শরীরে যৌনাঙ্গ সঠিকভাবে না থাকলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটা ঠিক করা জায়েজ আছে। হিজড়া তারাই যাদের এই ধরণের শারীরিক সমস্যা আছে। কিন্তু যৌনাঙ্গের দিক থেকে সুস্থ কারও ইচ্ছা হল সে মেয়ে থেকে ছেলে হতে চায় অথবা ছেলে থেকে মেয়ে হতে চায় এবং সেই কারণে সে অস্ত্রোপচার করলো বা হরমোন নিয়ে ছেলে বা মেয়ে হয়ে গেল, এটা ইসলাম সমর্থন করে না। পশ্চিমের অনেক দেশের তরুণদের মধ্যে ট্রান্সজেন্ডার সহ এলজিবিটিকিউ হওয়ার প্রবণতা এখন প্রায় ২৫% এ পৌঁছেছে। সেখানে স্কুলের বাচ্চাদের কথা শুনে ডাক্তাররা তাদেরকে ছেলে থেকে মেয়ে বা মেয়ে থেকে ছেলে বানাচ্ছে। বাপ মাও এই ব্যাপারে বাধা দিতে পাড়ছে না। এগুলি নিয়ে রাজনৈতিক এবং সামাজিক ইস্যু তৈরি হচ্ছে।
পশ্চিমের অনেক দেশের আইনে ট্রান্সজেন্ডার হওয়ার জন্য তার মনের ইচ্ছাই যথেষ্ট। শরীর সংশোধনেরও প্রয়োজন পড়ে না। অনেক বিজ্ঞানী বলে থাকে যে অনেক মেয়ের ব্রেনের গড়ন ছেলেদের মত অথবা ছেলের ব্রেনের গড়ন মেয়ের মত তাই তারা মেয়ে থেকে ছেলে বা ছেলে থেকে মেয়ে হচ্ছে। এগুলির ভিত্তি এখনও সুপ্রতিষ্ঠিত না। এগুলির বিপরীতেও অনেক বিরুদ্ধ মতও আছে। আর তাছাড়া ৩০ হাজার মানুষে একজন এরকম হতে পারে। কিন্তু যে হারে ট্রান্সজেন্ডার বাড়ছে সেটা এক ধরণের সামাজিক সংক্রমণের কারণে হচ্ছে। লাখে লাখে মানুষ ট্রান্সজেন্ডার হয়ে যাচ্ছে যার সাথে এই ধরণের পরিসংখ্যানের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া যৌনতা সংক্রান্ত অনেক বিষয়ের সাথে শরীর, ব্রেন ছাড়াও পারিপার্শ্বিক পরিবেশেরও প্রভাব থাকে। দেখা যাচ্ছে জেলে গেলে নারী বা পুরুষ সমকামি হয়ে যাচ্ছে। তার আগে সে সমকামি ছিল না। আবার জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে আবার আগের মত হয়ে যাচ্ছে। তাই পরিবেশের প্রভাব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকটা জরীপে দেখা গেছে যে কিছু মানুষ তাদের জেন্ডার পরিচয় কয়েক বছর পরে পরিবর্তন করে আগের জায়গায় এসেছে। তাই মনে মনে ভাবনার ভিত্তিতে বারবার জেন্ডার পরিবর্তন কোন ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে না।
শুধু ব্রেন বা হরমোন দিয়ে বিচার করলে হবে না। যেমন পুরুষ হরমোনের সাথে অপরাধ প্রবণতার সম্পর্ক আছে। কিন্তু তার মানে এই না যে পুরুষ হরমোন বেশী থাকলেই সে অপরাধী হবে। মানুষকে সামাজিক আচরণ শিখতে হবে এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
যে সব দেশে ট্রান্সজেন্ডারের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে সেই সব দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এবং সমাজেও এই মতের বিপক্ষে বহু মানুষ আছে। পশ্চিমে ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ নিয়ে যা হচ্ছে সেটা আল্লাহতায়ালার নির্দেশের বিপরীত। তাই মুসলমান হিসাবে আমাদের এই মতবাদের বিরুদ্ধে থাকা উচিত। আবার পৃথিবীর কোন বড় ধর্ম এই ধরণের কার্যকলাপকে সমর্থন করে না। তাই হিন্দু, খৃস্টান, বৌদ্ধ বা মুসলিম আমরা যে ধর্মের অনুসারীই হই না কেন আমাদের উচিত হবে বাংলাদেশে যেন এই ট্রান্সজেন্ডার গ্রুপ তৈরি না হয়। আমাদের দেশের আইনে এগুলি নিষিদ্ধ এবং এই নিষেধাজ্ঞা যেন সদা বজায় থাকে। প্রকৃতি বিরুদ্ধ কোন মতবাদ এই দেশে আনা যাবে না। পশ্চিমেও এই মতবাদের কারণে সামাজিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই আমাদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে। ইসলামে সমকামিতা এবং ট্রান্সজেন্ডার কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।