somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনের কথা-৪৫(১৮+)

২১ শে অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চলছে....
হঠাৎ একদিন চারুকলায় আরিফ এলো। আমিতো অবাক কি ব্যাপার আপনি?
এলাম এমনি তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করছিলো। ভালো মেয়েটা ভালো আছো?
ভালো আছি। এখানে আসা আপনার উচিৎ হয়নি বাসায় আসতেন ?
বাসায় তোমাকে ভালো করে দেখা যায় না, এখানে প্রানভরে দেখতে পারবো তাই আসলাম। তোমার কি হয়েছে বলোতো? তোমার স্বাস্থ্য খুবই খারাপ হয়ে গেছে। সত্যি করে বলো, কোনো সমস্যা?
আরে না কোনো সমস্যা নেই। ভালো আছি। কত আপেক্ষিক শব্দটা, নির্বিঘ্নে বলে দিলাম মিথ্যে কথা।
তুমি যদি সত্যি খারাপ থাকো, রানার সাথে তোমার কোনো সমস্যা থাকে আমকে বলো। আমি এখোনো তোমাকে বিয়ে করতে রাজি।
আমি বললাম, কিযে বলেন আরিফ ভাই! অসম্ভব কথা বলবেন না।
চলো কোথাও ঘুরে আসি, আমি না করলাম, অনেক জোর করেছিলো আরিফ।
তারপর আরো কয়েকদিন এসেছিলো আরিফ।
মাঝে মাঝেই আবার ফোন করা শুরু করলো সে। ইদানিং আরিফ ফোন করলে রানা সরাসরি আমাকে দিয়ে দেয়।
হয়তো মনে মনে রাগ হয়, তাছাড়া আরিফকে চারুকলায় একদিন দেখেছে রানা।
সেদিন আম্মার বাসায় ছিলাম হঠাৎ করে রানা আরিফের কথা উঠালো, আমাকে সন্দেহ করলো, আমি কিছুতেই বিশ্বাস করাতে পারছি না তার ধারণা ঠিক না। এসব নিয়ে বেশ ঝগড়া চলছে। ঠিক ঐ সময় আম্মা এসে বললো আরিফ এসেছে। রানাতো আরো রেগে গেলো।
রানা বললো চলে যেতে বলো।
আম্মা আরিফের বিষয়টা জানতো।
আম্মা আরিফকে যেয়ে জিজ্ঞেস করলো তুমি কি সীমানাকে কে সত্যি ভালোবাসো?
আরিফ সরাসরি উত্তর দিলো হ্যাঁ ভালোবাসি।
তবে আগে কেনো বলোনি (দেখতে সুন্দর ছিলো তাই আম্মাও আরিফকে পছন্দ করতো) । যা হোক এখনতো বলে লাভ নেই।
যদি সত্যি তুমি ওকে ভালোবাসো তবে আর কোনোদিন ওর সাথে দেখা করতে এসো না। তোমাকে নিয়েই ওদের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে।
আরিফ বললো ঠিক আছে আর আসবো না, আজ ১ মিনিটের জন্য ওকে একটু দেখতে চাই,
আমি সিড়িতে যেয়ে দাড়াই ওকে একটু পাঠান।
আম্মা ডেকে নিয়ে, আরিফের সাথে দেখা করতে বললো- বাইরে আসলাম আমি, আরিফ দাড়িয়ে আছে।
আমি যেতেই আমার হাতটা ধরলো, আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি, কিন্তু আমার জন্য তোমার সংসারে অশান্তি হোক তা আমি চাই না।
আমি আর কোনো দিন আসবো না। তুমি একটা ভালো মেয়ে তুমি ভালো থেকো। তুমি ভালো আছো জানলে আমার ভালো লাগবে।
জানি না কেনো এত ভালো বলতো ও আমাকে!
