এআই আসলে কি জিনিষ সেটা নিয়ে হ্য়ত সবাই জানি কিন্তু এটার ব্যাবহার যে কত প্রকার হতে পারে তা হয়ত জানি না বা আন্দাজও করতে পারি না। রোবট সোফিয়ার নাম সবাই জেনেছেন এবং অনেকেই হয়ত এটা ভাবা শুরু করেছে যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্ভবত শুধু রোবটিক্স এই কাজে লাগে। অনেকেই অ্যামাজনের অ্যালেক্সা, আইফোনের সিরি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, মাইক্রসফট কর্টানা এসবই আসলে এআই নির্ভর প্রযুক্তি ব্যাবহার করে অনেক উন্নত করা হয়েছে। এআই যে শুধুই উচ্চ প্রযুক্তির পণ্য তৈরীতেই ব্যাবহার হচ্ছে তা না, আজকাল দোকান-পাট বা বলতে পারে সুপারশপ ম্যানেজমেন্ট সল্যুশনগুলোও এআই নির্ভর সমাধান দিচ্ছে তাদের ব্যাবসা বাড়ানোর জন্য।
যেমন ধরুন এআই সাধারণত তথ্য যোগার করে যে কোন কোন পণ্য বেশি চলে, এটা খুব সাধারণ তথ্য। কিন্তু এআই যেটা করে যে এই তথ্য থেকে ক্রেতারা কোন পণ্যের সাথে কোন পণ্য বেশী ক্রয় করে তার একটা প্যাটার্ন তৈরী করে। মানে ক্রেতা ভেদে পণ্যের সাথে পণ্যের যোগাযোগ বা মিল খুঁজে বের করে। এরই একটা কম্বিনেশ হচ্ছে পূরুষ ক্রেতারা যদি স্যানিটারি প্যাড ক্রয় করে তাহলে এর সাথে বড়শি, ছিপ, মাউন্ট ক্লাইম্বিং ইকিউপমেন্ট ও স্লিপিং ব্যাগ বা তাবু ক্রয় করে। আর মহিলারা স্যানিটারি প্যাডের সাথে ম্যাগাজিন বা গল্পের বই কিনে থাকে সাধারণত। এআই এর এই তথ্যের ভিত্তিতে দোকানদার রা তাদের স্যানিটারি প্যাডের র্যাকের এক পাশে ম্যাগাজিন ও বই আর অন্যপাশে বড়শি, ছিপ, মাউন্টক্লাইম্বিং ও অন্যান্য অভিজানের যন্ত্রপাতি রেখে সত্যিকারের সুফল পেতে শুরু করল মানে তাদের বিক্রি বেড়ে গেল। এবং এর পেছনে লজিকটা হল যে সাধারণত এই সময়টাতেই পুরুষরা একাকিত্ব অনুভব করে এবং সঙ্গিনী ছাড়া কোন অভিজানে বের হওয়ার সুযোগ পা্য়। আর তাই প্যাড কেনার সময় ওসব পণ্য চোখের সামনে থাকলে নেশাটা বেড়ে যায় বা লোভ সামলাতে পারে না সুযোগটা কাজে লাগানোর। ঠিক সেরকম মহিলারাও ঐ সময়টায় বাহ্যিক কোন কাজ বা খেলাধুলার চেয়ে ঘরে সময় কাটানোটাই বেশী স্বাচ্ছন্দবোধক মনে করে বিধায় চোখের সামনে বই বা ম্যাগাজিন দেখলে না কিনে থাকতে পারে না। অতএব এআই এর সাহায্যেই এই যোগাযোগটা বের করা সম্ভব হয়েছে।
আবার ধরুন যারা সিগারেট খায় তারা বিয়ার খায় এবং যারা চিপস খায় তারা সফট ড্রিংকস খায় এটাও এআই মাধ্যমেই বের করা সম্ভব হয়েছে। তাই ওয়ালমার্ট বা কটসকোতে সিগারেট এর র্যাক এর পাশে বিয়ার এবং চিপস এর প্যাকেট এর পাশে সফট ড্রিংকস এর র্যাক থাকে। আমাদের দেশের কিছু পণ্যের যোগাযোগ আমরা নিজেরাই বের করতে পারি যেমন সেমাই এর সাথে বাদাম, কিসমিস আর মোরোব্বা এবং পোলার চার এর সাথে আলু বোখারা। অতএব এআই হয়ত আরও অনেক যোগাযোগ বের করে আনবে যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। এখন আসল ব্যাপারটা হচ্ছে আমরা আসলে এআই ব্যাবহার করা শিখে সে অনুযায়ী কাজে লাগানোর সম্ভবনা যাচাই করে দেখা এবং সেই সাথে ব্যাবসায়িক মডেল তৈরী করা। এআই আমাদের সোনেক অনেক নতুন নতুন সম্ভবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে যদি আমরা সেটাকে ভালোভাবে আয়ত্তে এনে কাজে লাগাতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:২০