somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তথ্য অধিকার
তথ্য চাই তথ্য চাই !! আমি ভালোবাসি তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এবং এর বাস্তবায়নে যাতে সরকারী-বেসরকারী প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততা-ন্যাপরায়নতা ফিরে আসে, সেটাই আমার কামনা এবং আন্দোলন।

শিবির নাম দিয়ে শত্রুবদ হাল-আমলের ভয়ঙ্কর কায়দা!!!!

১২ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হাল-আমলে শত্রুবদের সবচেয়ে কার্যকর ও বহুলব্যবহৃত পন্থা হচ্ছে- তাকে কোনভাবে শিবির নামে পরিচিত করে তোলা। নারীর চরিত্র নিয়ে দুই-একটা বাজে কথা রটালে যা হয়, ওই ব্যক্তিটির জীবনেও একই পরিণতি অপেক্ষা করতে থাকে। কোন ব্যক্তিকে শিবির বলে চিহ্নিত করার পর তার ভাগ্যে আর্থিক ক্ষতি থেকে শুরু করে সামাজিক নিপীড়ন সবই অপেক্ষা করতে থাকে। কখনও কখনও খুন-ধর্ষণের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধকে বৈধ ও ক্ষতিগ্রস্তদেরকে কোনাঠাসা করতেও একই কৌশল ব্যবহার করা হয়।

শিবির পরিচয় দিয়ে শত্রুবদের সর্বশেষ বড় উদাহরণ হচ্ছে গণজাগরণ মঞ্চের নেতা ইমরান এইচ সরকার। গত রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সংবাদ সম্মেলনে, গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার ছাত্র জীবনে প্রথমে শিবির, পরে ছাত্র ইউনিয়ন অতপর ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ঠিক একই পন্থা অবলম্বন করেছিলেন ইমরান এইচ সরকারের সমর্থকরাও। সম্প্রতি শাহবাগে একটি সমাবেশ করে ইমরান এইচ সরকারের সমর্থকরা গণজাগরণ মঞ্চের একাংশকে জামায়াত-শিবির ও রাজাকার বলে সম্বোধন করে।

একই কায়দায় দেশের প্রতিটি প্রান্তে শত্রুতা, রেষারেষিতে একে-অপরকে ছাড়িয়ে যেতে ব্যবহার করা হচ্ছে শিবির পরিচয়টিকে। এইভাবে নানান অপরাধকে বৈধ করতে শিবির পরিচয়কে ব্যবহারের ঘটনাগুলো নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে নতুনদিন।
এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মী সাদ ইবনে মমতাজ খুন। বিশ্ববিদ্যালয়টির মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী সাদ ইবনে মমতাজ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে প্রাণ হারান । প্রকাশিত বিবরণ অনুসারে, ‘শিবিরকর্মী’ সন্দেহে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে মারধর করেন। নিহত শিক্ষার্থী সাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাফুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের হল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রমের অংশ হিসেবে শ্রেণী প্রতিনিধি নির্বাচন নিয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে সাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এরপরই সাদের উপর ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতারা, সাদকে শিবির কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। এরপর সাদকে কথিত শিবির কর্মী সাদকে আশরাফুল হক হলে আটকে রেখে রড, লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ক মারপিট করা হয়। ফলস্বরূপ মারা যান সাদ।
শিবির পরিচয়টি ব্যবহার করে খুনীদেরকেও আড়াল করার আরও চাঞ্চল্যকর দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর। বিশ্বজিৎ হত্যার সাথে জড়িতরা ছাত্রলীগের কর্মী হলেও অভিযুক্তদেরকে শিবির পরিচয়ে চিহ্নিত করার চেষ্টা শুরু হয়। সে চেষ্টায় অংশ নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ। বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কেউই ছাত্রলীগের কর্মী নন বলে দাবি করেন প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করে বলেন, ‘মানুষ হত্যা করে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের ওপর দোষ চাপানো তাদের (বিএনপি-জামায়াত) ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
কেবল খুন আর খুনীদের বাঁচাতেই নয়, প্রতিযোগীদের হটাতেও ব্যাপকহারে ব্যবহার হচ্ছে এই কৌশল। এমনই একটি ঘটনার উদাহরণ পাওয়া যায়, চলতি বছরের মার্চ মাসে বুয়েটেসহ দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের শাখা কমিটিগুলোতে। সাধারণত, নেতৃত্বকামীরাই কমিটির নেতাদেরকে শিবির পরিচয় দিয়ে সমালোচনা, প্রচার-প্রচারণা শুরু করে। ঘটনার পরম্পরায় বিষয়গুলো মারামারিতে পর্যন্ত ঠেকেছে।

কারওর গায়ে শিবিরকর্মী তকমা লাগিয়ে দিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের ঘটনাগুলো যে কত বিচিত্র হতে পারে তার একটি উদাহরণ পাওয়া যায় ২০১৩ সালের মে মাসের ৮ তারিখে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদক ব্যবসার ভাগবাটোয়ারা ও পরকীয়া প্রেমের জের ধরে এক যুবককে পিটিয়ে আহত করার পর মামলা থেকে বাঁচতে জামায়াত-শিবির সাজিয়ে থানা হাজতে ঢুকিয়েছে সন্ত্রাসীরা। আহত সেই যুবক অবশেষে প্রাণ হারান। নিহত ব্যক্তি সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মুন্সিমন্ডলের-টোলা গ্রামের আয়েশ উদ্দীনের ছেলে নাসিম ওরফে আক্কু (২৮)।
এইভাবে দেশের নানান প্রান্তে, শিবির তকমাটিকে কাজে লাগিয়ে চলছে শত্রুবদের মহাকারবার। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এইভাবে যারা প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তারা কেউই পরবর্তীতে আবার হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার ভয়ে মুখ খুলেন না।
(উৎসঃ নতুনদিন)
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×