somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিচার্ড কক এর ৮০/২০ নীতি: কম প্রচেষ্টায় বেশি অর্জনের গোপন কথা

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৮০/২০ নীতি: কম প্রচেষ্টায় বেশি অর্জনের গোপন কথা
- রিচার্ড কক : ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রকাশিত

৯টি উদ্ধৃতি
----------
“৮০/২০ নীতি আধুনিক বিশ্বকে এক নতুন মাত্রা উপহার দিয়েছে। তবে এরপরও এটি যেন এক গোপন জ্ঞান হিসেবে সাধারণের থেকে দূরে রয়ে গেছে – এছাড়াও নির্বাচিত যেসব সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এটি জেনে ব্যবহার করছে তারা এর সামান্য অংশই কাজে লাগাচ্ছে।”

“প্রথাগত জ্ঞান মতে এক ঝুড়িতে সব ডিম রাখাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। ৮০/২০ নীতি অন্য কথা বলে: সচেতনভাবে সতর্কতার সাথে তোমার ঝুড়ি পছন্দ করো, সব ডিম সেখানে রাখো, এবং এরপর বাজপাখির মতো সেটির উপর নজর রাখো।”

“সময়ের স্বল্পতার জন্য আমাদের দু:শ্চিন্তা করার কথা না, বরং নিম্নগুণের কাজে বেশি সময় দেওয়ার প্রবণতার বিষয়ে সাবধান হতে হবে। আসলে সময়ের কোনো ঘাটতি নেই। আমরা তো সময়ের প্রাচুর্যতায় ভেসে যাচ্ছি… ৮০/২০ নীতি বলছে, আমরা যদি আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২০% কাজে দ্বিগুণ সময় দিই, তাহলে সপ্তাহে দুদিনের শ্রমে পুরো সপ্তাহর কাজ করতে পারব এবং বর্তমানের চেয়ে ৬০% বেশি অর্জন করতে পারব।”

“৮০/২০ নীতি, পরম সত্যের মতো, আপনার জীবনকে মুক্ত করতে পারে। আপনি কম কাজ করতে পারবেন। একই সাথে, আপনি বেশি আয় করতে ও বেশি উপভোগ করতে পারবেন।”

“আপনি যে কাজে সবচেয়ে ভাল কেবল সেটিই করুন এবং সবচেয়ে বেশি উপভোগ করুন।”

“সুকৌশলী হওয়ার অর্থ হলো যা গুরুত্বপূর্ণ কেবল সেটিতেই মনোযোগ দেওয়া, সেই লক্ষ্যগুলিতে মনোযোগ দেওয়া যেগুলি আমাদেরকে সুবিধাজনকভাবে বেশি ফলাফল দেবে, যা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, অন্যের জন্য না এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও অবিচলতার সাথে প্রত্যাশিত ফলাফলের জন্য পরিকল্পনা করা।”

“মূল নীতিটি হলো, অল্প যেক’টি বিষয় আসলেই গুরুত্বপূর্ণ সেগুলি সেরে ফেলা। সেই সাথে অল্প কিছু উপায় অবলম্বন করা যেগুলি আমরা যা চাই তা দিতে পারে।”

“কঠোর পরিশ্রম কম লাভ দেয়। অন্তর্জ্ঞান ও আমরা যা চাই সেটি করা, এই দুয়ে মিলে বেশি লাভ নিয়ে আসে। ২০% হেতু থেকে ৮০% ফলাফল আসে। স্বল্প কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ; বেশিরভাগই নয়।”

“খুব কম ব্যক্তিই তাদের লক্ষ্যকে গুরুত্ব সহকারে নেয়। তারা এক সাথে অনেক বিষয়ে মাঝারি প্রচেষ্টা কাজে লাগায়, অথচ অল্প কিছু বিষয়ে উন্নত চিন্তা ও প্রচেষ্টা কাজে লাগানোর কথা। যেসব ব্যক্তি সবচে বেশি অর্জন করে তারা যেমন নির্বাচনপটু তেমনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

এক কথায় পুরো বই
-------------------
আপনি কিসে ভাল সেটি চিহ্নিত করার পর সেই কাজটি বেশি বেশি করলে সাফল্য সহজেই আসে।

