somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তথ্য অধিকার
তথ্য চাই তথ্য চাই !! আমি ভালোবাসি তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এবং এর বাস্তবায়নে যাতে সরকারী-বেসরকারী প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততা-ন্যাপরায়নতা ফিরে আসে, সেটাই আমার কামনা এবং আন্দোলন।

জামাতের বিরুদ্ধে সাক্ষী হননি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ২০ বুদ্ধিজীবী!!

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জামাত ইসলাম পাকিস্তান শাসকগোষ্টির পক্ষে অবস্থান নিয়ে গণহত্যায় অংশ নেয়। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এখনো ক্রিয়াশীল। এ কারণে জামাত ইসলামকে নিষিদ্ধের বেশ জোরালো দাবি রয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হলে দেশের সব বুদ্ধিজীবীই বলেছেন যে, জামায়াতেরও বিচার হতে হবে। উদাহরণ হিসেবে সামনে ছিল ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জার্মান নাৎসি পার্টিসহ চার সংগঠনের নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনা। শেষ পর্যন্ত যখন জামাতের বিষয়ে মামলা টেবিলে উঠছে তখনই বেঁকে বসলেন মুখে সারাক্ষণ খই ফোটানো বুদ্ধিজীবীরা! সবাইকে অবাক করে দিয়ে ড. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মতো প্রখ্যাত মৌলবাদ বিরোধী লেখকেরাই জামাতের বিরুদ্ধে সাক্ষি হতে রাজী হননি।

প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ১২০ জন দেশী ও বিদেশী বুদ্ধিজীবীর তালিকা করা হয় জামায়াত নিষিদ্ধের মামলায় সাক্ষী হবার জন্য। এর মধ্যে ৭০ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দেশের বাইরে ও দেশের ভেতর থাকা ৫০ জন বুদ্ধিজীবী এ মামলায় সাক্ষি হতে রাজি হয়েছেন। বাকি ২০ জন সাক্ষি দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন।

সুশীল হিসেবে স্বীকৃত বুদ্ধিজীবীদের এই অংশের মধ্যে যাদের নাম রয়েছে, তারা সকলেই জামাত বিরোধীতা করে কম বেশি খ্যাতি কামিয়েছেন। মৌলবাদ বিরোধী হিসেবে সমাজে তাদের সুনাম আছে। এই সুনামকে কাজে লাগিয়ে তারা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন আমলের সরকারের কাছ থেকে কমবেশি সুযোগ সুবিধাও হাসিল করেছেন।

ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল : ‘তোমরা যারা শিবির কর’ খ্যাত জামাত বিরোধী, মৌলবাদ বিরোধী বিশিষ্ট লেখক ও বিজ্ঞান আন্দোলক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল জামাতের বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষী হতে রাজী হননি। কোটি তরুণ-তরুণীর অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব ড. জাফর ইকবালের পিতা ১৯৭১ সালে রাজাকারদের হাতে জীবন দেন। জামাত শিবিরের নৃসংশতা বিরুদ্ধে নিরন্তর লিখে চলেছেন তিনি।

কিন্তু যখন ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধ সংগঠনের দায়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার সাক্ষী হওয়ার জন্য তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয় তখন তিনি জামায়াত নিষিদ্ধের মামলার সাক্ষি হতে চাননি। অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের অধীনে বেতন পান তিনি। তার মৃত বড় ভাই হুমায়ুন আহমেদকে সরকার অর্থ সাহায্য দিতো সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এই হলো চেতনাজীবী মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।

প্রসিকিউটররা তাকে বুঝিয়েছেন যে, এই মামলায় সাক্ষী হতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কোনো ব্যাপার নেই। জামাতের বিরুদ্ধে আপনাকে অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে না। আপনি জামাতের তৎপরতা ও আদর্শিক দিক ব্যাখ্যা করে এটা প্রমাণ করবেন যে, এরকম একটা দলের, আদর্শের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাটা দরকারি। এতকিছু বুঝানোর পরেও জাফর ইকবাল পিতার খুনীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে রাজী হননি বলে জানিয়েছেন একজন প্রসিকিউটর।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ : সাদা মনের মানুষ। তাকে আমাদের দেশের তরুণ ও বয়স্করা সবাই সম্মান করেন। ১৯৭১ সালে যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখনও তিনি সাদা মনের মানুষ ছিলেন। ঢাকা কলেজে পড়িয়েছেন। আমাদের সব বুদ্ধিজীবীদের মেরে সাফ করলেও তিনি ঢাকায় দিব্যি আরামেই থেকেছেন। এসব নিয়ে আবার বইও লিখেছেন। এই সাদা মনের মানুষটি ‘আলোকিত মানুষ চাই’ স্লোগান তুলে বই পড়ার আন্দোলন করছেন অনেক দিন ধরে। তার মতে, মানুষ বই পড়ে আলোকিত হয়ে যাবে। মৌলবাদ থেকে মুক্ত হবে। কিন্তু সেই আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগরকে জামাত নিষিদ্ধের মামলায় সাক্ষী হতে অনুরোধ করা হয়েছিলো। তিনি সাদা মনে তা ফিরিয়ে দিয়েছেন।