তবে সত্যি আর কখোনো আসেনি আরিফ, কোনো দিন ফোনও করেনি আর। আজব একটা ছেলে।
ঠিকানাও জানি না।

বহু আহ্বান প্রত্যাখান করে রানার হাতই ধরে ছিলাম। জীবনের সত্যকে কোনো মুহূর্তে অস্বীকার করতে চাই নাই। হয়তো আমারই দোষ, নিজেকে স্ট্রং করতে পারিনি।

রানার অনাচার দিন দিন বাড়তে লাগলো, কোনো রাতেই মুক্তি পেতাম না, প্রতি রাতেই চলতো আমাকে নিয়ে তার এই অদ্ভুত খেলা।
প্রতি রাতেই চলতো একই ঘটণা, আমার এক বিন্দু অনুভুতি ছাড়া, কখোনো কখোনো ব্যাপারটা রেপ পর্যায়ে চলে যেতো, শারীরিকভাবে আহত হতে হতো........। শুধু ভাবতাম কি করে একটা মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে এতো কষ্ট দিতে পারে। আমি এর শেষ দেখতে চাই কত কষ্ট সে আমাকে দিতে পারে। তবে ভীতিটা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকলো রাত আসলেই কেমন যেন ভয় করতো আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেতো। প্রকৃতির কাছে শুধু একটাই চাওয়া তখন আমার, আমাকে শক্তি দাও।
যে আমি ভালোবাসাকে অনুভব করতে চেয়েছিলাম পা থেকে মাথা পর্যন্ত আদর আর পূর্ণ মমতায় ভরপুর, অবারিত মায়া আর তীব্র অনুভূতির প্রকাশ। সেই আমার জীবনেই কি রোজ রাতে ধর্ষিত হওয়া লেখা ছিলো?
অবাক পৃথিবী, অবাক মানুষের চাওয়া।
জীবন জুড়ে যার কষ্টে ছাওয়া, তবু তার আজও স্বপ্ন আছে আজও চাওয়া আছে।
হয়তো তাই বেঁচে আছি।
জীবনের চলমান পথে থমকে দাড়ানোর কোনো অবকাশ নাই।
ক্লান্তিহীন পথচলা।
স্বপ্ন দেখতে ভয় পাই দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি চাই! মুক্তির পথ নিজেরই খুঁজে বের করতে হয় কেউ এসে মুক্ত করে নেয় না। এখন মনে হয় ওটা আমার স্বেচ্ছা নির্বাসন ছিলো।
দিন যাচ্ছে মাস যাচ্ছে, জীবনের গতি অপরিবর্তনশীল। সব মেনে নিয়ে চলছি। টেলিফোনের নৃৃশংস খেলা চলমান।
কোনো রাতে মুক্তি নেই তবে যদি কখনো দিনের বেলায় কখোনো কিছু করলে অন্তত টেলিফোনে কথা বলতে হতো না।
একদিন দিনের বেলায় ঐ সময় হঠাৎ খেয়াল করলাম জানালার পর্দা একটু সরানো সে বাইরে দিকে তাকিয়ে আছে। ঐ সময় আমার দিকে না তাকিয়ে বাইরের দিকে তাকানো কেনো! অবশ্য ঐ সময় পর্দা যে সরানো এটা আমারও খেয়াল করার কথা না, এতকিছু খেয়াল করার সময় ওটা নয়। যেহেতু আমার অনুভূতিগুলি তখন বিলুপ্তির পথে তাই হয়তো খেয়াল করেছিলাম।
রানাকে বললাম পর্দাটা টেনে দাও কেউ দেখবে। রানা পর্দাটা টানলো না, বললো কেউ নেই।
এর পর থেকে দেখলাম রাতের চেয়ে দিনেই বেশি ইন্টারেস্টড, তবে রাতেও যে বাদ যাচ্ছে তা না, একদিন দিনের বেলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে, আমি আগেই জানালার পর্দাটা টেনে দিলাম,
একটু পর দেখলাম রানা পর্দাটা সরিয়ে দিয়েছে, কারণ বুঝলাম না
ঠিক মাঝামাঝি সময়ে লক্ষ্য করলাম...সে ঐ সময় জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বাইরে দেখার চেষ্টা করলাম, যা দেখলাম সত্যি কঠিন মনে হলো, একজন মহিলা দাড়িয়ে সব দেখছে।
প্লিজ রানা পর্দাটা টেনে দাও। একজন মহিলা দাড়িয়ে আছে।
রানা বললো থাক না কি হবে?
নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিলো, তবে কি আমার জীবনযুদ্ধে এ কোন নতুন সমস্যার উপসর্গ।
প্রতিটা রাত ছিলো ভয়ের, আতংকিত থাকতাম সব সময় এখন কি তবে দিনটাও আতংকের হয়ে গেলো।
এ কেমন চাওয়া মানুষের, তার এই সেক্স করাটা অন্য কেউ দেখলে সেটা তার ভালো লাগছে! এটা কি হয়?