একই ধরনের বই
----------------
মার্থা বেক এর ‘নিজের ধ্রুবতারা খুঁজে নাও’ (ফাইন্ডিং ইয়োর ওন নর্থ স্টার)
মিহাই চিকেসেন্টমিহাই এর ‘প্রবাহ’ (ফ্লো)

গ্রন্থ পর্যালোচনা
--------------
এই চমকপ্রদ বইটি আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে। রিচার্ড কক একটি তথ্যসমৃদ্ধ ও সহজজ্ঞানের বিপরীত নীতিকে তুলে ধরেছেন: ৮০ শতাংশ ফলাফল বা প্রভাব কেবলমাত্র ২০ শতাংশ প্রচেষ্টার সাথে সম্পর্কিত। যারা বিক্রয় বিভাগে কাজ করেন তারা হয়ত দেখেছেন যে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ২০ ভাগ পণ্য থেকে ৮০ ভাগ মুনাফা আসে। আমাদের পায়ের নিচে চাপা পড়া কার্পেটের ২০ ভাগ অংশই বেশি ছেঁড়াফাটায় পূর্ণ হয়। ব্যক্তি জীবনের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ৮০ ভাগ সুখ আসে জীবনের ২০ ভাগেরও কম সময় থেকে। ১৯৮৯ সালের হিসাব অনুযায়ী সবচেয়ে ধনী ২০% এর হাতে ৮২.৭০% সম্পদ ছিল।

হ্যাঁ, নির্দিষ্ট শতাংশের বিষয়টি এদিক ওদিক হতে পারে, তবে নীতিটি আমাদেরকে দেখায়, দুনিয়া মূলত কিভাবে একটি অসম ধরনে চলে। ৮০/২০ নীতির উপর লেখা ও ব্যক্তি জীবনের সাথে নীতিটিকে সম্পর্কিত করে লেখা এটিই প্রথম বই। অবশ্য এই নীতিটি প্রথম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন ইতালিয়ান অর্থনীতিবিদ ভিলফ্রোডো প্যারেটো এবং নীতিটি তাঁর নাম অনুসারে প্যারেটো নীতি নামেও পরিচিত। নীতিটি এতদিন যেন সফল কোম্পানিগুলোর গোপন হাতিয়ার হিসেবে ছিল এবং খ্যাতিমান কৌশলগত ব্যবস্থাপনার পরামর্শদাতাদের দখলে ছিল। যারা নীতিটির বিষয়ে ওয়াকেবহাল না, তাদের কাছে এর ফলাফলকে যাদুর পরশের মতো মনে হবে কারণ এটি প্রথাগত অর্থনৈতিক তত্ত্বের বিপরীতে কাজ করে। এ কারণে এটি “সবচে কম প্রচেষ্টার নীতি” হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে। তবে এটি কোনো তত্ত্ব না, এটি বাস্তবতার এক সরল পর্যবেক্ষণ। আত্মোন্নয়ন ধারার অনেক নীতিই দার্শনিক বা আধ্যাত্মিক ধরনের, তবে ৮০/২০ তেমন নয় কারণ আপনি এতে বিশ্বাস রাখেন আর না রাখেন, নীতিটি তার কাজ ঠিকই করবে।

৫০:৫০ বিশ্বাস এর বিপক্ষে ৮০:২০ নীতি

বুদ্ধিবৃত্তিক স্তরে ৫০:৫০ অনুপাতকে প্রচেষ্টা ও অর্জন বা ফলাফলের একটি যৌক্তিক সমীকরণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। বিষয়টি প্রথাগতভাবে এমন: আপনি যদি ‘ভাল’ প্রচেষ্টা দেন, তাহলে ‘ভাল’ ফলাফল পাবেন। আবার আপনি যদি ‘কঠোর পরিশ্রম করেন’ তাহলে একটি নির্দিষ্ট পরিমান পুরস্কার পাবেন। যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজ এই মানসিকতা নিয়ে চলছে এবং সামাজিক স্থিতি ও যথাযথতা রক্ষার ক্ষেত্রে এর কিছুটা অবদান আছে। কাজ-থেকে-পুরস্কারের স্পষ্ট একটি নীতি সমাজে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, আর সেখানে মাঝারি মানকে গ্রহণ করা হয় ও প্রথাগত রীতির অনুসরণকে পুরস্কৃত করা হয়। দৃর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, রিচার্ড কক বলছেন যে আমরা আসলে এমন পৃথিবীতে বাস করি না।

