somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বরের অনুশোচনা -- পর্ব ২ (বৈজ্ঞানিক কল্প গল্প)

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বপ্ন সঙ্গী

অতীতে ফেরার ঊৎসব শেষে সবাই আবার যার যার কাজে যোগ দিয়েছে।
আরিয়ানা এখনকার প্রোজেক্ট সময় গবেষনা কেন্দ্রে, হাজার হাজার বছর ধরে কল্পনা করেগেলেও এখন পর্যন্ত অতীত বা ভবিষ্যৎ কোনটাই পরিভ্রমন করা সম্ভব হয়নি। সময় পরিভ্রমনের সর্বশেষ ব্যার্থ প্রোজেক্ট এর ব্যার্থতার কারন অনুসন্ধানে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছে সে।সবাইকে জানানো হয়েছে তাকে বিরক্ত না করতে। এর মাঝে যোগযোগ পর্দায় নীল রং এর আলো খেলা করতে লাগলো, নীল রং এর আলো খেলা করার মানে আন্ত:গ্রহিয় জরূরি তথ্য অপেক্ষা করছে।সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে। বিরক্ত মুখে স্ক্রীন অন করতেই অনিশের মুখটা ভেসে উঠলো .

অনিশ: হ্যালো রিয়ানা
আরিয়ানা চিন্তিত মুখে জিজ্ঞেস কোরলো কি হয়েছে ?
অনিশ: অতি বুদ্ধিমান চতুর্মাত্রিক প্রানী পৃথিবী আক্রমন করেছে :D
আরিয়ানা হতাশ চোখে তাকিয়ে রইলো
অনিশ: আমি কি ২৪ ঘন্টার জন্য আমার সাথে বৃহঃস্পতির চাঁদে তোমাকে সঙ্গী হিসেবে পেতে পারি।
আরিয়ানা: আমার এখন মাথার ঘায়ে কুত্তা পাগোল অবস্থা আর তুমি আসছো রঙ্গ করতে। তুমি আন্ত:গ্রহীয় গুরুত্বপূর্ন চ্যানেলে কিভাবে যোগাযোগ করলে?
অনিশ:তুমি ভুলে যাচ্ছ রিয়ানা আমি ৫ তারকা প্রাপ্ত বিজ্ঞানি রনের সম্ভাব্য উত্তোরাধিকারি আমার কিছু বেআইনি ক্ষমতা আছে। বাদ দাও আজকে ডিনারটা কি আমার সাথে করতে পার?
আরিয়ানা: বিজ্ঞান পরিষদের ভবিষ্যৎ মহাপরিচালকের অনুরোধ তো আর ফেলতে পারিনা হয়তো এই ডিনারের কথা মনে রেখেই তুমি আমাকে ৩ তারা থেকে ৫ তারা বানিয়ে দেবে ;)

..............................................................................

