somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের চোখের যত্নB-)B-)

১৮ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৫:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(আগে পোষ্ট হয়ে থাকলে সরি)/:)
আপনাকে হয়তো প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটার নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে; এজন্য অনবরত তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে মনিটরের দিকে। হয়তো স্ক্রিনে পড়তে পড়তে আগের লাইনের সঙ্গে পরের লাইন মিশে যায় বা একটি শব্দ পার্শ্ববর্তী শব্দের সঙ্গে মিশে যায়; মনিটরে কাজ করতে করতে মাথা তুললে কিছুক্ষণের জন্য দূরের জিনিস ঝাপসা দেখায়; কখনও বা একটি জিনিসের দুটো ইমেজ দেখা যায়। এক্ষেত্রে আপনার আশঙ্কা হতে পারে, নিয়মিত কম্পিউটারে কাজ করতে করতে আপনার চোখের কোনো ক্ষতি হলো কিনা?

কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোম বা সিভিএস
আপনাকে আশ্বস্ত করে বলা যায়, কম্পিউটারে কাজ করার জন্যই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—এখনও এমন অভিযোগ শোনা যায়নি। তবে কম্পিউটারের মনিটর নিয়ে যারা নিয়মিত কাজ করেন তাদের প্রায় ৬০-৭০ ভাগ কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোম বা সিভিএস দ্বারা আক্রান্ত। মনিটর কিন্তু এই সিন্ড্রোম তৈরি করে না। আসলে চোখের গঠনগত, কার্যগত বা জৈব রসায়ন ঘটিত অসঙ্গতির কারণে যদি কম্পিউটারে স্বাভাবিক কাজের বিঘ্ন ঘটে, তবে সেই পরিস্থিতিই হলো কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোম বা সিভিএস। কারও যদি সিভিএস আসে এবং তা যদি আমলে না নিয়ে কাজ করার প্রবণতা থাকে, সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে নানা রকম জটিলতার জন্য হয়তো কম্পিউটারের কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে বা কম্পিউটারে কাজ করা থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকতে হতে পারে।

এজন্য যা যা করতে পারেন
এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে মনিটর এবং চোখের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া উচিত। যেমন—
১. মনিটরের গুণগত মান ভালো হওয়া চাই।
২. কম্পিউটারের মনিটর যেন সব সময় চোখের লেভেল ৪ ইঞ্চি-৮ ইঞ্চি নিচে এবং ২০ ইঞ্চি-২৮ ইঞ্চি দূরে থাকে। মনিটরটা সামান্য উপর দিকে রাখতে হবে।
৩. মনিটরের উজ্জ্বলতা এবং কনট্র্যাস্ট লেভেল চোখের সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত। বর্ণের আকার যতটা সম্ভব বড় এবং কম্পিউটার স্ক্রিনের ব্যাকগ্রাউন্ডের রং চোখের পক্ষে আরামদায়ক হওয়া উচিত।
৪. ঘরের আলো এমনভাবে রাখতে হবে যাতে সেই আলো সরাসরি মনিটর বা চোখের ওপর এসে প্রতিফলিত না হয়।
৫. কি-বোর্ড হাতে রপ্ত হলে ভালো, না হলে কি-বোর্ডকে মনিটরের যতটা সম্ভব কাছে রাখতে হবে যাতে মনিটর থেকে কি-বোর্ডে চোখের মুভমেন্ট কম হয়।
৬. যদি অফিসঘর অপরিসর হয় এবং বাইরের দৃশ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, তাহলে মনিটরের উল্টো দিকে বা প্রয়োজনে স্ক্রিন সেভাবে এমন কোনো ল্যান্ডস্কেপ রাখতে হবে যেটা অবসর সময়ে চোখকে আরাম দেবে।
চোখের সাবধানতা নিয়ে কথা
চোখের পলক স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ১২-১৪ বার পড়ে। কিন্তু আমরা যখন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকি, তখন চোখের পাতা পড়ার হার অনেক কমে আসে। চোখের পাতা কম পড়ার কারণে চোখের উপরিভাগের আর্দ্রতা কমে যায়। যারা এসিতে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে এটা আরও ত্বরান্বিত হয়। একে ‘ড্রাই আই’ বলে।