নতুন দুনিয়ার শিক্ষা হলো, কেবলমাত্র “মানিয়ে চলা” যথেষ্ট না, কোনো কাজে কোনরকম দক্ষতা সাফল্যের জন্য যথেষ্ট না। যা আপনার কাছে সহজে আবেদন জানায়, যা আপনি ভালবাসেন, এমন কিছু করতে হবে যেন অন্যদের চেয়ে আপনি অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকেন। তখন আপনি আপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপরে অবস্থান নিতে পারবেন।

কেবলমাত্র এই ধরনের প্রচেষ্টা, যেটি অন্যদের তুলনায় কোনো “কাজ” বলে মনে না হতে পারে, সেটিই বড় পুরস্কার বয়ে আনতে পারে। ৮০/২০ এর দুনিয়ায়, পুরনোটার মতো না, যারা এই নীতি কাজে লাগায় তারা যোগানের তুলনায় অত্যন্ত বেশি পরিমানে অর্জন পেয়ে থাকে। তবে সেই যোগানকে অবশ্যই একটি উচ্চ গুণমানের হতে হবে এবং সেখানে যোগানদাতার অনন্য স্বকীয়তার প্রতিফলন থাকতে হবে। ৮০/২০ নীতি অনুসারে এটা খুব সহজেই ব্যাখ্যা করা যায় কেন মাইকেল জর্ডান অন্য আধা ডজন বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের একত্রিত আয়ের চেয়ে বেশি আয় করতে পারে। কারণ তিনি অসাধারণ দক্ষতা দেখান এবং সেই সাথে বিনোদন দেন। বর্তমানের তারকারা আগের যুগের চেয়ে বেশি আয় করেন, তবে এটি ভিন্ন বিষয়। কক বলছেন যে, এসব ব্যক্তি ৮০/২০ নীতির বাস্তবায়ন ঘটান কারণ তারা “স্বয়ংসিদ্ধির মাধ্যমে তাদের কাজে অসামান্য মূল্য যোগ করেন।”

সময় বিপ্লবী হওয়া

আমরা কিভাবে আমাদের সময় কাটাই তার কেবল এক ভগ্নাংশ থেকে আমাদের যাকিছু মূল্যবান তা পেয়ে থাকি। এ কারণে আমাদের দক্ষতা, সুখ বা আয় বৃদ্ধির জন্য আমাদের এই সময়কে প্রসারিত করতে হবে। কক বলছেন যে, আমাদের সমাজে সময় বিষয়ক উপলব্ধি বেশ নিচু মানের। “আমাদের সময় ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন নেই,” তিনি বলছেন, “আমাদের বরং সময় বিপ্লব প্রয়োজন।”

প্রথাগত ব্যবস্থাপনা হলো, আমরা যা করি সেটির প্রেক্ষিতে দক্ষতার বর্ধন এবং অগ্রাধিকার এর ক্ষেত্রে শ্রেয় হওয়া। কক বিশ্বাস করেন যে, সব ধরনের সময় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতার পেছনে আমাদের এই স্বত:সিদ্ধ অনুমান কাজ করে যে সময়ের ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনটি ভাল আর ভাল না তা আমরা জানি। দ্বিতীয় ত্রুটিটি হলো, সময় স্বল্প, আমাদের হাতে প্রচুর কাজ আছে, আর আমরা সবসময় সময়ের চাপে আছি।