আরিয়ানা ঘরে ঢুকতেই অনিশ বলে উঠলো রিয়ানা আমাকে এককাপ কফি বানিয়ে খাওয়াও মানবীর হাতের কফিপান করতে মন চাইছে। রিয়ানার বানানো কফিতে চুমুক দিয়ে মুখ কুচকে বলে উঠলো দেবী এটা ফেলে দিয়ে ভেন্ডিং মেশিন থেকেই এককাপ কফি নিয়ে এসো এসব ব্যাপারে যণ্ত্র অনেক এফিসিয়েন্ট।
দু মগ কফি নিয়ে রিয়ানা জানতে চাইলো কিজন্য ডাকা হয়েছে জানতে পারি?
অনিশ: হ্যা পারো, আমি তোমাকে আমার স্বপ্ন সঙ্গী করতে চাই তাই, ঘুমের মাঝে আমি যে স্বপ্ন গুলো দেখি আমি চাই তুমিও তা দেখ তাই একটা চিপ বানিয়েছি সেটা তোমার মাথায় লাগাতে চাই।
আরিয়ানা: ফাজলামো করছো। স্বপ্ন কী কোন বাস্তব ঘটনা নাকি? আমিতো স্বপ্নে কতবার আইনস্টাইন কে দেখলাম আইনস্টাইন কী সেই স্বপ্ন গুলো স্বর্গে বসে দেখবে
অনিশ: স্বপ্নের সৃষ্টি আমাদের নিউরনে। তোমার জন্য আমার মস্তিষ্কে একটা নির্দিষ্ট তরঙ্গ আছে আমি যখন স্বপ্নে তোমাকে দেখবো আমার মাথায় লাগানো চিপটা সেই সিগনাল পাবে তারপর সেই তথ্যগুলো তোমার নিউরনের চিপে পাঠাবে এবং যখন তুমি ঘুমোবে এটা এ্যাক্টিভ হবে। আরো কিছু কাজ বাকি আছে, কিছু গোপণীয় স্বপ্ন আমি তোমাকে দেখতে দিতে না চাইলে সেটার ট্রান্সমিশন ব্লক করতে হবে, মূল সিস্টেমের সাথে কানেক্ট করার ইন্টারফেজ তৈরী করতে হবে তারপর বাজারজাত করা হবে পরীক্ষামূলক ভাবে তোমার মাথায় বসাতে চাই প্রথমবার। ভালো না লাগলে যেকোন সময় খুলে ফেলতে পারো।
আরিয়ানা: ঠিক আছে।
অনিশ: আজ কি হয়েছে জানো আমি সিজার -৭ (সিজার -- একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম, ত্রিমাত্রিক দাবা খেলার প্রোগ্রাম, ছয়টি পর্যায় জিতে পেরুলে ফাইনাল খেলা হয় ফাইনালটাই সিজার ৭, দশ বছর আগেও সিজার-৫ ছিলো ফাইনাল স্তর, এখন ৭, এটি নাকি অটো আপডেটেড প্রগ্রাম, নিজেই নিজেকে উন্নত করে, সাধারনত কোন মানুষ এটাকে হারাতে পারে না) কে হারিয়েছি।খেলাটা খুব জমেছিলো। মনে হচ্ছিলো মানুষের সাথে খেলছি। যণ্ত্রকে হারানোর সময় তোমাকে মনে রাখতে হবে যণ্ত্র খুব হিসেবি চাল দেয় তোমার পরবর্তি কয়েক হাজার চালের সম্ভাব্য কম্বিনেশন সে মাইক্রোসেকেন্ডে হিসেব করতে পারে তাই তোমাকে এলোমেলো চাল দিতে হবে এবং একটা নির্দিষ্ট সময় পর তুমিও যণ্ত্রের হিসেব ধরতে পারবে কিন্তু তার হিসেবে প্যাচ লেগে যাবে। কিন্তু আমি এলোমেলো চাল সুরু করার পর সিজার ও এলোমেলো চাল দিচ্ছিলো।অদ্ভুত।
আরিয়ানা: দাবার কচকচানি ভালো লাগছে না। আমি এখন উঠবো।
(অরিত্র অসম্ভব ভালো দাবারূ ছিলো)
অনিশ: কিসের কচকচানি ভালো লাগে সময় পরিভ্রমনের :D; ভালো লাগলেও লাভ নেই দেবী, তুমি কখনো ভবিষ্যতে যেতে পারবে না তুমি ভবিষ্যতে যাওয়া মাত্র ওটা বর্তমান হয়ে যাবে।

