somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তথ্য অধিকার
তথ্য চাই তথ্য চাই !! আমি ভালোবাসি তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এবং এর বাস্তবায়নে যাতে সরকারী-বেসরকারী প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততা-ন্যাপরায়নতা ফিরে আসে, সেটাই আমার কামনা এবং আন্দোলন।

১৬ই ডিসেম্বর সারেন্ডার অনুষ্ঠানে জে. ওসমানী কেন উপস্থিত ছিলেন না? চাঞ্চল্যকর তথ্য

২৫ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ৬ মার্চ ‘দৈনিক যুগান্তরে’ ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশীর একটি লেখা ছাপা হয়েছে। লেখাটির শিরোনাম, ‘গুন্ডে ছবির রাজনীতি’। লেখার এক স্থানে একটি সাব হেডিং রয়েছে। সেটি হলো, ‘পাকবাহিনী কার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে?’। এই সাব-হেডিংয়ের নিচে বলা হয়েছে, ‘মুক্তিবাহিনী এবং সারাদেশের মুক্তিকামী মানুষের নিরন্তর আঘাতে যখন পাকবাহিনী সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত, তখনি ভারত তাতে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। গঠিত হয় ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে ‘যৌথ কমান্ড’। ভারতীয় বাহিনীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ যুদ্ধের সমাপ্তি ত্বরান্বিত করেছে এবং বিজয় নিশ্চিত করেছে, তাতে সন্দেহ নেই।
স্বাভাবিক নিয়মেই ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান জেনারেল আরোরাই যৌথ বাহিনীর প্রধান হয়েছেন। উপপ্রধান হয়েছেন বাংলাদেশের মুক্তি বাহিনীর প্রধান জে. ওসমানী। ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল আরোরা পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেছেন কোন পরিচয়ে? ‘যৌথ বাহিনীর প্রধান’ হিসেবে, নাকি ভারতের ‘ইস্টার্ন কমান্ডে’র প্রধান হিসেবে? এ প্রশ্নের সুস্পষ্ট জবাব আমার কাছে নেই (যৌথ বাহিনীর প্রধান হিসেবেই তার স্বাক্ষর করার কথা। যদি তা না হয় থাকে তাহলে তো বিষয়টিকে সহজভাবে নেয়ার উপায় নেই)।’
॥ তিন ॥
এরপর লেখা হয়েছে, ‘ওসমানী তখন কোথায় ছিলেন?’ অতঃপর বলা হয়েছে, ‘এ ব্যাপারে জেনারেল ওসমানীর সঙ্গে আলাপচারিতার একটি দিনের কথা মনে পড়ে। ১৯৭৮ সালের একদিন তার সঙ্গে সিলেট থেকে সড়ক পথে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলাম। একটা জিপের সামনের আসনে দুজন পাশাপাশি বসা। জেনারেল খুব আলাপি মানুষ ছিলেন। সারা পথ তার জীবনের নানা ঘটনা সরস ভাষায় বলে যাচ্ছেন। আমি নিবিষ্ট মনে শুনছি।
জিপটা যখন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের পাশ দিয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ করে বলে উঠলাম : ‘স্যার, একটা বিষয় খুব জানতে ইচ্ছে করে, একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর যখন পাকবাহিনী রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করে তখন আপনি সেখানে উপস্থিত থাকেননি কেন?’
জেনারেল সাহেব প্রশ্নটি শুনে একটু যেন চমকে উঠলেন। কথা থামিয়ে চুপ হয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর যখন বলতে শুরু করলেন তখন তার গলার স্বর পাল্টে গেছে। একটু ধীরে তার স্বভাবগত ভাবগম্ভীর স্বরে ঠোঁট চেপে চিবিয়ে চিবিয়ে বলতে শুরু করলেন (প্রায় দু’বছর প্রায় সর্বক্ষণ তার কাছাকাছি থাকার সুবাদে ততদিন বুঝে নিয়েছি রেগে গেলে তিনি এভাবে কথা বলেন)। বললেন, ‘ইট ওয়াজ এ ডার্টি কনসপিরেসি। আই ওয়াজ গোয়িং টু অ্যাটেন্ড দ্যাট সারেন্ডার সেরিমনি। ইট ওয়াজ ইন দ্যা প্রোগ্রাম। মাইসেলফ অ্যান্ড জেনারেল রব। উই স্টারটেড ফ্রম দিস ভেরি প্লেস কুমিল্লা। বাট ইউ নো অন দ্য ওয়ে উই আয়ার সাডেনলি আস্কড নট টু প্রসিড। ব্যাটারা অয়্যারলেসে বলেছে, পথে নাকি অসুবিধা আছে। আমরা যেন সিলেটের দিকে চলে যাই। পাইলট হেলিকপ্টার ঘুরিয়ে দিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে। তার কিছুক্ষণ পরেই আমরা পড়ে গেলাম গান ফায়ারে। আমার পাশে জেনারেল রব গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত হয়ে গেলেন। আল্লাহর রহমতে শাহ জালালের দোয়ায় আমার গায়ে একটা গুলিও লাগেনি...।’ বলেই আবার চুপ হয়ে গেলেন (স্মৃতি থেকে যথা সম্ভব তার কথাগুলো তার বাচন ভঙ্গিতে হুবহু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কিছু ডট ডট আছে। সব কথা বলা যায় না)। লক্ষ্য করলাম, রাগে তিনি গর গর করছেন। আমি চুপ করে থেকে মনে মনে সেই হেলিকপ্টারের দৃশ্যটা কল্পনা করতে থাকলাম।
ফেরদৌস কোরেশী, জেনারেল ওসমানীর উদ্ধৃতিতে, তার (জেনারেলের) সারেন্ডার অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকার কারণ বর্ণনা করেছেন। জেনারেলকে বহনকারী হেলিকপ্টারে গুলি বর্ষণ করা হয়। ওই হেলিকপ্টারের আরেকজন আরোহী জেনারেল আব্দুর রব আহত হন এবং রক্তাক্ত হন। সৌভাগ্যক্রমে ওসমানীর গায়ে কোন গুলি লাগেনি। এখানে কিছু ফাঁক রয়েছে। সেই ফাঁকগুলো ফেরদৌস কোরেশী পূরণ করেননি। যে হেলিকপ্টারটি ঢাকার উদ্দেশ্যে কুমিল্লা থেকে উড্ডয়ন করেছিল সেটিকে সিলেটে যাওয়ার জন্য কে বা কারা নির্দেশ দেয়? নির্দেশ অনুযায়ী গতিপথ পরিবর্তন করে হেলিকপ্টারটি সিলেটের দিকে যাচ্ছিল। তাহলে মাঝপথে কে বা কারা ওই হেলিকপ্টারে গুলি বর্ষণ করে? এই ঘটনাটি বাংলাদেশ সরকার আজ পর্যন্ত চেপে রেখেছে কেন? এই সব আমাদের কোন প্রশ্ন নয়। যারা পঞ্চাশোর্ধ্ব, তাদের সকলের মনকে এই প্রশ্নটি দারুণভাবে আলোড়িত করে এবং আগামী দিনগুলোতেও আলোড়িত করতেই থাকবে।
উৎসঃ ইনকিলাব
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×