সময়ের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদেরকে বিস্ময়করভাবে ভাল করতে হলে ৮০/২০ নীতি আমাদেরকে আমাদের “অগ্রাধিকারসমূহ”কে ভালমত পরখ করতে বলছে যেন সেগুলি আমারে জীবনের জন্য সবচেয়ে ভাল কিছু আনবে কিনা তার দিকে দৃষ্টি দিতে বলে। “বেশির ভাগ মানুষ ভুল জায়গায় খুব কঠোর শ্রম দিয়ে থাকে।” যেহেতু এই নীতি সবকিছু আসলে যেভাবে কাজ করে সে বিষয়ে প্রকৃতির সামঞ্জস্যহীনতাকে নির্দেশ করে, সেহেতু সময়ের বিষয়ে যুক্তিযুক্তভাবে প্রথাগত যুক্তিতে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। আমাদের সময়ের ১৫-২৫ শতাংশের উন্নয়নের মাঝেই “সামান্য মেরামতে বড় কার্য সম্পাদন” নিহিত। আমরা যখন থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২০ শতাংশ কাজে সময় ব্যয় করা শুরু করি তখন থেকে সময়ের অপ্রত্যাশিত ও অযৌক্তিক বাস্তবতা প্রকাশিত হতে থাকে। সবসময় সময় স্বল্পতায় ভোগার পরিবর্তে, লেখক বলছেন, বিপদজনক বাস্তবতা এমন হয় যে আমরা সময়ের প্রাচুর্যতায় প্লাবিত হই, তবে “এর অপব্যবহারে লক্ষীছাড়া হয়ে যাই।”

আপনি আলসেমি উপভোগ করতে পারেন যদি আপনি বুদ্ধিমানের মতো তা কজে লাগান

আপনি কি সবসময় প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেও চোরাবালিতে আটকে থাকেন? কক আমাদেরকে ভন ম্যানস্টেইন ম্যাট্রিক্সের কথা বলেন। ভন ম্যানস্টেইন একজন জার্মান জেনারেল ছিলেন। তার মতে, শ্রেষ্ঠ অফিসাররা সবচেয়ে কম ভুল করে, তারা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং তারা বুদ্ধিমান ও একই সাথে আলসেমিপ্রবণ মানুষ। কক বর্তমানের অর্থনীতির সাথে ম্যাট্রিক্সটির সামঞ্জস্য ঘটিয়ে বলছেন, তারকা হওয়ার জন্য “আলসেমিপূর্ণ বুদ্ধিমত্তার ভাব ধরতে হয়, ও তা প্রক্রিয়া করে প্রয়োগ করতে হয়।” কোনো কঠিন লক্ষ্য অথবা সাধারণভাবে প্রযোজ্য এমন লক্ষ্য যা আমাদের জন্য সম্মান নিয়ে আসবে বলে ভাবি, এমন লক্ষ্য ঠিক না করে, বরং যা আপনার কাছে সহজে আসে এমন কিছুর দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

মজার বিষয় হলো, পুঁজিবাদ মানুষকে ব্যক্তির নিজের পরিপূর্ণতার মাধ্যমে ব্যক্তিকে একই সাথে সফল ও ধনী হতে দেয়। ব্যক্তি নিজের পরিপূর্ণতার প্রচেষ্টায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্বল্পায়তনের হলেও একটি মূল্যবান ক্ষেত্র তৈরি করে। তথ্য প্রবাহের অর্থনীতির জগতে যখন আরো বেশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞান-দক্ষতার বিকাশ ঘটছে, তখন ৮০/২০ নীতি আরো বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে। বিষয়টি হলো, আমি যা করি, অন্য কেউ তা আমার মতো করে না – এটিই মূল নীতি। যেসব ক্ষেত্রে আপাত অসীম যোগান আছে বলে ধরা হয় যেমন অভিনয় ও ক্রীড়া এমন সব ক্ষেত্রেও এই নীতি কাজ করে। শত শত টেনিস খেলায়াড় পাবেন, কিন্তু আন্দ্রে আগাসি একজনই। সব ক্ষেত্রেই নেতৃত্বের মূল হলো কৌতুহল ও অবিরত শিখন।

