আওয়ামীলীগের জাতীয় সম্মেলন,খেইল তামাশা ছাড়া আর কি আছে??
২২ও২৩ অক্টোবর জুড়ে ঢাকায় চলে কাউন্সিলর মেলা। এ মেলায় হরেক রকমের কাউন্সিলর আসেন তাদের মত বিক্রি করতে কিন্তু খুবই দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বলতে হচ্ছে তাদের মত কেউই কিনেনি বরং একজনেরই ছিল সকল আধিপত্য।সভাপতি, সেক্রেটারি , যুগ্ম সাধারন সম্পাদকগন সবকিছু আগে থেকেই ঠিক ছিল তাহলে এই বিশাল আয়োজনে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির কি দরকার ছিল??
সভাপতি, এ পদটা দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ একজনের হাতেই বহাল আছে। কেন! সে প্রশ্ন তোলার সক্ষমতা আমার নাই কারণ বড়র সমালোচনা করতে নাকি বড় হতে হয়। তারপরও আমজনতা হিসেবে মতটাতো প্রকাশের ক্ষমতা রাখি। উনি গত ৩৫ বছর যাবৎ সেই ১৯৮১ থেকে দলের সভাপতির পদে আছেন, আমার এতে কোন মাথা ব্যথা নেই কারণ একমাত্র উনাকেই যোগ্য ধরা হয় তাই বারবার উনাকেই চালকের আসনে বসানো হয়। উনি বারবার মুখে বললেও কাজে তার কতটা করেছেন তা জানা নেই। উনার মুখে বিশেষ করে বিশতম কাউন্সিলের আগে বেশ বলতে শুনেছি, "আমাকে অবসর দিন, নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলুন "।আওয়ামীলীগ ১৯৪৯ সালের ২৩ শে জুন যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্তসম্মেলন হয়েছে বিশটি তার দিকে চোখ বুলালে দেখা যায় একজনের একপদে থাকার ইতিহাস খুব গভীরের।সংগঠনের ইতিহাস ৬৭ বছরের হলেও সভাপতির পদে হিসেব পাওয়া যায় মাত্র পাচজনের অর্থাৎ একই পদে বিভিন্ন পদে বহাল থাকার ইতিহাসও কুব গভীর। প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মাওনালা হামীদ খান ভাসানী থেকে শুরু করে শেখ হাসিনা পর্যন্ত সকলেরই অন্তত দুই মেয়াদের সভাপতি থাকার অভিঙ্গতা রয়েছে। এই কাউন্সিলে আওয়ামীলীগের উপস্হিত কাউন্সিলররা একটা কথা বারবার বলেছেন যে, "শেখ হাসিনার বিকল্প এখনও তৈরী হয়নি, তাই তাকেই আবারও দায়িত্ব নিতে হবে "। প্রশ্ন তোলার মত ব্যাপার ৬৭ বছরের ইতিহাসে মাত্র পাচজন যোগ্য লোক আপনারা পেয়েছেন মাত্র??? আওয়ামীলীগে শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু, ভাসানী এদের মত নেতৃত্ব কেন গড়ে উঠে না নাকি উঠতে দেয়া হচ্ছেনা!!
সাধারন সম্পাদকঃখুব বক বক করলাম একজন নেতৃত্বশীল নেত্রীর পদ নিয়ে। এবার তার পরের পদ সাধারন সম্পাদক পদ নিয়ে বলতে গেলেও ঠিক একই প্রশ্ন আসবে। এ যাবৎ কাল পর্যন্ত সাধারন সম্পাদক হওয়ার মত যোগ্য নেতা পেয়েছে মাত্র ০৮ জন। বুঝাই যাচ্ছে এ পদের যোগ্য লোক তৈরী হচ্ছে না। আমাদের সমাজে একটা খুব প্রচলিত কথা আছে, "পুরাতন গেলে নতুন আসে "। আমার মনে হচ্ছে দেশের সর্বপ্রাচীন দল তা মানতে নারাজ তারা মুখেই বলে শুধু নতুন নেতৃত্ব গড়ার কথা কাজে যদি তা না দেখায় তবে কিভাবে হবে??তর্কের খাতিরে মেনেই নিলাম সভাপতির পদ একটা দলের জন্য মা বা বাবা সরূপ কিন্তু সাধারন সম্পাদক পদটাতো পরিবর্তন করা যায়!
প্রার্থী যাচাইঃ প্রত্যেক নির্বাচনের জন্যই নির্বাচন কমিশন থাকে, আওয়ামীলীগের কাউন্সিলেও ছিল। তাদেরকে করার উদ্দ্যেশ্য কি তা আমি জানিনা তবে তাদের ভুমিকা হতাশার। একটা কাউন্সিলের মুল লক্ষ্য হচ্ছে সুনির্দিষ্ট নেতৃত্ব যাচাই বাছাই করা কিন্তু আওয়ামীলের এই কাউন্সিলে আমরা তার কিছুই দেখিনি। একটা কাউন্সিল যেখানে কাউন্সিলরদের কথায় নেতা নির্বাচিত হওয়ার কথা অথচ এখানে কাউন্সিলরা নিরব ভুমিকা পালন করেই ক্ষ্যান্ত ছিলেন। সভাপতির পদে নির্বাচন সেটাতে কথা বলা হারাম। কারণ এ পদে একজনই যোগ্য। এবার সাধারন সম্পাদক, নির্বাচন কমিশন জানতে চাইল প্রস্তাবনা কিন্তু কেউ নাই উত্তর দেয়ার। সেই আশরাফ, যে বলেছিল, "শুধু প্রধানমন্তী আর আমি জানি কি চমক থাকবে ", প্রস্তাব করলেন একটা নাম আর ঐ নামই সর্বসম্মতিকক্রমে গৃহীত হয়েছে। যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের পদ চারটি যার তিনটিতেই আগের নেতৃত্ব। নতুন এসেছে আব্দুর রহমান।তাতেও কাউন্সিলরদের ভুমিকা চুপচাপ, শুনশান নিরবতা! প্রেসেডিয়াম সদস্য ২০জন তার মধ্যে ১৪ জনই আগের নেতৃত্ব নতুন যারা হয়েছেন তারাই বিনা ভোটে!!
তবে এ সম্মেলন কেন? প্রধানমন্ত্রী চাইলে ডিজিটাল কাউন্সিলও করতে পারতেন তাতে বরং সবাই সমান আনন্দ পেত। কাউন্সিলরা সারাদেশ থেকে ছুটে এসেছেন লক্ষ্য কিছিল জানিনা তবে মনে হয় মায়ের একনজর দেখা পেয়েই তারা প্রশান্তি পেয়েছে!!
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৫