somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেসবুকের গল্প-কথা . . . .

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ফেসবুকের শুরুটা বলি আজ তাহলে ;) আরেহ নাহ! :P ফেসবুক কিভাবে শুরু হলো তা বলবো না B-) আমি বলতে যাচ্ছি কিভাবে আমি ফেসবুকে আসলাম আর তাকে বুঝতে শুরু করলাম সেই কথা :)

সময়টা ২০০৬ এর শেষের দিকে। নেটে পড়ে আছি অনেকদিন হয়। ও হ্যাঁ তখন নেট মানে হচ্ছে আফতাব আইটি (Aftab IT) বা BOL (Bangladesh Online Limited) এর কার্ড আর টেলিফোন লাইন ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগ। তাও আবার কাটায় কাটায় মিনিট হিসেব করে, সময় শেষ তো লাইন অফ, কোন ছাড় নেই :|

তো সেই সময় মূলত নতুন নতুন সাইট আর ব্লগে ঢু মারতাম আর সামুতে পড়ে থাকতাম। বিশেষ কাউকে না চিনলেও দুই একজনের লেখা রেগুলার ফলো করতাম। আরো একটা কাজ করতাম। মজা নিয়ে নিজের নামের আরো কেউ আছে কিনা কোথাও সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করতাম। আর মজার ব্যাপার হলো যে, তখন এমন নিজের নামের সাথে মিল আছে এমন দুইজনের সন্ধানও পেয়ে যাই। তবে তারা কেউ বাংলাদেশের ছিলো না। দুইজনই কোলকাতার, আবার তাদের মাঝে একজন ইউরোপ প্রবাসী B-) B-)

দিন ভালোই কাটছিলো ঐভাবে। অল্প সময় নেট আর অল্প স্বল্প জ্ঞান আহরণ। প্রায় সব ওয়েব পেইজ গুলিকে পরে পড়বো ভেবে হার্ডডিস্কে সেভ করে পড়তাম, আর অনলাইনে সার্চ আর কমেন্ট করার কাজ করতাম। যদিও প্রতিটা সাইটে আলাদা আলাদা রেজিস্ট্রেশন করার বিপরীতেই কমেন্ট করতে দিতো সেই সময়ে।

দেখতে দেখতে এভাবে ২০০৭ চলে আসলো। তখন সাইবার ক্যাফে আর ইন্সটিটিউটের ল্যাবে বসে ইন্টারনেটে সময় কাটাই। ল্যাব এসিস্টেন্টের সাথে খাতির থাকায় ক্লাসের পরেও তার সাথে ল্যাবে কাজ করতাম আর ইন্টারনেট একসেস করতে পারতাম। তখন একটা সাইটে একটা সফটওয়্যার রিভিউ দেখলাম। সফটওয়্যারটা অনেক কাজের কাজী। আর তাই তা পাওয়ার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠলাম। কিন্তু সে যেই লিংক দিয়েছে তা ততদিনে ডেড লিংকে রূপ নিয়েছে।

তখন তার ঐ পোষ্টও প্রায় ২ মাসের পুরানো হওয়ায় শুধু মন্তব্য করে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছিল না। আর সাইটেও পাচ্ছিলাম না তখন তাকে। সে জন্যেই অন্য চিন্তা শুরু করলাম। সাইট ঘাটিয়ে তার পরিচয় আর মেইল খুঁজে বের করলাম এবং তাকে মেইল করলাম। সেই মেইলের রিপ্লাই ও পেলাম প্রায় সপ্তা খানিক পর। আমাকে বললো ফেসবুকে যোগাযোগ করতে। তখনও আমার তো ফেসবুক একাউন্ট নাই, আর তার সাথে যোগাযোগ করার উদ্দেশ্যেই সেই ফেসবুকে রেজিস্ট্রেশন করি তখন।

রেজিস্ট্রেশন শেষে তার মেইল এড্রেস দিয়ে তাকে ফেসবুকে খুঁজে বের করলাম। কিন্তু যখনই তার কোন একটা পোষ্টে কমেন্ট করতে গেলাম তখন বুঝতে পারলাম কারো সাথে যোগাযোগ করতে হলে তাকে আগে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে হবে। নতুবা তার পোষ্টে কমেন্ট করতে পারবো না আমি। তাই আইডির লিংক নিয়ে রিকোয়েস্ট দিয়ে আবারও মেইল দিলাম তাকে, আমাকে এড করার জন্যে। সে এড করে আমাকে সেই সফটওয়্যার এর লিংক দিলো এবং তারপর তার সাথে আরো কয়েকবার শুধুমাত্র প্রয়োজনেই কথা হয়েছিলো এই ফেসবুকে। কিন্তু আমার ফেসবুক তখনও ঐ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।