৮০/২০ চিন্তাপ্রণালী আসলে নিরুদ্বেগ ও আত্মবিশ্বাসী উপায়ের সমন্বয়। এটি চিন্তাশীল ভাবনাকে কাজ লাগায় (অন্তদৃষ্টি খুলে দেওয়ার সুযোগ দেয়, হঠাৎ করে একবারে আচমকা কাজে লেগে পড়া না)। এতে সময়ের অপ্রথাগত ব্যবহার ও ভোগসুখবাদের দর্শনকে কাজে লাগানো হয়। কক বিশ্বাস করেন যে, আমাদের “কাজের বিনিময়ে সাফল্য” সংস্কৃতিতে ভোগসুখবাদকে ছিঁড়েফাটা করে ফেলা হয়েছে। ভোগসুখবাদ স্বার্থপরতা না। আমরা কোনো কাজ যত বেশি ভালবেসে করব, আমরা সেটিতে তত বেশি দক্ষ হবো এবং সেটি থেকে অন্যরা উপকৃত হওয়ার সুযোগও বাড়তে থাকবে।

শেষ কথা

৮০/২০ নীতির বইটি যেন একটি রেসিপি বই যা আমাদেরকে ইঁদুর দৌড় থেকে বের করে এনে নিজের সম্ভাবনাকে মেলে ধরার সুযোগ করে দেয়। বইটি দেখিয়ে দেয়, সাধারণ তুচ্ছ বিষয়গুলি কিভাবে আমাদের জীবনকে আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরে থাকে, আর “ব্যস্ততার” অভিযোগটি আসলে লক্ষ্যহীনতাকে কিভাবে লুকিয়ে রাখে। এসবই আত্তোন্নয়ন ধারার বইপত্রের সাধারণ কথা কিন্তু কক একে বিশেষত্ব দিয়েছে। “মহাবিশ্বের নীতির বিরুদ্ধে কাজ করার চেয়ে সে অনুযায়ী চলাই ভাল,” এমন যুক্তিকে কিভাবে অস্বীকার করবেন?

বইটি একই সাথে ব্যবসায়িক জগতের বই ও চমকপ্রদ জীবন নির্দেশনা যার মাধ্যমে বর্তমানের অর্থনৈতিক দুনিয়ায় সাফল্যের কিমিয়া বোঝা যায়। রিচার্ড কক জোসেফ ফোর্ডের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ঈশ্বর দুনিয়া নিয়ে পাশা খেলতে পারেন, কিন্তু পাশার বাক্স তো সব সময় ভর্তিই থাকে। ৮০/২০ নীতি এটি তুলে ধরে যে, মহাবিশ্ব “খুবই অস্থিত এবং এ বিষয়ে ভাবীকথন সম্ভব” এবং এর মাধ্যমে আমাদেরকে বোঝায় যে আমরা পক্ষে-বিপক্ষের সম্ভাবনাকে আমাদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারি। আমরা যা ভালবাসি না এমন কিছুতে “উৎকর্ষ” অর্জনের পেছনে লেগে না থেকে নিজের অনন্য প্রতিভাকে প্রকাশ ও শান দেওয়াই মূল কথা। বড় বড় পুরস্কার আসলে কেবল উৎকৃষ্ট কাজের জন্য না, বরং বিশিষ্ট কাজের জন্য বরাদ্দ হয়।

রিচার্ড কক
রিচার্ড কক একজন সফল উদ্যোক্তা ও বেস্টসেলার বইয়ের লেখক। তাঁর পেশাদারিত্ব মূলত ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং এ এবং এই সূত্রে তিনি ইউরোপ-আমেরিকার সুপরচিত বিভিন্ন কর্পোরেশনে পরামর্শদাতার কাজ করেছেন। তিনি যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল গ্রুপকেও পরামর্শ দিচ্ছেন। বর্তমান বইটি যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়া ও ইউরোপে বেস্টসেলার বইয়ের অবস্থান অর্জন করেছে এবং অন্তত ১৮টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এই বইয়ের অনুগামী হিসেবে এসেছে ‘দ্য পাওয়ার ল’জ: দ্য সায়েন্স অব সাকসেস’ এবং ‘দ্য এইটি/টুয়েন্টি রেভোল্যুশন’। রিচার্ড বর্তমানে লন্ডন, মারবেলা ও কেপ টাউনের বাড়িতে বাস করেন।

অনুবাদ-রূপান্তর©হাসিনুল ইসলাম
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:০৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×