somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি প্রায় সুস্থ অবস্থায় এসেছি। তবে সত্য নয় যে তাদের চাপে অসুস্থ হয়েছি। মিথ্যা মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য দিলাম- এটাও সত্য নয়। তবে তারা সত্য নয় এমন কিছু আমাকে দিয়ে বলাতে চেয়েছিল যা আমি বলতে রাজি হই নাই।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৭:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ২৩ নম্বর সাক্ষী মধুসূধন ঘরামী জানিয়েছেন, পারেরহাট এলাকার কুখ্যাত রাজাকার দেলোয়ার সিকদার ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গণরোষে নিহত হয়েছে। তার পিতার নাম রসুল সিকদার। মধুসূধন ঘরামী আরো জানিয়েছেন, তার নিজের স্ত্রী শেফালী ঘরামী ১৯৭১ সালে ধর্ষণের শিকার হন। ঐ ঘটনায় ধর্ষণকারীর নাম তিনি বলেননি। তবে জেরার মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে যে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করায় কাসেম মাস্টার ৬/৭ মাস হাজত খেটেছেন। ১৯৭০ সালে বড় ভাই সাধু ঘরামী মারা যাওয়ার পর থেকে একই ঘরে একই সঙ্গে বড় ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীর মাথেই আছেন তিনি। এই সরকারের আমলে ২০১০ সাল থেকে তিনি এবং তার বৌদি দু'জনই বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন।

গত মঙ্গলবার সাক্ষ্য প্রদানকালে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর গতকাল বুধবার ২৩ নম্বর সাক্ষী মধুসূধন ঘরামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় হাসপাতালে বেড়ে শায়িত অবস্থায়। পুলিশ হাসপাতালের একটি স্টিলের খাটে তাকে হাজির করা হয় ট্রাইব্যুনালে। এ সময় তার সাথে একজন ডাক্তার এবং একজন স্বাস্থ্য সহকারী সার্বক্ষণিক নিযুক্ত ছিলেন। সাক্ষীর জন্য নির্ধারিত ডক সরিয়ে দিয়ে সেখানে এই সিট বসিয়ে জবানবন্দী নেয়া হয়। প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত বিভিন্নভাবে প্রশ্ন করে তার জবানবন্দী গ্রহণ করেন। বেলা ১১টা থেকে তার জবানবন্দী শুরু হয় যা শেষ হয় ৪০ মিনিটে। জবানবন্দীর পরপরই জেরা করা হয়। বেলা ১টার মধ্যেই জেরা শেষ হয়। ৮১ বছর বয়স্ক মধুসূধন ঘরামীকে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরাও বেশি জেরা করেননি। আদালতে সাক্ষ্যদানকালে তিনি চোখের পানি ফেলেন। তাকে জেরা করেন এডভোকেট মিজানুল ইসলাম ও এডভোকেট মনজুর আহমেদ আনসারী, এডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন, শাজাহান কবির প্রমুখ এতে সহযোগিতা করেন।
গতকাল আদালতের কার্যক্রম শেষে এডভোকেট মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মধুসূধন ঘরামীর জেরার মাধ্যমে প্রমাণ বেরিয়ে এসেছে যে, পিরোজপুরের পারেরহাটের কুখ্যাত রাজাকার দেলোয়ার সিকদার স্বাধীনতার পরপর গণরোষের শিকার হয়ে নিহত হয়। সেই দেলোয়ার সিকদার আর এই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এক নয়। সরকার পক্ষ কুখ্যাত রাজাকার দেলোয়ার সিকদারের অপরাধ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করেছেন। অথচ সাক্ষী মধুসূধন ঘরামী স্পষ্টই স্বীকার করেছেন যে, সেই রাজকার দেলোয়ার সিকদারের পিতার নাম রসুল সিকদার। মিজানুল ইসলাম আরো বলেন, মধুসূধন ঘরামীর স্ত্রী ধর্ষিত হয়েছিল এটা বলেছেন। কিন্তু কে ধর্ষণ করেছিল তার নাম তিনি বলেননি।

