somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারায়ণগঞ্জে ওরা অপ্রতিরোধ্য

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১১ সালের ২২ জুন নারায়ণগঞ্জের নুর হোসেন নজরুল ইসলাম এই কৃতি পুরুষদের নিয়ে সমকাল পত্রিকার এই রির্পোট করেছি। সাথে এই মহান পুরুষদের ছবিও দিয়ে ছিল। তখন যদি এই সুনামধন্য কৃর্তি মান পুরুষদের বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতো তা হলে আজ নারায়ণগঞ্জে এমন পরিস্থিতি বা অবস্থা হতো না্

সমকাল প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বেশ ক'জন আলোচিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। তাদের মধ্যে অনেকে র‌্যাব-পুলিশের তালিকাভুক্ত। তালিকাভুক্ত না হলেও কেউ তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নজরে রয়েছেন। শিল্প অধ্যুষিত নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের এখনও সন্ত্রাসীদের হাতে চাঁদার টাকা পেঁৗছে দিতে হয়। গার্মেন্টের ঝুট, হাট-বাজারের ইজারা, পরিবহন সেক্টর এবং বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের দরপত্র প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ হয় সন্ত্রাসীদের হাতেই। এসব কাজে জড়িতদের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সাংসদ ও রাজনীতিকদের সমর্থক, অনুসারী পিএস বা দলীয়
ক্যাডার।
এসব সন্ত্রাসীর কারও কারও ভয়ে মুখ খুলতে চান না ভুক্তভোগীরা। সরকারদলীয় এমন অনেক সন্ত্রাসী রয়েছে যাদের ব্যাপারে খোদ সরকারদলীয় নেতৃবৃন্দ থানায় মামলা করলেও পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে বা অনেক ক্ষেত্রে মামলাই নেয় না। অভিযোগ রয়েছে, নেপথ্যে থেকে এসব সন্ত্রাসীকে স্থানীয় সাংসদ ও প্রভাবশালী রাজনীতিকরা পৃষ্ঠপোষকতা করেন। কিছু সন্ত্রাসীর ব্যাপারে জেলার আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত সাংসদরা উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্যবস্থা নিতে বললেও পুলিশ থাকে নির্বিকার।
শাহ নিজাম : বর্তমান সময়ে নারায়ণগঞ্জের সরকারদলীয় ক্যাডারদের মাথার তাজ। শামীম ওসমানের প্রধান সেনাপতি হিসেবে পরিচিত। বর্তমান সরকারের আমলে তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলসহ শহরের বড় বড় গার্মেন্টের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ। এ ছাড়া এলজিইডির দরপত্র বণ্টনের 'দায়িত্ব' তার ওপর। নিজেকে নিরাপদ রাখতে শাহ নিজাম প্রকাশ্যে আসেন না। তার সব কাজ নিয়ন্ত্রিত হয় মোবাইল ফোনে। ফতুল্লার পঞ্চবটির ঝুট কে পাবেন নিজাম তা ফোনে গার্মেন্ট মালিকদের বলে দেন।
নিজামের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বিগত সরকারের আমলে শামীম ওসমানের 'প্রধান সেনাপতি' গোলাম সারোয়ার বর্তমানে ভারতে সপরিবারে বসবাস করছেন। তার পরের অবস্থানে থাকা নূরুল আমীন মাকসুদ গত ১৮ এপ্রিল অজ্ঞাত আঁততায়ীর হাতে নিহত হন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নেত্রকোনার বিএনপি দলীয় সাংসদ খাদিজা আমিনের চাচাতো ভাই বিপ্লব ও তার সহযোগী আলম র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হন। ওই সময় বিপ্লবের হেফাজত থেকে র‌্যাব একটি অত্যাধুনিক একে-২২ রাইফেল উদ্ধার করেছিল। নারায়ণগঞ্জের আন্ডারওর্য়াল্ডে প্রচার রয়েছে ওই রাইফেলটি ওই সময় বিপ্লবের কাছে বিক্রির জন্য শাহ নিজাম দিয়েছিল। শাহ নিজাম ও তার সহযোগীদের হাতে অনেক অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে বলে জানা গেছে।
ক্যাঙ্গারু পারভেজ : পুরো নাম জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া পারভেজ। নারায়ণগঞ্জে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে যুবলীগের এ ক্যাডার। পুলিশ ও র‌্যাবের মোস্ট ওয়ান্টেড পারভেজ প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহর। ফুটপাতের দোকানি থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সবাই তার টার্গেটে। রাতারাতি প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক বনে গেছেন তিনি। শামীম ওসমানের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে তিনি পরিচিত। পারভেজের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র মতে, এক সময় চাষাঢ়ার মহল্লাভিত্তিক ডিজি গ্রুপের সঙ্গে চলতেন পারভেজ। ৯০ দশকের প্রথম দিকে ওই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে পারভেজ নিজেই এক্সফোর্স নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেন। একাধিক শীর্ষ ক্যাডারের শেল্টারের পর সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের অপর আলোচিত ক্যাডার অগা মিঠুর শেল্টার পান পারভেজ। ২০০১ সালে ফতুল্লার পঞ্চবটিতে সেনাবাহিনীর পোশাক, মুখোশ ও অত্যাধুনিক পিস্তলসহ সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে আলোচনার ঝড় তোলেন ক্যাঙ্গারু পারভেজ। প্রায় এক বছর কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে ভারতে আত্মগোপন করেন তিনি। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকায় ফিরে আসেন পারভেজ।
গত ২ সেপ্টেম্বর সিলভার টেক্সটাইল মিলের পরিচালক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল চৌধুরী বাড়ি বাসস্ট্যান্ডের পাশে তার কেনা ৬০ শতাংশ জমিতে স্পিনিং মিল করার জন্য মাটি ভরাটের কাজ শুরু করলে ক্যাঙ্গারু পারভেজ অর্ধেক জমি লিখে দেওয়ার জন্য সাখাওয়াত হোসেনকে হুমকি দেন। সাখাওয়াত থানায় জিডি করলে ৪ সেপ্টেম্বর ক্যাঙ্গারু পারভেজ তার বাড়িতে হামলা চালায়। একই দিন শহরের খাজা মার্কেটের সামনে পারভেজের আক্রোশের শিকার হয় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট রোমেল। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাইকে ক্যাঙ্গারু পারভেজের নাম ঘোষণা না দেওয়ায় অনুষ্ঠানের উপস্থাপক অ্যাডভোকেট শরিফকে মারধর করা হয়। গত ৫ মাসে অপহরণ, মুক্তিপণ ও আদায়, গার্মেন্টের ঝুট না পেয়ে হামলা, অস্ত্রের মুখে হুমকিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তার হাত থেকে শিক্ষক-চিকিৎসক-আইনজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার গণ্যমান্য মানুষ লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হয়েছেন।
হাজি রিপন : পুরো নাম হাজি বজলুর রহমান রিপন। জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন জেলা জাতীয় শ্রমিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি। হাজি রিপন মূলত ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া শহরের দক্ষিণ অংশে যত গার্মেন্ট রয়েছে সেগুলোর ঝুটও তার সহযোগীদের দখলে। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ নাসিম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তিনি শহরে পরিচিত। হাজি রিপন সন্ত্রাসী ক্যাঙ্গারু পারভেজের মামা শ্বশুর।
নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত হাজী রিপনের কর্মকাণ্ডের বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাকে ট্রাক চাপায় হত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইব্রাহীম চেঙ্গিস : শামীম ওসমানের বন্ধু। পরিবহন সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বন্ধন পরিবহনের এমডি। অথচ তার কোনো বাস নেই। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর চেঙ্গিস বন্ধন পরিবহনের এমডি পদ দখল করেন। তিনি প্রকৃত বাস মালিকদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেক মালিক আয়ের হিসাব এবং যথাযথ টাকা না পেয়ে বাস বিক্রির চিন্তা করছেন।
২০০৯ সালের ২৬ জানুয়ারি রাতে ইব্রাহিম চেঙ্গিস ও তার সহযোগীরা বন্ধন পরিবহনের পরিচালক ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পরিবহন মালিক সমিতির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল্লাহ তপনের ওপর হামলা চালান। হামলার পর তপন সাংবাদিকদের বলেন, তাকে পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে ওই পদ হাতিয়ে নেন ইব্রাহিম চেঙ্গিস।
৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের পরিবহন সেক্টর ছিল চেঙ্গিসের দখলে। ২০০১ সালের নির্বাচনের দিন চেঙ্গিস একটি ভোটকেন্দ্র দখল করতে গিয়ে সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। এরপর তিনি কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে কানাডা পাড়ি জমান। তার স্ত্রী-সন্তানরা এখন সেখানেই বসবাস করে। ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের পর চেঙ্গিস দেশে ফেরেন।
রামু সাহা : জেলার প্রভাবশালী এক রাজনীতিকের ছেলের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত এই রামু সাহা। তিনি মূলত চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করেন। এক সুতা ব্যবসায়ী বলেন, গত জাতীয় নির্বাচনের আগে রামু সাহা চাঁদার ব্যাপারে ওই রাজনীতিকের ছেলের সঙ্গে টানবাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর দফারফা করে দেন। গত রোজার ঈদের আগে নারায়ণগঞ্জের অনেক ব্যবসায়ী চাঁদাবাজদের হাত থেকে রেহাই পেতে ওমরাহ হজে চলে গিয়েছিলেন।
মোক্তার হোসেন : ইব্রাহীম চেঙ্গিসের অন্যতম সহযোগী তিনি। পরিবহন চাঁদাবাজ হিসেবেও পরিচয়। মোক্তারও শামীম ওসমানের বন্ধু। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে চলাচলকারী আনন্দ পরিবহন দখল করেছেন। আনন্দ পরিবহন ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ মিনিবাস ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান হচ্ছেন মোক্তার হোসেন। তাদের অনুমতি ছাড়া নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে চলাচলকারী বিভিন্ন রুটে কোনো বাস প্রবেশ করতে পারে না। কেউ যদি নতুন বাস নামাতে চান তাহলে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে বিভিন্ন পরিবহনের পাঁচ শতাধিক বাস থেকে দৈনিক ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা করে চাঁদা তোলে চেঙ্গিস-মোক্তার বাহিনী। এ ছাড়া শহর থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস থেকে প্রতিদিন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা নেয় তারা। নারায়ণগঞ্জ শ্রমিক কমিটি, মালিক সমিতি, মালিক ঐক্যজোট ও প্রশাসনের ব্যানারে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। জিলানী, সামসুজ্জামান, আইউব আলী, শাহীন, নাছির, লিপু, শাহআলমসহ অনেকে পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন।
মীর সোহেল : এক সময় ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। '৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি শামীম ওসমানের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। হন ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি। ওই আমলে মীর সোহেল ভূমি দস্যুতা, ঝুট সন্ত্রাস আর ফতুল্লার বিভিন্ন শিল্পকারখানায় চাঁদাবাজি করতেন। সম্প্রতি শামীম শিবির থেকে সরে এসে কবরীর পক্ষে যোগ দেন। এরপর কবরীর নাম ভাঙ্গিয়ে শুরু করেন সন্ত্রাস। এ ছাড়া টাকা নিয়ে 'শালিস' করা তার অন্যতম কাজ।
রহমত উল্লাহ : পুরো নাম রহমত উল্লাহ রকমত। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলের পঞ্চবটি বিসিক শিল্প নগরীর একচ্ছত্র ঝুট সন্ত্রাসী। এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে তার রয়েছে বিশাল ক্যাডার বাহিনী। কথিত রয়েছে, শামীম ওসমান এবং কবরীর লোকদেরও রকমত টাকা দেন। বিগত জোট সরকারের বিএনপি ক্যাডার জাকির খান ও বিএনপি দলীয় সাংসদ গিয়াস উদ্দিনকে নিয়মিত চাঁদা দিতেন। তার ক্যাডার বাহিনীর হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্র।
নজরুল ইসলাম : বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগ নেতাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তার বিপরীতে কেউ টেন্ডার জমা দিতে গেলেই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হতে হয়। নিজ দলে তিনি গোঁয়ার হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত এবং এক সময়ে ছাত্রলীগ করার কারণে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবুর আশীর্বাদপুষ্ট।
