somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাজ কামের গতি কমাইতে একখান সুযোগ্য বসই যথেষ্ট!

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়টা খুব সম্ভবত ২০১৪ হবে। একটা প্রতিষ্ঠানের সিরিজ ওয়েব সাইট (তাদের মোট ৮টা বিজনেস; আগে ৩টার সাইট করেছিলাম) তৈরী প্রোজেক্টের অংশ হিসাবে একটা ওয়েব সাইটের কাজ হাতে ধরলাম। ওয়ার্ক ওয়ার্ডার দেবার সময় তারা মোট ২০টা জিনিষ ওয়েব সাইটে চাই-ই চাই এর লিষ্ট দিলেন। এর মধ্যে ৫টি তাদের ৭দিনের মধ্যে লাগবে; কারণ তাদের একজন বিদেশী পার্টনারকের কাজের অগ্রগতি দেখাতে হবে। কাজের রিপোর্টিং বস ২জন! একজন মূল গ্রুপের পক্ষ থেকে; অন্যজন ঐ স্পেসিফিক বিজনেসের পক্ষ থেকে।

তাদের কাজের ধরণ, চয়েজ ইত্যাদি আগে থেকে জানা ছিলো বলেই দেরী না করে দ্রুত কাজ শুরু করে দিলাম। আজ দুপুর থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় বলা চলে টানাই কাজ করলাম। জরুরী ২০টির ১৮টি শেষ; অতি জরুর ৫টি তো শেষই... মেইল দিলাম। ঘুমাতে গেলাম। বিছানায় শুয়েছি; এর মধ্যে মেইল রিপ্লাই পেলাম; বস কাজে সন্তুষ্ট! বললেন বাকি ২টি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে। হিসাব করলাম ঘুম থেকে উঠেই এই দুইটা কাজ নিয়ে বসতে হবে। যেহেতু তাদের কাজের ধরণ জানি; আজকে শেষ করলে আগামীকালই সব টাকা পেয়ে যাবো!

প্রথম মেইলটি এসেছিলো গ্রুপের পক্ষ থেকে; ঘুম থেকে উঠে দেখলাম দ্বিতীয় মেইল ইনবক্সে! ২য় রিপোর্টিং বস মেইল দিয়েছেন; ভাষা কিছুটা এমন, কিচ্ছু হয় নাই; কাজ পুরা না করে কেন বিরক্ত করছেন? ইত্যাদি ইত্যাদি! ভয়ে ভয়ে ফোন দিলাম, কাজে কোন সমস্যা কি না। তিনি জানালেন কাজ দেওয়া হয়েছে ২০টা; করেছেন ১৮টা! তাহলে হুদাই মেইল দিচ্ছেন কেন?

কোথায় ভেবেছিলাম ঐ দিনেই কাজ শেষ করে ফেলবো; মেজাজ খারাপ হয়ে বাকি ২টা কাজ শেষ করতে আরও ৪দিন লেগে গেলো!

================
এর পর কেটে গেছে বহু সময়। পরিবর্তন হয়েছে বহু কিছু। এখন আমি বিদেশে! কাজ করছি একটি প্রতিষ্ঠানে।
================
এই প্রতিষ্ঠানে আছি আজে প্রায় সাড়ে ৩মাস। গত কয়েকদিন থেকেই অফিসে বস লাপাত্তা! শুনলাম এমন নাকি হয়। গতকাল এক ভাইয়ের বাসায় থাকা টেবিল টেনিস খেলতে গিয়ে রাত ২টায় বাসায় ফিরেছি। মাত্র ২ঘন্টা ঘুমিয়ে সারা দিন পার করতে হবে। সময় মত অফিসে ঠিকই এসেছি; কিন্তু বুঝতে পারলাম এভাবে বেশিক্ষণ বসে থাকা সম্ভব নয়। বস যেহেতু নাই; সাড়ে তিন মাসের মধ্যে প্রথমবার কাজ ফাঁকি দিয়ে গেলাম ঘুমাতে। তার আগে অবশ্য বসকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেইল পাঠিয়ে দিলাম। প্রায় ২ঘন্টা ঘুম থেকে উঠে দেখি অফিসের বাকি ৩জন হাতপা ছুড়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কাজে তেমন একটা সাহায্য করতে পারলাম না।

এর মধ্যে বসের ফোন; তিনি আমাদের ৪জনের মধ্যে ২জনকে খুব ঝাড়লেন যে তারা নাকি সকাল থেকে কোন কাজই করে নাই! আর আমার এবং ৪র্থ একজনের খুব খুব প্রসংসা করলেন; এবং বললেন, বি লাইক শফিউল এন্ড আবু সামি! মজার বিষয় হচ্ছে আবু সামি আমার চাইতে বড় রসিকতা করেছেন; তিনি আজ অফিসে এসেছেন মাত্র ২.৫ ঘন্টা পরে; অর্থাৎ আমি ঘুম থেকে ওঠার মাত্র কয়েক মিনিট আগে।

ব্যাস, লাঞ্চের পর অফিসে এসে দেখি ঐ যে দুইজন সকালে জান-প্রাণ দিয়ে খাটছিলেন আমাদের ২জনের কাজ এগিয়ে রাখতে, তারা ঝিমুচ্ছেন! তারা অলরেডি শফিউল - আবু সামির মত হয়ে বসে আছে!

** যারা ভাবছেন অফিসে গিয়ে ২ ঘন্টা ঘুমায় দিলাম, কাজ তো ফাঁকি দেওয়া হলো। হ্যাঁ মানছি ফাঁকি দিয়েছি; কিন্তু আমি ভাই সৎ মানুষ। সিগনেচার সীটে লিখে রেখেছি যে ২ঘন্টার ব্রেক নিয়েছিলাম। এবং সেটার ১ঘন্টা লাঞ্চের পরে অলরেডি পুশিয়ে দিয়েছি; বাকিটা ইন শা আল্লাহ আগামী কাল!

তো, যা বলছিলাম। মাঝে মধ্যেই এই ধরণের বসদেরকে চোখে পড়ে, বা তাদের গল্প শুনি। খুব অবাক লাগে, যখন দেখি বসেরাই আসলে কর্মোঠদের শত্রু হয়ে তাদের কর্মস্প্রিহা কমায় দেন। ক্যামনে পারেন বসেরা?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×