আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ভূমিকাটি অপ্রতুল, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় নয়
একজন মানুষ সম্বন্ধে আমার আগ্রহটা একেবারেই ব্যক্তিগত। নিজস্ব আয়নায় আমি তাঁকে নিজের মতো করে দেখি এবং আমার স্বাপ্নিক দোলাচলে এই মানুষটি এক নিরবচ্ছিন্ন শব্দচয়নের মতো কখনো এ-ধারে, কখনো ও-ধারে খেলা করেন। তার অবয়ব আমার কাছে পরিস্কার, কখনো কখনো একেবারেই এক ছায়াচিত্র যেনো; মনোহীনতার গন্ধে এই ছায়াচিত্রকে আমি বারবার অবলোকন করি আমার আত্মজ অন্ধকারে। তবুও সাধ মেটে না।
যে গাঙে ভালোবাসার পানসি ভাসাই তাতে অভিমানের ডিঙাও ভাসে মাঝে মাঝে। পাল তুলে নিজের মতো এক ভাষা নিয়ে সে খুঁজে ফেরে আলোহীন কোনো এক প্রভাত- নাকি ভুল বললাম, আলোহীন নয়, বরং আলোর মাতম- যেখানে প্রেমময়তার সাথে নেচে যায় নিবিড় এক উদাস গাঙচিল।
আমার সেই উদাস গাঙচিলের নাম ‘রবীন্দ্রনাথ’। আমার অভিমানের নাম রবীন্দ্রনাথ, স্বপ্নের নাম রবীন্দ্রনাথ, ক্রোধের নাম রবীন্দ্রনাথ, আমার চোখের কোণের কাছে গুটিশুটি হয়ে থাকা জলবিন্দুর নাম রবীন্দ্রনাথ।
আর সব কিছু পেরিয়ে গেলে, আমার একলা ঘরে যে আমি, একলা বসে থাকি অনন্ত তৃষ্ণায়- সে তৃষ্ণার নামও রবীন্দ্রনাথ।
তবে অধিকাংশ রবীন্দ্র-গবেষকের মতো আমি রবীন্দ্র পূজারী নই। তাঁদের কাছে রবীন্দ্রনাথ দেবতা; কিন্তু আমার কাছে ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন’। আমার সুখে-ক্লান্তিতে-মোহে-সত্তায় তিনি এক বিরাজমান নক্ষত্র; তাই কেবল বুকেই তুলে রাখিনি তাঁকে, কখনো করেছি প্রশ্নে জর্জরিত, কখনো তার আবেগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছি- এবং সবশেষে এই মানুষটির কাছেই আবার ফিরে এসেছি, যেভাবে ‘সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতোন সন্ধ্যা আসে’- সেইভাবে।
আসছে ২২শে শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহা-প্রয়াণ দিবস। বিনম্রতায় যেটুকু ঋদ্ধ হওয়া যায়, তার চেয়েও ঋদ্ধতা নিয়ে আমার এই একান্ত অনুভূতির কাছে নিবেদিত হবে কাঁঠালচাঁপার প্রণতি। নিরন্তর বিষ্ময় যে প্রণতির আকাশে হয়ে থাকে এক প্রসন্ন রঙধনু।
আকাশের রঙধনুর সাতরঙ, পদার্থবিজ্ঞানে এর ব্যাখ্যা আছে- কিন্তু কবিগুরুর কাছে নিবেদিত এই রঙধনুর তিনটি রঙ; এই ব্যাখ্যাটা হৃদয়েই পাওযা যাবে।
২০ শ্রাবণের শেষ লগ্নে প্রকাশিত হবে প্রথম রঙটি, ২১ শ্রাবণে দ্বিতীয় আর শেষ রঙটি রঙিন হবে ২২ শ্রাবণ।
তিনটি পর্বের এই লেখায় আমি চেষ্টা করবো আমার এই একান্ত মানুষটিকে তুলে আনার জন্যে, সমালোচকের দৃষ্টিতে নয়, প্রেমিকের দৃষ্টিতে; তত্ত্বের বেড়াজালে নয়; একেবারেই নান্দনিক এক প্লটে। আমি চেষ্টা করবো রবীন্দ্রনাথকে তুলে আনার জন্যে একেবারেই অন্যভাবে, যেভাবে কেউ কোনোদিন করেনি- এবং এরই মাঝে লুকিয়ে রাখবো আমার এক প্রচ্ছন্ন অহঙ্কারকে।
সবশেষে পাঠকই না হয় বিচার করবেন- এই নান্দনিক অহঙ্কারে অহঙ্কারী হবার প্রয়াসে, আমি কতোটুকু ব্যর্থ।
পাঠকের বিবেচনার সুবিধার্থে তিনটি পর্বে উল্লিখিত বিষয়সমূহ দেয়া হলো-;
প্রভাত-পর্বের স্নিগ্ধ সংগীত
১। রবীন্দ্রনাথের পারিবারিক ও ব্যক্তিজীবন
২। তাঁর ভ্রমণ-বৃত্তান্ত
৩। রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক মতাদর্শ
৪। সমাজ, রাষ্ট্র ও শিক্ষা চিন্তা
৫। বিজ্ঞানমনস্কতা
প্রকাশিত হবে ২০ শ্রাবণের শেষ লগ্নে।
মধ্য-গগন পর্বের দীপ্ত রবীন্দ্রনাথ
১। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য-সৃষ্টিকর্ম
২। রবীন্দ্রনাথের গান
৩। নৃত্যকলার রবীন্দ্রনাথ
৪। রবীন্দ্রনাথের চিত্রকলা
৫। রবীন্দ্রসৃষ্টি- মানবতার সাথে আরও কিছুর মণিকাঞ্চণ
৬। রবীন্দ্রনাথের ভাষা ও ব্যাকরণচিন্তা
৭। কবিগুরুর স্থাপত্যচিন্তা
৮। রবীন্দ্রনাথ- কতোটা রোম্যান্টিক কতোটা আধুনিক
প্রকাশিত হবে ২১ শ্রাবণের শেষ লগ্নে
সায়াহ্ন-পর্বের আদরে রবীন্দ্রনাথ
১। প্রেমিক রবীন্দ্রনাথ
২। রবি-জীবননাট্যের শেষ কয়েকটি অঙ্ক
৩। সভ্যতার সঙ্কটে রবীন্দ্রনাথ
৪। রবীন্দ্রনাথের অনুবাদ এবং অনুবাদক রবীন্দ্রনাথ
৫। বাঙলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের উত্তরপ্রভাব
৬। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল: বাঙালির প্রচলিত ধারণা
৭। রবীন্দ্রনাথ: কয়েকটি প্রচলিত-অপ্রচলিত মিথ
৮। বাঙালির সাংস্কৃতিক ও মুক্তি-পরিচয়ে রবীন্দ্রনাথ
৯। রবীন্দ্রনাথের শেষ কোথায়
প্রকাশিত হবে ২২ শ্রাবণের শেষ লগ্নে
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ক- এর নুডুলস
অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।
ক
একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???
কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???
আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
২-১ : আলিফ-লাম-মীম
আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন
কুরসি নাশিন
সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন
বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!
যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।
কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!
ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন