হে কবি,
সেই বাইশে শ্রাবণ আজ—
এই দিনেই তোমার মহাপ্রয়াণ—
নশ্বর ধরাধামে আজও যে অবিনশ্বর হয়ে আছে
যে দিন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে হয়ে;
তবু রেখে গেলে পদচিহ্ন তুমি প্রতিটি বাঙালি জীবনের মননে
তাই তো চির ভাস্বর থেকে গেলে
সরচিত কবিতায় গল্প গানে;
আজও তোমায় রাখিগো মনে নশ্বর জীবনের
হে চিরো অভিমানী।
. থেকে গেলে মিশে গেলে বাংলার ষড় ঋতু পরিক্রমায় হাসি গানে
চিরকালীন এক চেতনা হয়ে।
হে কবি,
তুমি হৃদয়ের কথা বলে গেলে এতটাই
হৃদয় গ্রাহি করে সহজে অনুধাবনে হৃদয়ের গহীন থেকে আবেগে
হৃদয়ের সিংহাসনে তাই আসীন হয়ে
তোমার এই চিরোকালীন হয়ে ওঠা
প্রতিটি বাঙালির অন্তরে।
হে কবি,
তাইতো আজও অমর তুমি কর্মগুণে।
হে কবি,
তুমি যেন—
বাঙালির প্রতিদিনের, ভোরের উদয়রবি
গোধূলির অস্তরবি—রাত্রী নিশীথে
তিমির হারা এক স্নিগ্ধ চন্দ্রিমা,
দূর আকাশের —ধ্রুব তারা
দিকভ্রান্ত বাঙালি নাবিকের পথচলায়
দূরে থেকেও অনেক কাছের চিরোচেনা সত্তা এক।
হে কবি,
বিনম্র শ্রদ্ধা মম তব প্রতি
কবিতা লিখে লিখে তাইতো তোমারে স্মরি
এমন দিনে যেন আমি তোমারই উত্তর সরী।
কবিতা লিখে লিখে সতত
কবি হয়ে ওঠার প্রাণান্ত চেষ্টায় আমি সুখনিদ্রা পরিহরি।
প্রিযতামার প্রেমের অবজ্ঞা গরল পান করে
দিনে দিনে আরও তীক্ষ্ন ধারালো হয়ে ওঠি
প্রেম নিবেদনে কবিতায়।
হে কবি,
তোমার কবিতায়
অনায়াসে স্থান পায়
শতবর্ষেরও পরের কবি
যে পড়ে তোমার কবিতা গভীর শ্রদ্ধায় ।
হে কবি,
তোমার মহা প্রণয়ের
সুদীর্ঘ আশি বছর পরেও
তোমারে রেখেছি মনে সযতনে
তারই পরম্পরায় মম এই শ্রদ্ধা নিবেদন এই দিনে
যেন প্রতিনিয়তই সসম্ভ্রমে।
হে কবি,
দিনে দিনে তোমার বাড়ে দ্যুতি বাঙালির প্রাত্যহিক জীবনে।
হৃদয়ের ব্যাকুলতার
এতো সুন্দর বহিপ্রকাশ করিতে
কেহ আর পারেনি যে তোমার আগে পরে।
তাইতো প্রতিটি বাঙালির
হৃদয়ে তোমার এই চিরোনিবাস—
হে কবি,
করোনা আক্রান্ত এই দিনেও
তোমারে স্মরি
তোমার প্রয়াণ দিবস স্মরণে বিহগের সুর যেন বাজে
আমার সখল দুঃখের প্রদীপ জ্বেলে দিবস গানে
…………………………………………….
তুমি তাই আমারো পরাণ যাহা চায়
বলেই মন বিনিময় সূচনা মম—কালোত্তীর্ণ এক প্রেমে
হে কবি,
তুমি কেবলই নও ছবি
কতটা জীবন্ত যেন প্রতিদিনই।
হে কবি,
গভীর শোক তাই
এইদিনে তোমার মহা প্রণয়ে
বাঙালি যে হয়েছিলো রবি হারা
যদিও রয়ে গেলে তুমি— নিরবে।
কবিতা ভালোবেসে
আমি যে আজও বেঁচে আছি
কবিতার আশ্রয়ে তার হৃদয় জয় করার
সুদৃঢ় প্রত্যয়ে।
হে কবি হে গুণী
তুমি বাঙালিপনা
চিরন্তন শাশ্বত সুন্দরে আমারে করেছো ঋদ্ধ সমৃদ্ধ ঋণী
শ্রাবণ গগণ ঘিরে মেঘের আনাগোনায়
শূন্য জীবন নদীর তীরে
একেলা রহিনু বসে নীড়ে আজও
তাই তোমায় আজি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি।
বিঃ দ্রঃ কিংবদন্তী অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি রবীন্দ্র নাথকে আত্নস্থ করেছিলেন । তাঁর শেষ জন্মদিন বালাই ষাট অনুষ্ঠানে দেখলাম ছায়ানটের বেদীতে প্রিয় অভিনেতা জুতো পায়ে। যেখানে কেউ জুতো পরে ওঠেন না। রবীন্দ্র নাথ আর হুমায়ূন ফরীদি শুধু ব্যতিক্রম। ফরীদি এতটাই ভালবাসতেন কবিগুরুকে। এটা যেন তার একান্ত অধিকার।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:৪৩