ফোনে ছেলেদের সাথে উল্টাপাল্টা কথা বলতে বাধ্য করছে, এখন আবার এই সময় মানুষকে দেখিয়ে সুখ পাচ্ছে...? আমাকে আর কোথায় নামাবে রানা। নিজেকে একটা রোবট মনে হলো, রানা খেলছে আমাকে নিয়ে চরম খেলা।
জানালার পর্দা সরানো নিয়ে অনেক বুঝালাম রানাকে, মানুষে দেখলে তোমার কি লাভ,
আর রানা বলতে থাকলো তোমার কি অসুবিধা।
আমি বললাম আমার লজ্জা আছে.......... সেটাই আমার অসুবিধা। এই নিয়ে রোজ জোরাজুরি চলতে থাকলো।
শুরু হলো আমার নতুন যন্ত্রণা। কোথায় যাবো কি করব! দিশেহারা আমি, জীবন থেকে এমনি করেই কি সুখ হারিয়ে যায়। আছে শুধু ভীতি।
আরও অনেক কথা যা বলা যায় না......নৃশংস জঘণ্য........

যতভাবে সম্ভব আমাকে ব্যবহার করে নিয়েছে রানা। শুধু এই বিষয় না, প্রতিটা বিষয়েই। তার মা বোনের খারাপ ব্যবহার আর রানার নিরব নির্যাতন কি করে মেনে নিয়েছিলাম আজ সত্যি হিসাব মিলাতে পারি না। কোথায় যেতাম আমার তো যাওয়ার কোনো জায়গাও ছিলো না।
টেলিফোনের সব ছেলের কথা হয়তো লেখা সম্ভব না তবে দু’একটা না বলে পারছি নাÑ
কোনো এক রাতে একটা ছেলের সাথে কথা বলছিলাম যথারীতি রানার কাজ রানা করছে, ছেলেটা অনেক ইমোশনাল ছিলো আমাকে এমন করে আদর করছিলো মনে হচ্ছিলো আমাকে সত্যি যেনো সে ছুঁয়ে দিতে চায়, সে বার বার বলতে থাকলো তোমাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে আমি দেখতে চাই, তোমাকে ভেবেই আমি অস্থির তোমাকে আমি দেখতে চাই, এইরকম অনেক ভালোবাসার কথা বললো এক পর্যায়ে সে বলে ফেললো আমার সন্তান আমি তোমাকে দিতে চাই, তুমি নেবে? প্লিজ তুমি না করো না। ইমোশনের চরম শীর্ষে সে তখন। আমি নিশ্চুপ.....
এক পর্যায়ে তাকে শান্ত করার জন্যই বললাম ঠিক আছে নেবো। রানা তখনও তার কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি মূহুর্ত মনে মনে বলেছি রানা আমাকে মুক্তি দাও।
আমি কাঁদছিলাম ছেলেটা কি করে যেনো বুঝে গেলো বললো প্লিজ তুমি কাঁদবে না আমার কষ্ট হয়। তোমার কি অনেক কষ্ট? তোমার সব কষ্ট আমি মুছে দেবো। আমি তোমার হবো।
তুমি চোখ বুজে গভীরভাবে ভাবো আমার সন্তান তোমার পেটে ঐশ্বরিকভাবে আমার সন্তান তোমার পেটে আসবে আমি মন প্রাণ দিয়ে তাই চাই, তোমাকে আমি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ আদরটুকু দিলাম, তুমি নিয়ে নাও।
সেদিন রানা বাইরে আউট করতে পারলো না ভিতরেই আউট হলো।
সত্যি আমি প্রেগনেন্ট হলাম। ওর কথাই ঠিক হলো? তারপর থেকে মনে হতো আমার বাচ্চাটা ঐ ছেলেটার, ঘটনাটা কাকতালীয়, তারপরও মনের ভিতর কেমন যেনো একটা প্রতিক্রিয়া হতে থাকলো আমার। ছেলেটার জন্য কেমন যেনো মায়া হতে লাগলো। কেনো যেনো ওর সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করলো রানাকে বললাম ঐ ছেলেটার কাছে আবার ফোন করো না!
জানতাম তা সে ফোন করবে না। তাও কেনো যেনো বলেছিলাম। যদি সত্যি কখোনো ওর সাথে কথা হতো আমি বলতাম সত্যি আমি তোমার সন্তানের মা হয়েছি, তোমার দেয়া ঐশ্বরিক সন্তান। তুমি ভালোবেসে আমায় দিলে যে! আমিতো ভালোবাসাই চেয়েছিলাম।
আর কখোনো কথা হয়নি ওর সাথে, জানানো হলো না আমার ছোট্ট কথাটা.......
আমিওতো মানুষ........................
২৮টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×