আছে কেমন আছে আমার বন্ধু দেখে গেলনা । অনেক নেতায় ক্ষমতার দাপটে এ শহরটিকে দোযখে পরিণত করেছিলো এখনও করতে চাই। তবে বর্তমানে ওরা ভোল পাল্টিয়েছে। ক্ষমতায় থাকা কালীন সময়ে ওরা বাপ দাদার সম্পদ ভেবে দেশটাকে আমড়ার আটি চোষার মতো চুষে চুষে খেতে চাই। ক্ষমতা হারিয়ে সবাই চিৎপটাং। তবে আমার বন্ধু বকুল গাছটি মারা গিয়ে ভালই করেছে। শত ইচ্ছে থাকলেও নানা অপরাধে অপরাধিদের সাজা দেখতে পেতেন না। কেননা অনেকেই দল পাল্টিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা হয়েছে। আর ফ্যাল ফ্যাল করে দেখতে হয় নির্যাতিতদের।
বর্ণচোরাদের সম্পর্কে বকুল অনেক কথা বলত । বেঁচে থাকতে অনেক দিন আগে একবার সে আমার বলেছিল বন্ধু অনেকে টাকার দরে সম্মান কিনতে চাইবে । নিজেকে সাচ্চা প্রমানের চেষ্টা করবে। আবার কারো কারো সাদা গায়ে কলঙ্কের দাগ লেপে দিয়ে নিজেকে নেতা বনে যাবার চেষ্টা করবে। যারা অসৎ উপায়ে অন্যের নাম ভাঙ্গিয়ে অর্থ উপার্জন করেছে তারা এক সময় অবৈধ্য অর্থ কামাতে ব্যর্থ হয়ে কিছু নেতা -কর্মীদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি করে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করবে। রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে। ভোট যুদ্ধে অংশ নেয়ার আগে নেতারা নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও জয়লাভ করার পর আর কেউ মনে রাখবে না। এটা বলতে চাইনি তারপরও বর্তমান সময়ের কথা ভেবে বলতে হলো। আজ আমার বন্ধু বকুল নেই কিন্তু তার কথাগুলো এখনো আমার কানের কাছে খুব উচ্চস্বরে বাজে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:০৭




মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…
১. প্রথমে বলেছেন মৃতদের পেটে কাটাছেড়ার ডাহা মিথ্যা। পরে স্বীকার করেছেন দাগ থাকে।
২. আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় না। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×