২০০৮ এর শেষের দিকে ব্লগে খুব সময় দিচ্ছি। টেকি ব্লগ কোনটাই বাকি নেই যে সকাল সন্ধ্যায় চোখ বুলাই না। তবুও টেকটিউন্স আর বিজ্ঞানী.অর্গে ভালো সময় কাটতো আমার। নিজে কিছু পারতাম না, কিন্তু সবার কাছ থেকে শিখতে চেষ্টা করতাম। তখন আবার কয়েকজন টেকি বন্ধু বললো ফেসবুকের কথা। আমি তো আইডি যে আছে সেইটাই ভুলে গিয়েছিলাম ততদিনে। রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে দেখি আগে রেজিস্ট্রেশন করা আছে, তাই পাসওয়ার্ড রিকোভার করে লগইন করলাম। তখনও দুই তিনদিন চালিয়ে ফের অফ। আর কোন খোজ খবর নেই।

ওদিকে ইন্সটিটিউটের অনেক ফ্রেন্ড তখন ফেসবুক কে লাভবুক বানিয়ে ফেলেছে। যাকেই দেখি ফেসবুকে তাকেই দেখি গার্লফ্রেন্ডের সাথে মেসেজ আদান প্রদান আর সব পোষ্ট গার্লফ্রেন্ডকে উৎসর্গ করে। তাই ঐদিকে ফেসবুকে আইডি আছে বলতে লজ্জা লাগতো, পরে লোকে কি মনে করে এই ভেবে :P

সব শেষে ২০১২ তে আবার ফেসবুকে সময় দেয়া শুরু করলাম। ইন্সটিটিউটের বন্ধুদের সাথে দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় তাদের সাথে যোগাযোগ রাখার মাধ্যম হয়ে দাঁড়ালো এই ফেসবুক। সবাই মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করলেও ফেসবুক আইডি তো আর পরিবর্তন করছে না তাই এটাই ভরসা হয়ে দাঁড়ালো আমার জন্যে :|

মৌলিক বিষয় গুলি তখন থেকেই বুঝতে শুরু করলাম ফেসবুকের। সাইটে যেমন ড্যাশ-বোর্ড থাকে এখানে পুরোটাই তার মিল আছে তবে ভিন্ন ভাবে সব উপস্থাপন করা হয়েছে। ট্যাগ করা শিখলাম, শিখলাম ফটো আপলোড এবং তাতে ট্যাগ করে বন্ধুদের যুক্ত করার বিষয়টা। তবে কখনোই অসামাজিক কোন পেইজ বা গ্রুপে যুক্ত ছিলাম না, এবং প্রশ্ন করতে পারে এমন কারো সাথে বন্ধুত্বও তৈরি হয় নি। কিন্তু নিজেকে ঠিক ঐভাবে মুক্ত মনে হচ্ছিলো না প্রোফাইলটাতে :|

২০১৩ এর মে মাসের ২৬ তারিখে একটা আইডি খুললাম যাতে আমার কোন পরিচিতি নেই এবং নেই পরিচিত কেউ সেখানে। সেখানে এসে হুট করেই অনেক কিছুর সাথে জড়িয়ে গেলাম। পরিচিত হলাম নতুন সব অপরিচিতের সাথে। দেখলাম একটা পরিবার এবং তাকে জড়িয়ে অনেক গুলি উজ্জ্বল মুখ। তাদের সাথে এই অল্প সময়ের পথ চলাতে অনেকের সাথে তৈরি হয়েছে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আর পেয়েছি কিছু বড় ভাই আর বোন :) :)

যে ভালবাসা পেয়েছি তার কোন কিছুই হয়তো ফেরত দেবার যোগ্যতা নেই আমার। তবে সবার মত এর খারাপ দিক গুলিকে বলবো না। অনেক ভাল কিছুই লুকিয়ে আছে এই ফেসবুক পাড়াতে...... :)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৯
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×