পরের দিন আবারো কাজের মাঝে নীল আলো খেলা করতে লাগলো, আরিয়ানার হাসি পেতে লাগলো অনিশের কথা ভেবে, ইচ্ছে হচ্ছিলো স্ক্রীন অফ করে দিতে কিন্তু সেতো এখনো ৫ তারা পায়নি তাকে প্রোটোকল মানতে হয়। স্ক্রীন অন করতেই ভেসে উঠলো রনের বিষন্ন মুখ, বুকটা কেপে উঠলো আরিয়ানার। রন বলতে লাগলো ৫ তারকা প্রাপ্ত বিজ্ঞানী
অনিশ আগামি ১০০ বছর শীতল ঘরে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিছুক্ষন আগে নিরাপত্তা রোবটরা তাকে হিম নগরে নিয়ে গেছে। তার এই সিদ্ধান্তে বিজ্ঞান একাডেমি গভীর দুঃখ প্রকাশ করছে।

আরিয়ানার খুব অবাক লাগছিলো। সে সেদিনের নির্ধারিত কাজ শেষ না করেই ঘরে ফিরলো।মাঝে মাঝেই কিছু বিজ্ঞানী শিতল ঘরে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে আর কারো সাথে যোগাযোগের নিয়ম নেই, সিদ্ধান্ত টা অনেকটা আত্মহত্যার মতন, সাধারত অবসাদগ্রস্থরাই এটা করে। গতকালও অনিশের সাথে তার কথা হয়েছে, কোন অস্বাভাবিকতা চোখে পরেনি। তার আরেকবার অনিশের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে। সে অতীতে ফেরা অনুষ্ঠান থেকে অনিশ তাকে যে মধ্যযুগীয় পলিমারের ব্যাগ কিনে দিয়েছিলো সেটা হাতাতে থাকে, তাদের একটা ত্রিমাত্রিক ক্রিস্টাল প্রতিচ্ছবিও পেয়ে যায়। আর পায় সেই বাদামের ঠোঙাটা, সেখানে আইনস্টাইন গল্পটা মস্তিষ্কে আপলোড করতে চাইলে সিস্টেমে কোন কোড চাপতে হবে সেটা লিখা আছে। আরিয়ানা আপলোডার টা মাথায় চাপিয়ে কোড টা প্রেস করে। তার মস্তিস্কে আশ্চর্য্য জনক ভাবে দুটো গল্প লোড হয়,

আইনস্টাইন: ৩০০০ সালে এক ব্যাবসায়ী আইনস্টাইনের ক্লন করান কিন্তু সেই ক্লোন বিজ্ঞানী না হয়ে নাম করা গায়ক হন।
দ্বিতীয় গল্পে এক লোক পৃথিবী থেকে মুছে ফেলা তথ্যগুলো জানেন, সে মুছে ফেলা তথ্যগুলো উদ্ধার করে তথ্যের অসঙ্গতিগুলো বের করে। একটা বাচ্চা ছেলের দাত পরে গেলে সে যখন হাসে তখন ফোকলা হাসি দেখা যায়, তথ্য সরিয়ে নিলে সেখানেও শুন্যতা থাকবে।

আপলোডার টা খুলেই আরিয়ানার মনটা বিষাদে ভরে যায়। গতকাল রাত্রেই সে স্বপ্ন দেখেসে সে আর অনিশ চাঁদের সমুদ্রের পারে বসে আছে আর বেগুনী আলো ছরাচ্ছে চাঁদের উপগ্রহ লুন(৫০০ বছর আগেই চাঁদের জমে থাকা বরফে বিষ্ফোরন ঘটিয়ে সেখানে সমুদ্র সৃষ্টি করা হয়েছে আর তৈরী করা হয়েছে চাঁদের কৃত্রিম উপগ্রহ লুন)। সেই স্বপ্নটা আসলে অনিশের ছিলো। যে কালরাতে এই স্বপ্ন দেখেছে আজ সকালেই সে শীতল ঘরে চলে যাবে এটা হতে পারে না। আরিয়ানাকে সত্যটা জানতে হবে.....

(চলবে.....)

ঈশ্বরের অনুশোচনা -- পর্ব ১ (বৈজ্ঞানিক কল্প গল্প)
Click This Link

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:১৯
১৪টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×