খুন ডাকাতিসহ ১৫টি মামলা ও ৬টি জিডি রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ২টি মামলা ও ৬টি জিডি হয়েছে। বর্তমানে নজরুল জমিজমা দখল, পাওয়ার হাউজের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও ইপিজেড নিয়ন্ত্রণ করছেন। র‌্যাব-পুলিশের সন্ত্রাসী তালিকায় ৪ নম্বরে অবস্থান। অর্ধশত সন্ত্রাসীর একটি বাহিনীর নিয়ন্ত্রক তিনি।
নূর হোসেন : বর্তমানে নূর হোসেন ও তার বাহিনী পরিবহনে চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িত। শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সিদ্ধিরগঞ্জের এ সন্ত্রাসীর উত্থান বেশ চাঞ্চল্যকর। সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল টেকপাড়া এলাকার নূর হোসেন ট্রাকের হেলপার থেকে ট্রাক ড্রাইভার হয়। ১৯৯২ সালের ১৮ জুন শিমরাইলে ট্রাক শ্রমিকদের একটি সংঘর্ষের ঘটনায় নূর হোসেন নিজে বিপুল পরিমাণ বোমা ফাটিয়ে আলোচনায় আসেন। এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদানের মধ্য দিয়ে তার অবস্থান পাকাপোক্ত হতে থাকে। ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালে আনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। এর আগে অলি আহম্মেদের গাড়িতে বোমা মেরে আলোচনায় আসেন। ৯৮ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। শামীম ওসমানের আস্থাভাজন নূর হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পরিবহন সেক্টর, আন্তঃজেলা ট্রাক টার্মিনাল, সওজর শিমরাইল অফিস তার কাছে জিম্মি।
মতিউর রহমান মতি : মতিউর রহমান মতি র‌্যাব ও পুলিশের তালিকায় ১ নম্বর সন্ত্রাসী। র‌্যাবের সূত্র মতে, মামলার সংখ্যা ৪৩টি। এরমধ্যে ৮টি হত্যা মামলা। ১৯৮৬ সালের প্রথম দিকে আদমজীতে বেগম খালেদা জিয়ার জনসভায় সফরআলী ভুইয়ার নেতৃত্বে মতি ও জজ বাহিনী ককটেল ফাটিয়ে জনসভা পণ্ড করে দেওয়ার মাধ্যেমে মতি আলোচনায় আসেন। এরপর থেকে আদমজীতে যত সংর্ঘষ হয়েছে সফরআলী ভূঁইয়া গ্রুপের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মতি। তার বাহিনী শিমুলপাড়া, আইলপাড়া, এসও রোড, চরশিমুলপাড়া এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তার বাহিনী ইস্টার্ন সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, মুনলাক্স গার্মেন্টস, আইলপাড়ায় নির্মাণাধীন রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ, শীতলক্ষা নদীতে তেল চুরি ও এলাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে।
এদিকে সাংসদ কবরীর পিএস সিরাজুল ইসলাম সেন্টু ও এপিএস শফিকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই কবরী সমর্থিত একটি সিন্ডিকেট ঝুট ব্যবসা দখলে রাখতে বিসিক ও ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলে মহড়া দেয়। ফতুল্লা অঞ্চলে এই সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য ফেন্সি রাসেল। সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে আরও রয়েছেন বাঘা আরিফ, স্বপন মেম্বার, আউয়াল, মোক্তার, খোকন, রাসেল, মোফা, তোফা, বাবু, মাসুদ, ইকবালসহ অনেকে। ভোলাইল এলাকায় রয়েছেন ইসলাম, আলীম, সঞ্জিত। এ ছাড়া ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলে টিপু, টিটো, ইরাকী ফিরোজ, দেলোয়ার হোসেন দেলু, ইয়াসিন, ফরহাদ, মুসলিম, আনোয়ার, আর্মি রয়েল, তুষার, মিঠু, সুমন, রহিমউদ্দিন, জাফর, নাসির, শামীম, মোক্তার ওরফে কাইলা মোক্তার, আকতার, হারুন, জনি, মামুন ওরফে দাড়িওয়ালা মামুন, খোকন ওরফে মোবাইল খোকন, জুয়েল, রনিসহ অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী সক্রিয় রয়েছেন। সন্ত্রাসে জড়িত আছেন কাইল্লা ইসলাম, শহিদ, হালিম, খেলাফত হোসেন রাজু ওরফে ডাকাত খেলাফত, রনি, বিপ্লব, ফুয়াদ, কানা সুমন, ডাকাত ইউসুফ। মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে পাগলা এলাকার আলী হোসেন ও তার বাহিনী।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×