ইরানী দুতাবাস
রবিবার, ৮ই অক্টোবর, ১৯৯৬
ফজরের নামাজ পড়ে আবার ঘুমানো অনেক দিনের অভ্যাস। আজও ঘুমিয়ে ছিলাম। আম্মা ঢাক্কা দিয়ে তুলে বললেন, "বড় বিলাইয়ের সাথে ইরানী এ্যাম্বেসিতে যাবি?"। চোখে এত ঘুম, ইচ্ছা হলো বলি যাব না। তবু চুপ করে রইলাম। আরো ১০মিনিট পর কোনমতে চোখ খুলে বিছানা থেকে নামলাম।
ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে বলে দিয়েছিল ৮.৩০ এর মধ্যে ওখানে পৌছতে। আমি বড় বিলাইকে নিয়ে ৮.২৫ এ রওনা দিলাম। ১২টাকা ভাড়া। কিন্তু রিক্সাওয়ালা কিছুতেই ১৫টাকার নিচে যাবে না। বিশ্বরোড পর্যন্ত হেটে শেষ পর্যন্ত ১৫টাকাতেই যেতে হলো। তখন পৌনে নয়টা বাজে। ফাউন্ডেশনে পৌছে দেখলাম ৯.২০ বাজে। সোজা সংস্কৃতিক বিভাগের পরিচালকের রুমে গেলাম। ওখানে ৫/৬টি ছেলে আর ফরিদা বসেছিল। আমাদের আর জায়গা নেই দেখে ফরিদার গার্ডিয়ান উঠে বাইরে চলে গেলেন। আমি আর বড় বিলাই সোফায় বসলাম। এসময় পরিচালক আর তার সহকর্মিরা মাসুদ নামের একটি ছেলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছিলেন। এভাবে ফরম পূরন আর আরও নানা কাজ করতে করতে সাড়ে এগারটা বেজে গেল। আমরা রওনা হলাম।
এ্যাম্বেসিতে পৌছানোর পর প্রথমেই রাস্তায় জমে থাকা পানি ছোট হাই জাম্পে পার হলাম। এরপর মেইন গেট দিয়ে ঢোকার পর ওখানকার একজন কর্মচারী আমাদের বিল্ডিংয়ের পাশে সরু পথ দিয়ে একেবারে পিছনে চলে যেতে বললেন। আমার একটু খারাপ লাগল। যেন নিম্নমানের কেউ, সামনের গেট দিয়ে অফিসে ঢুকতে দিল না। অবশ্য দেখলে অফিস মনে হয়না। বাড়িই মনে হয়। সরু রাস্তা দিয়ে দুজন পাশাপাশি চলা যায় না। এরমধ্যে পথের পাশি সাড়ি করে টবে পাতা বাহারের গাছ। বিল্ডিংয়ের একেবারে শেষ প্রান্তে পৌছে ডানদিকে মোর নিলাম। এখানে ছোট একটা বারান্দা পেরিয়ে কাচের ঘরে ঢুকতে হয়। গেট খোলা নিয়ে হলো আরেক সমস্যা। আমাদের পরিচালক কয়েকবার টান মেরেও খুলতে না পেরে, ভিতরে বসা রিসেপসনিস্টকে কাচে নক করে ইশারা করলেন ভিতর থেকে খুলতে। তিনি আবার ইশারা করলেন, আবার চেষ্টা করেন। এবার সজোরে হ্যাচকা টান মেরে খোলা হলো। ভিতরে ঢুকলাম। ঘরের শেষ প্রান্তে রিসেপসনিস্ট এর টেবিল। এর আগে সাড়ি করে রাখা ৭/৮টা চেয়ার। যা আমাদের সংখ্যায় অপ্রতুল। পরিচালক সাহেব "লেডিস ফার্সট" নীতিতে ৩ কন্যাকে আগে বসতে বললেন। এরপর অন্যদের। এতে তাদের বসার আর জায়গা রইল না। মাসুদ উঠে পরিচালককে বসতে বলল। তিনি বসলেন। আমি উঠে সহকারী পরিচালক সাঈদ কাকুকে বসতে বললাম। তিনি কিছুতেই রাজি হলেন না। অগত্যা আমাকেই বসতে হলো। আমাদের ঘরে ঢোকার পর পরই রিসেপসনিস্ট ভিতরে চলে গিয়েছিল। এবার তিনি ফিরলেন আরেকজন লোককে সাথে নিয়ে। তিনি আমাদের ভিতরে যেতে বললেন। পরে যাতে অসুবিধা না হয় তাই পরিচালক আগেই বলে দিলেন, আমাদের সাথে ক্যান্ডিডেট ছাড়াও আরও ২জন আছে। একজন আমি, আরেকজন একটা ছোট ছেলের সাথে এসেছে। এ্যাম্বেসির ভদ্রলোক জানালেন কোন অসুবিধা নেই। সবাই একটা সরু প্যাসেজ পেরিয়ে একটা কাচদিয়ে ঘেরা ঘরে ঢুকলাম। এখানে ঘরের একপাশে সোফাসেট অন্যপাশে কার্পেটের উপর সাদা চাদর বিছানো। পরিচালক জিগ্যেস করলেন, নিচে বসবো? ভদ্রলোক বললেন, নিচেই ভাল, সোফাতে সবার জায়গা হবে না। আমরা লাইন করে বসলাম। বড়রা অন্যপাশে বসল। একটু পর একজন ইরানী ভদ্রলোক এলেন, মোটা একটু বেটে। তার সাথে ছিল কিছু ফারসী ফরম। এসব ফরম পূরন করার ফাকে আমাদের লাল চা দেয়া হলো। চিনিটা বোধ হয় ভাল ছিল না। কারন ২চামচ দেয়ার পরও চায়ে মিস্টি কম মনে হলো। আধা ঘন্টার ভিতর আমাদের কাজ হয়ে গেল। এবার ইরানী ভদ্রলোক ইংরেজীতে বললেন, "আমাদের সময় নষ্ট করার জন্য তিনি খুবই দু:খিত। অনেক ধন্যবাদ।" বুঝলাম, তার ইংলিশের দৌড় এ পর্যন্তই। সবাই বিদায় নিয়ে, ছেলেরা হাত মিলিয়ে সবাই আবার রিসেপসন ঘরে পৌছলাম। এখানে পরিচাল তাদের পত্রিকা "স্মরনীকা" এ্যাম্বেসির লোকের হাতে দিলেন। এরপর আমরা বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাম। ড্রাইভার একা গাড়ি নিয়ে শুকনো মুখে দাড়িয়ে আছে। পরিচালক তাকে বললেন, "আফসোস করোনা, শুধু চা খাইয়েছে"। গাড়িতে বসে আরেকবার আফসোস করে বললেন, "আর কিছু খাওয়ালোনা। তবে সৌদি আরবের এ্যাম্বেসির চেয়ে অনেক ভাল। ওরাতো কিছুই খাওয়ায় না। আর মিশরের এ্যাম্বেসির ব্যবহার তো খুবই খারাপ "। এরপর আমরা ইসলামিক ফউন্ডেশনের গেটে পৌছলাম কোন জ্যামে না আটকে, এটা বেশ আশ্চর্যের বিষয়। ওখানে পৌছানোর পর পরিচালক বলে দিলেন, আগামী কাল পাসপোর্ট আর ছবি নিয়ে আসার জন্য। আমিও চায়ের জন্য ধন্যবাদ দিলাম (ওরাও খাইয়েছিল)। এবার আমি আর বড় বিলাই ফাউন্ডেশন থেকে বের হয়ে বাসায় রওনা হলাম।
(শেষ)
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।