somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জোটগতভাবে নির্বাচনে গেলে বিএনপির চেয়ে আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা উজ্জ্বল

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এর আগে আমাদের ভোটের রাজনীতির ব্যাপারে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আলোকপাত করেছিলাম। এবার আবারো একই বিষয়ে কিছু সম্পূরক তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। বড় দুটি দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে একটি সুস্পষ্ট ভোটের ব্যবধান আছে বলেই আমার সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখতে পেয়েছি। যদিও সরকারে দুই দলই সমান সংখ্যক বার অধিষ্ঠিত হয়েছে। ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রায় ২০০ আসন পায়, আওয়ামীলীগ পায় মাত্র ৬২ টি। কিন্তু ভোটের ব্যবধান কিন্তু খুব কম। বিএনপি ৪১% আর আওয়ামীলীগ ৪০.৫% ভোট দখল করে। তাহলে বিএনপির এই বৃহৎ বিজয় কেন? তার কারণ বিএনপি একটি শক্তিশালী ৪ দলীয় জোট গঠন করেছিলো। আওয়ামীলীগ ছিল একদিকে সরকারী দল, অন্যদিকে তারা একাই নির্বাচন করেছিলো। চারদলীয় জোট ২০০১ এর নির্বাচনে সর্বমোট ৪৭.২% ভোট পায়। অর্থাৎ আওয়ামীলীগের সাথে মোট ভোটের ব্যবধান ছিল প্রায় ৭% এর মতো। জাতীয় পার্টির ২ টি পক্ষ আলাদাভাবে কোন জোটে না গিয়ে নির্বাচন করেছিলো। তাদের মোট ভোট ছিল প্রায় ৮ শতাংশ। যদি আওয়ামীলীগ জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট বাঁধত তাহলে হয়তো ঠিক এমন হতোনা ভোটের হিসাব তবুও কাছাকাছি থাকতো তা বলাই যায়। ৪৮% এর বেশি ভোট সেবারও পেয়েছিলো এই ২ দল যারা এখন ক্ষমতাসীন মহাজোটের প্রধান ২ দল। যা ছিল বিজয়ী ৪ দলীয় জোটের মোট ভোটের চেয়েও বেশি। তাহলে একটি কথা কিন্তু স্পষ্ট ২০০১ সালে আওয়ামীলীগের পরাজয়ের মূল কারণ তাদের অজনপ্রিয়তা নয়, কৌশলগত ব্যর্থতাই প্রধান কারণ। এর পূর্বে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ বিএনপি কোন জোট ছাড়া অংশগ্রহণ করলে তাদের ভোটের মধ্যে প্রায় ৪% এর মতো একটি ব্যবধান লক্ষ্য করা যায়। এই ব্যাপারটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯১ সালে আওয়ামীলীগ ৮৮ টি এবং বিএনপি ১৪০ আসন পায়। তখনও বিএনপি জামাতের সাথে নির্বাচনী সমঝোতায় যায়। ফলে জামাতের ৫-৬% ভোট বিএনপির সাথে যুক্ত হয়। কিন্তু সেবারও বিএনপির মূল ভোট আওয়ামীলীগের একক ভোটের চেয়েও কয়েক হাজার কম ছিল। আর ৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তা বিএনপির চেয়ে সামান্য কম ছিল বলেই ধারণা করা হয়। সে হিসেবে আওয়ামীলীগ ৯১ এর নির্বাচনে ভালো ফল করে। ৯১ এর পরে প্রতি নির্বাচনেই আওয়ামীলীগের ভোট বেড়েছে, বিএনপির ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোট অনেক কমেছে, তার পূর্বে বেড়েছে। আওয়ামীলীগ গভীরভাবে বামপন্থীদের ভোট আত্মিকরন করেছে। খালেদা জিয়ার নিকট থেকে শিক্ষা নিয়ে আওয়ামীলীগ যখন জাতীয় পার্টির সাথে জোট গঠন করলো তখন দুদলের পার্থক্য স্পষ্ট হল। বিগত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ একাই ৫০% ভোট পায়, মহাজোটের মোট ভোট ছিল প্রায় ৬০% এর কাছাকাছি। অন্যদিকে জোটগত ভাবে নির্বাচন করার পরেও বিএনপির ৪ দল মাত্র ৩৮% এর চেয়েও কম ভোট পায়। এইযে বিশাল ব্যবধান তা প্রমাণ করে যেকোনো মুহূর্তে বাংলাদেশে আওয়ামীলীগই সর্ববৃহৎ দল। আওয়ামীলীগ জোট ছাড়াও ক্ষমতায় এসে তাদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে ৯৬ তে। বিএনপি তা কোনোদিন পারেনি। তাই ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি যতোই এগিয়ে থাক জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল পূর্বের মতো সাথে থাকলে আওয়ামীলীগের সম্ভাবনাই উজ্জ্বল। তবে এরশাদ জোটে থাকবেন না বলছেন। একক নির্বাচন করবেন এমন কথা অনেকদিন ধরে বলছেন। কিন্তু এরশাদের একক নির্বাচনে বিজয়ী হবার কোন সম্ভাবনা নেই আর বিএনপির সাথে তারা জোটে যাবে তেমন সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী। তাহলে জনগণ আর তাদের বিশ্বাস করবে না। সে সম্ভাবনা এক প্রকার নেই বললেই চলে। এরশাদের জন্য আওয়ামীলীগের সাথে থাকাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ, মুখে তিনি যাই বলুন না কেন। সে অবস্থায় নিয়মিত সমর্থন খোয়াতে থাকা জামাতের সাথে জোটের রাজনীতি বিএনপি কে ক্ষমতায় নিতে পারবে সেটা ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ আওয়ামীলীগের এতো ব্যর্থতার পরেও বিএনপি ভালো কোন আন্দোলনই করতে পারেনি। খালেদা জিয়ার ২ পুত্র বিদেশে। দল চলছে সাবেক আমলা উপদেষ্টাদের দিয়ে। এমন অবস্থায় শেষ বছরে আওয়ামীলীগ যেভাবে তাদের কাজ তুলে ধরা শুরু করেছে তাতে আগামী নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে।
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×