মতিউর রহমান : প্রথম আলোর সম্পাদক। এক সময় সিপিবির নেতা ছিলেন। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বাম পার্টি করার সুবাদে পড়ালেখা করে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন। ফিরে এসে পার্টির পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক একতা’র হাল ধরেন। সে সময় ৫০ সিসির একটা মোটর সাইকেলে করে প্রিয় স্ত্রী মালেকা বানুকে (বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক) নিয়ে পল্টনের অফিসে যেতেন। মাইনে সাকুল্যে ৩ হাজার টাকা। সেই মতিউর রহমান এখন অগাধ টাকার মালিক।

মতিউরকে সিপিবি বহিস্কার করেছে এরকম একটা তথ্য প্রচলিত আছে। তিনি পার্টির অভ্যন্তরীণ নানা গোপন তথ্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের হাতে তুলে দিতেন। বিষয়টি দীর্ঘদিন সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি সিপিবিকে জানালেও তারা আমলে নেয়নি। কিন্তু মতিউর যখন স্বয়ং পার্টির জনপ্রিয় নেতা ফরহাদকে উৎখাতের চেষ্টা চালান, তখন তাকে বহিষ্কার করা হয়। সিপিবির অনেক অর্থনৈতিক লেনদেনের সঙ্গে যোগ থাকায় দলটি মতিউরের বহিষ্কারাদেশ প্রচার করে না, এই মর্মে মতিউরও তাদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো তথ্য দেয় না।

সেসব অতীত ছাপিয়ে মতিউর এখন প্রথম আলোর সম্পাদক। তার নীতিকথার শেষ নেই। তিনি মৌলবাদ বিরোধী শক্তির অগ্রপথিক। তবে তার পত্রিকায় জামাত বিরোধী লেখালেখি খুব কমই চোখে পড়ে। তাকে যখন প্রসিকিউশন জামায়াত নিষিদ্ধের মামলায় সাক্ষী হতে জানিয়েছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে প্রথম আলো গ্রুপের ভূমিকা বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। এই পত্রিকার সম্পাদককে সাক্ষী হতে ডাকাটাই বরং আশ্চর্যের!

সাক্ষী না হতে চাওয়া এই তালিকায় আরো আছেন প্রথম আলো গ্রুপেরই আরেক দেশখ্যাত পত্রিকা ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, চটি সম্পাদক খ্যাত দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বিশিষ্ট সুশীল ও মার্কিন স্বার্থের রক্ষক সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে সুশীলতা আওড়ানো সুজনের বদিউল আলম মজুমদার, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও মার্কিন ধারার বিশিষ্ট কূটনীতিজ্ঞ ড. কামাল হোসেন, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত জলবায়ু তহবিল থেকে নিজের এনজিওর নামে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান, এবং বিশিষ্ট গান্ধিবাদী নেতা সৈয়দ আবুল মুকসুদ।

এই বুদ্ধিজীবীরা আসলে নীতিবাগিশ। জামাতের বিরুদ্ধে সাক্ষী হওয়ার ক্ষেত্রে তারা ভয় যতটা না পাচ্ছেন, তার চেয়েও বেশি ভয় পাচ্ছেন আমেরিকাকে। এরা সবাই মার্কিনপন্থী বুদ্ধিজীবী। মার্কিনিরা এদেশে জামাতকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে অনেক দিন ধরে। মার্কিন ধারার বুদ্ধিজীবীরা সেই কাজটি সহজ করার জন্য ভূমিকা রেখেছেন। নীতি কেবল তাদের মুখে, বাস্তবে তারা জাতীয় স্বার্থকে যে থোড়াই কেয়ার করেন তা এর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো।

জন্মলগ্ন থেকেই গণবিরোধী অবস্থানের কারণে জামাত ছিল পাকিস্তানে একটি গণধিকৃত পার্টি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তারা তাদের নৃশংসতার ষোলকলা প্রদর্শন করে। নিরীহ জনগণকে হত্যা, ধর্ষণ, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া, বুদ্ধিজীবী নির্মূল করাসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা তখন করেনি। দেশ স্বাধীনের পরও তারা এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। আর সন্ত্রাসী এই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার মামলায়ই কিনা সাক্ষী হতে রাজী হলেন না দেশের শীর্ষ বুদ্ধিজীবীরা! তরুণ প্রজন্ম এ প্রশ্নের উত্তর কার কাছে চাইবে?

তাহলে কি জামাতের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আসলেই ভিত্তিহীন এবং স্রেফ রাজনৈতিক মতলববাজী? এজন্যই কি বিবেকের বিরুদ্ধে ভূয়া সাক্ষী হতে চাননি ডঃ কামাল হোসেনের মত বংবন্ধুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশের সংবিধানপ্রণেতা এবং এইসব মহান ব্যক্তিরা? জামাত কারো পিতৃহন্তা হবার পরও কি সন্তান খুনীর বিরুদ্ধে সাক্ষী হবেনা--এটা বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে? তাহলে আসল রহস্য কী আর যারা মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি দেখায়, তারাও বেকুব বনে যাননা কি? আমার মনে হয়-তাদের লজ্জায় আত্মহত্যাই করা উচিৎ া!!
(সংগৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×