গতকাল প্রকাশিত হল S.S.C রেজাল্ট। যারা খুব ভালো রেজাল্ট করে গেল তাদের অভিনন্দন। যারা পাশ করতে পারলনা তাদেরও হতাশ হওয়ার কিছুই নেই, হয়তো আগামিবার সাফল্য তাদের হাতে ধরা দেবেই। বা দিতে বাধ্য হবে।
কিন্তু আমার এই লেখাটা যারা খুব ভালো রেজাল্ট করল বা যারা ফেল করল তাদের জন্য নয়, যারা কোন ভাবে পাশ করে গেল তাদের জন্য।
আমি জানি “মোটামুটি ভালো রেজাল্টে পাশ” নামক শব্দটার মাঝে কি যন্ত্রনা। ক্লাসে সব সময় পাশে বসা খুব ভালো বন্ধুটা দাত বের করে হাসবে, আফসোস করবে “ইস যদি আর একটু ভালো হত”! বাবা চুপচাপ থেকে আড় চোখে থাকাবে, মা পাশের বাড়ির ছেলেটা বা মেয়েটার সাথে কম্পারিজমে যাবে। খুব প্রিয় বড় বোনটা গর্দভ বলে ডাকবে। পাশের বাড়ির কাকা বা কাকিমা তাদের দূর সম্পর্কের রিলেটিভের ছেলেটা বা মেয়েটার A+ পাওয়ার খবরটা বাড়িতে এসে রসিয়ে রসিয়ে বলবে! কেউ কি জানতে চাই, কি অবস্থা হয় সেই মানুষটার মানসিকতার যে মোটামুটি ভালো রেজাল্টে পাশ করল?
তারপর আছে ভালো কোন কলেজে ভর্তি না হতে পারার কষ্ট বা বন্ধুদের খুব বিখ্যাত কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তাদের দেখতে যাওয়ার আমন্ত্রন এড়ানোর অসহ্য কষ্ট!
কেন এমন হবে? কেন মেধার বিবেচনা শুধুমাত্র A+ নামক বস্তুটা দিয়েই হতে হবে?
কিন্তু যারা A+ নামক খুব ভালো রেজাল্ট করে গেল তারা কি এমন দেশ উদ্দার করে যাচ্ছে? সবার প্রতি সম্মান রেখেই বলতেছি, লাখে লাখে এসব মেধাবীদের মধ্যে থেকে খুব সাধারন উদাহরন একজনও কি মার্ক জুকারবার্গ বা ষ্টিভ জবস হয়ে ওঠতে পারবে? হয়তো বা না। কারনটাও খুব সাধারন! যে অবিভাবকরা এখনো তাদের ছেলে মেয়েদের পাঠ্য বইয়ে মাথা গুজে রাখতে বাধ্য করে, বাইরের জগত থেকে আলাদা করে রাখে; যে শিক্ষা ব্যবস্থায় এখনো পাঠ্য বইয়ের পাতা থেকে গিলে গিয়ে পরিক্ষার খাতায় বমি করে দিয়ে খুব ভালো ফল অর্জন করা যায় সে ব্যবস্থায় বেশী কি বা আশা করা যায়?
হয়তো একগাদা দূর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারি! অতএব শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের সঠিক সময় কি এখনই নয়? গাদা গাদা বইয়ের বাইরে গবেষনাধর্মী শিক্ষা ব্যবস্থা চালুতে আমাদের এত অরুচি কেন?
(আমার এই লেখাটা কাউকে ছোট করার জন্য না। তারপরও কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে ক্ষমাপ্রার্থী।)