বার বার চোখের পাতা ফেলতে হবে
চোখের পাতার অনেক কাজের মধ্যে একটা প্রধান কাজ হলো অশ্রুগ্রন্থি নিঃসৃত পানিকে চোখের মধ্যে সমভাবে ছড়িয়ে দেয়া; যাতে তা চোখের উপরিভাগের আর্দ্রতা, মসৃণতা, পুষ্টি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে বা বাড়িয়ে তোলে। এর অভাবে চোখের নানা উপসর্গ হতে পারে, যা সিভিএসের জন্য ভীষণভাবে দায়ী। সে কারণে প্রথম প্রথম খুব সচেতনভাবে বার বার চোখের পাতা ফেলার অভ্যাস করতে হবে। পরবর্তী সময়ে যা সু-অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে।

দরকার চোখের বিশ্রামের
সাম্প্রতিককালে কম্পিউটার জগতে ২০/২০ বা ৬০/৬০ আন্তর্জাতিক স্লোগান চালু হয়েছে, যার অর্থ আপনি কম্পিউটারে টানা যত মিনিট কাজ করবেন, ঠিক তত সেকেন্ড চোখকে বিশ্রাম দেবেন। কম্পিউটারে কাজ করার ফাঁকে উচিত ঘাড়ের দু’একটা ব্যায়াম করা এবং নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নিয়ম করে চোখেমুখে একটু পানি দেয়াা।
— চোখের ত্রুটির কারণে অনেককেই চশমা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু কম্পিউটারে কাজ করার ক্ষেত্রে চশমা একটা বিরাট অন্তরায়। এর থেকে রেহাই পেতে হলে আপনাকে নিতে হবে এমনই একটা চশমা যেটা আপনাকে কম্পিউটারে সাবলীলভাবে কাজ করতে সাহায্য করবে। অবশ্যই সেটা হবে এমন একটা চশমা, যেটা মনিটরকে দেখতে এবং একইভাবে কাছের জিনিস দেখতে সাহায্য করবে। অর্থাত্ যেটাকে কাছের এবং মধ্যবর্তী দূরত্বের কম্বিনেশন চশমা বলা হয়ে থাকে।
— স্ক্রিনটা ২০ ইঞ্চি-১৪ ইঞ্চিকে কাছের দূরত্ব ধরা হয়। চশমার উপরিভাগ দিয়ে মনিটর দেখা যাবে আর নিচের অর্থাত্ বাইফোকাল অংশ দিয়ে কাছের কাজ করা চলবে। অবশ্য এটা হাঁটাচলায় ব্যবহার করা যাবে না, সেক্ষেত্রে আলাদা আরেকটা চশমা রাখতে হবে। চশমার লেন্সে এন্টি রিফুলেকটিং কোটিংয়ের ব্যবহারও কম্পিউটারের কাজের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক কালে সমাদৃত হচ্ছে।

সচেতনতাই কাম্য
আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত এমন কোনো চোখের পরিষেবা কেন্দ্র চালু হয়নি, যেখানে কেবল সিভিএস সংক্রান্ত বিশেষ বিভাগ বা বিশেষজ্ঞ আছেন। তবে ইউরোপ ও আমেরিকার মতো কিছু কিছু উন্নত দেশে এ বিষয়ে প্রচুর কাজ হচ্ছে। বাস্তবতার তাগিদে এ ধরনের পরিষেবা আমাদের দেশেও চালু করা অত্যাবশ্যক। তবে যতদিন না তেমন কোনো পরিষেবা কেন্দ্র চালু হচ্ছে, ততদিন সবার সচেতনতাই কাম্য।
Click here
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×