somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য বেশী লেখা থাকতো তাহলোঃ

১। বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না।
২। আজ নগদ কাল বাকি।
৩। নগদ বিক্রি পেটে ভাত, বাকি বিক্রি মাথায় হাত।


বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না। অর্থাৎ ক্রেতা যদি কোন কিছু কিনে সাথে সাথে দাম না দিয়ে পরে দেবার কথা বলে চলে আসতে চায় তাহলে দোকানী খুব লজ্জা পাবে। বাংলাদেশে লজ্জা তো কেবল নারীর ভূষণ। কিন্তু দোকানপাটের কথা ভিন্ন।

এই লজ্জা কিন্তু দোকানদারের পাওয়া উচিত না। পাওয়া উচিত যে বাকিতে কিনবে তার। এখানে দোষটা ক্রেতার। তার যদি নগদ টাকা সাথে না থাকে তাহলে তার দোকানে যাওয়াই উচিত হয়নি। আপনি যদি ১০০ টাকার জিনিস কিনতে দোকানে যান অবশ্যই পকেটে করে নগদ ১০০ টাকা নিয়ে যাবেন এবং এটাই উচিত এবং এটাই ভদ্রতা। আপনি বাকিতে দোকানের পণ্য কিনে আনবেন। পরে সময় মতো দোকানীকে টাকা পরিশোধ করবেন না। এমন কি পরের বার আরো ১০০ টাকার জিনিস বাকিতে কিনে মোট পাওনা ২০০ টাকা করে ছাড়বেন। এর ফলে যেট হবে তা হলো আপনার সম্পর্কে দোকানীর ধারনা বদলে যাবে। আপনাকে সে মোটেই ভালো লোক মনে করবে না। অনেকেই আছে দোকানে বাকির খাতা খোলে। বাকির খাতা ২ প্রকার। একটা হচ্ছে সাধারণ বাকির খাতা। যেটা পহেলা বৈশাখে হালখাতার সময় অনেকেই পরিশোধ করে। কিন্তু চিরবাকির খাতায় যে হিসাব রাখা হয় তা কেয়ামতের আগের দিনও পরিশোধ করার কথা চিন্তা করে না।

আজ নগদ কাল বাকি।
এই কথার মাধ্যমে দোকানদার বুঝাতে চাইছেন যে তিনি বাকি দিতে রাজি আছেন । তবে আজ নগদে কিনুন, কাল না হয় বাকিতে কিনবেন। ক্রেতা পরের দিন বাকিতে কিনতে এসে আবার পড়বেঃ আজ নগদ কাল বাকি। ফলে তার আর বাকিতে কেনা হবে না। দোকানদারের এই কৌশল বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই কাজে লাগে না। কেননা, বাকি চাহিলে দোকানী লজ্জা পেলেও অনেক ক্রেতাই বাকিতে কিনিয়া লজ্জা পায় না। অনেক ক্ষেতেই বাকিতে কেনাটাকে তার ক্রেডিট মনে করে থাকে। এই ধারা চলে অবিরত।

নগদ বিক্রি পেটে ভাত, বাকি বিক্রি মাথায় হাত।

নগদে জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারলে দোকানীর ব্যবসা সচল থাকে। লাভের পরিমাণ ভালো হয়। ফলে দোকানী খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারেন। আর বাকি দিলে আর সমূহ সর্বনাশ হয়। ফলে তার দোকানে লাল বাতি জ্বলে। অথচ অনেক ক্রেতাই এটা বুঝতে চান না।
আমার বন্ধু হরেকৃষ্ণ সরকার-এর একটা ওষুধের দোকান আছে জয়পাড়ার হাসপাতাল রোডে পোস্ট অফিসের ঠিক উল্টো দিকে। দোকানের নাম তিশা ফার্মেসী। বেশ কয়েক বছর আগে এটার নাম ছিল শিরিন ফার্মেসী। তখন কৃষ্ণ ২৪ ঘন্টা সার্ভিস দিত। ফলে সারারাত তার দোকানে মানুষ আসতো সেবা নিতে। দোহার উপজেলা হাসপাতালে অনেক রাতে হাসপাতালে যে সব সিজারিয়ান হতো তাদের ওষুধ কৃষ্ণর দোকানে নিতে আসতো। দোকানের সাটার নামানো থাকতো। কিন্তু ভিতরে কৃষ্ণ আছে এটা সবাই জানতো। এই সব সিজারিয়ান সামগ্রীর প্যাকেজও তারা বাকিতে নিত। রোগী রিলিজ হয়ে যাবার পরও টাকা পরিশোধের নাম ছিল না। পরিস্থিতিটা এমন হতো যে, বাকি নেয়া ক্রেতা দোকানের সামনে দিয়ে যাবার সময় মাথা নীচু করে চলে যেত যাতে কৃষ্ণ তাকে দেখে ফেলে। দেখে ফেললে তো সমূহ বিপদ। কারণ যদি বাকি টাকা পরিশোধ করার তাগিদ দেয়।
খুচরা দোকানে বাকিতে কেনা বেচার নিয়মটা বোধ হয় বাংলাদেশেই আছে। পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে বলে আমার জানা নাই। থাকলে কেউ জানান না, প্লিজ। এ ব্যাপারে বিদেশের প্রবাদগুলোও জানা দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিপ্লবের নিঃশব্দ মূল্য: অর্থনৈতিক বৈষম্য ও বাংলাদেশি ছাত্র আন্দোলন

লিখেছেন মুনতাসির, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

এ লেখাটি বেশ বড়ো। এখানে ছোট করে দেয়া হল। পুরো লেখাটি যদি কেও পড়তে চান, তবে নীচের লিঙ্ক থেকে পড়তে পারবেন।


সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন পর্যালোচনা চলছে। জাতিসংঘের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিরহ

লিখেছেন গোধুলী বেলা, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৪

একটি কবিতা লিখা হবে বাদে কিছুক্ষণ
মেঘমালারা বারি পাত করিছে ক্ষণে ক্ষণ।
গগনভেদি কামান গোলা পরিছে মুহুর্মুহু
দুরুদুরু ভয়েতে কাপিছে বুক বাদ যায়নি কেহ।

জানালার পাশে  প্রেমিকার ছলছল চোখ
বৃষ্টিরো সাথে সে কেঁদে  ভাসাইছে বুক।
হাজারো... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু কিছু মানুষ বলার শুরু করেছে, "আমরা আগেই ভালো ছিলাম"।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:০২



একাধিক কারণে মানুষ ইহা বলার শুরু করেছেন: (১) সাধারণ মানুষ কোমলমতিদের ক্রমেই চিনতে পারছেন, ইহা ভীতি ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করছে; কোমলমতিরা সরকারের গুরুত্বপুর্ণ অনেক পদে আছে ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি - একাল সেকাল

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮



টানা বৃষ্টির মধ্যে মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি । অন্যদিকে ফার্মের মুরগির এক পিছ ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা।শুধু মরিচ নয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কমলা যদি পরাজিত হয়, "দ্রব্যমুল্য"ই হবে ১ নম্বর কারণ

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭



দ্রব্যমুল্য হচ্ছে অর্থনৈতিক সুচকগুলোর ১ টি বড় প্যারামিটার; ইহা দেশের অর্থনীতি ও চলমান ফাইন্যান্সের সাথে সামন্জস্য রেখে চলে; টাস্কফোর্স, মাস্কফোর্স ইহার মুল সমাধান নয়; ইহার মুল সমাধন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×