চলছে.....
দুদিন পর রানা এলো বললো চলো বাসায় চলো, এটা কি খেলা,
আমি বললাম না যাবো না এটাতো খেলা না, আমি আর যাবো না,
রানা রেগে গেলো-যাবে না মানে যেতেই হবে,
রাগ হলো আমার বললাম-তোমার ইচ্ছামত....? গলায় যতটুকু জোড় আছে চিৎকার করেছিলাম সেদিন আমি যাবো না, এটা আমার শেষ কথা, কি করতে পারো করো,
রানাও চিৎকার করে আমাকে অনেক আজেবাজে কথা বললো, অনেকক্ষণ প্রায় এক ঘণ্টা চললো, আসে পাশের বিল্ডিং থেকে সবাই শুনতে পাচ্ছে আমাদের ঝগড়া, আমি কোনো দিকে কেয়ার করিনি সেদিন, ওদিকে আম্মা বিব্রত। সমাধান কিছুতেই হচ্ছে না, শেষ পর্যন্ত রানাকে বললাম এই মুহূর্তে আমার বাসা থেকে বের হয়ে যাও আর কোনোদিন আসবা না যাও....
রানা গজ গজ করতে করতে বাসা থেকে বের হয় গেলো....
এতকিছুর পরও হায়রে মায়ের জাতি তবু আমাকে বললো এটা তুই কি করলি? বাসা থেকে বের করে দিলি, নিতে আসছিলো চলে যাওয়াই উচিত ছিলো, সব মেয়েদের জীবনই এমন, মেয়েদের অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়। মনে মনে বললাম মা তুমি জানো না কি জটিল সে আমার কাহিনী, কিন্তু বলতে পারলাম না মুখ ফুটে এ কথা কি বলা যায়? শুধু কাঁদতে থাকলাম।
শুধু বললাম মা সমস্যাটা অনেক জটিল, আম্মা বুঝতে চাইলো না, আমার সাথে কথা বন্ধ করে দিলো।
দুতিন দিন কেটে গেলো আম্মা কথা বলে না, আব্বা আমাকে ডেকে বললো তোমার আম্মার সাথে কথা বলে সমাধান করো.... কি কথা বলবো, আম্মা কোনো কথাই শুনতে চায় না সরাসরি বললো আমি কোনো কথাই শুনতে চাই না, যত কষ্টই হোক রানার বাসায়ই তোমাকে থাকতে হবে, মানুেষ কি বলবে? সব মেয়েকেই কষ্ট করেই সংসার করতে হয়। খেয়ে দেয়ে রেডি হও আমি নিজে যেয়ে দিয়ে আসবো।
বুকের মধ্যে প্রচন্ড অভিমানে বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো..মা হয়েও তুমি বুঝলে না? কোনো কথা বললাম না,
আম্মার প্রতি জেদ হলো-কিছু বলবো না যত কষ্টই হোক সংসার করবো, যন্ত্র হবো রানা যা বলে তাই করবো। আম্মার প্রতি প্রচন্ড অভিমান বুকে নিয়ে সর্বনাশের পথে চললাম।
আম্মা দিয়ে আসলো রানার বাসায়, আরো ছোট হয়ে গেলাম আমি, তখনও পড়া লেখা শেষ হয় নাই কোথায় যাবো কি করবো মাথায় আসলো না। নিজ গৃহে পরবাসী হলাম আমি, নিজের অস্তিত্বকে বিলীন করে শুরু হলো অন্য জীবন।
তখন আর জীবনের উঠা নামা ছিলো না নির্বিকার চলছে জীবন, বরফ হয়ে শক্ত হয়ে গেছি আমি, এতটুকু উত্তাপ নিয়ে কেউ এলো না আমাকে স্বাভাবিক করতে। এমন কারো দেখা কি আমি পেতে পারতাম না? যে আমার চোখ দেখে আমার কষ্ট বুঝতে পারে! আমার কষ্টের ভাগ নিতে পারে!
স্বপ্ন ছাড়া বাস্তবে ভুলে গিয়েছিলাম জীবনের সব চাওয়া। কখোনো ভাবিনি কারো সাথে শেয়ার করা যায় আমার কষ্টগুলো।
কেনো ভাবিনি বলতো পারি না হয়তো তেমন নির্ভরশীল কারো দেখাই পাইনি।
পড়াশোনাটা যে ভাবেই হোক চালিয়ে যেতে হবে। সব কিছুর মধ্যেও ক্লাস মিস করিনি কখোনো। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবো তবুওতো একটা জগৎ হবে আমার সময় কাটানোর তারপর টাকার সমস্যাটাও একটা বড় সমস্যা ছিলো সেটারও সমাধান হবে।
চারুকলার সময়গুলি মোটামুটি কাটছে। ভালো খারাপের ভেদাভেদটা ইদানিং ভুলেই গেছি।
চলবে.......