২৩ নম্বর সাক্ষী মধুসূধন ঘরামী গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে জবানবন্দী দেন তা নিম্নরূপ :
আমার ভাই নিকুঞ্জ মারা গেছেন ১৯৭০-এর আগেই। আমার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন পরে যখন সেনাবাহিনী নামে এবং লুটপাট হয় তার কিছু দিন আগে বিয়ে করেছি। আমার স্ত্রীর নাম শেফালী ঘরামী। আমার শ্বশুর বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার কচুবুনিয়া গ্রামে। আমার শ্বশুরের নাম শ্রীনাথ সিকদার। বিয়ের পরে স্ত্রীকে নিয়ে আমি আমার হোগলাবুনিয়া গ্রামের বাড়িতে আসি। বিয়ে করেছিলাম ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে। বিয়ের পরপরই পিরোজপুরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। ঐ সময় পিস কমিটি হয়। দানেস মোল্লা, মোসলেম মাওলানা, সেকেন্দার সিকদার, দেলোয়ার, আতাহার এরা পিস কমিটি গঠন করে। দেলোয়ারের টুকটাক দোকান ছিল। স্থায়ী দোকান ছিল না। ৪০ বছর আগের কথা স্মরণ নেই যে দোকানটি কোথায় ছিল। দেলোয়ার পরে নিজে দেলোয়ার সিকদার বলে পরিচয় দেয়। এই দেলোয়ার সিকদার আগে শুনি নাই তবে এখন শুনি সাঈদী। পিস কমিটি ছাড়াও এরা রাজাকার বাহিনী গঠন করেছিল। পিস কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গঠন হওয়ার পর এরা গ্রামে ঢুকে লুটপাট, হত্যা, অগ্নিসংযোগ করেছে। তারা যখন গ্রামে ঢুকতো তখন আমরা ঘুঘুর চেয়েও ছোট হয়ে থাকতাম। পালিয়ে বেড়াতাম।

হোগলাবুনিয়া গ্রামে একদিন রাতে এরা গিয়ে ৯ জন লোককে ধরে নিয়ে যায়। কারা ধরে নিয়ে যায় তা দেখি নাই। সকালে উঠে গ্রামের ৯ জন লোককে পাইনি। এরা হলো তরনী সিকদার, রামা কান্ত সিকদার, নির্মল সিকদার হরলাল মালাকার, আরেকটি ছেলের নাম জানা নেই, বাবার নাম লালু হালদার। আরেক বাড়ি থেকে খোকা সিকদার, তার ছেলে নির্মল সিকদার, আরেকজন জামাই ছিল। তার নাম জানা নেই। এর ৩/৪ দিন পরে আমার বাড়িতে হামলা করে রাজাকাররা বিকেল ৪টা/সাড়ে ৪ টার দিকে। আমি তখন ছিলাম না। আমার স্ত্রী সন্ধ্যার পরে আমাকে বলে যে তোমাকে মুসলমান করেছে সে এসেছিল। কারা এসেছিল জানি না। স্ত্রী বলে তুমি পালাও। আমার স্ত্রী আমাকে আরো বলেছে, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অসহ্য যন্ত্রণা, আমি আর বলতে পারছি না। আমার চিন্তা করো না। তুমি পালাও। কৃষ্ণ সাহা, গণেশ ডাক্তার এবং আমি এই ৩ জনই একদিনে বাজারে মুসলমান হয়েছিলাম মসজিদে বসে। ২/৩ দিন পরেই কৃষ্ণ সাহা ধনী লোক আল্লাহর নাম করেও বাঁচতে পারেনি। আমার নাম হয় আলী আশরাফ, কৃষ্ণ সাহার নাম হয় আলী আকবর। দেলোয়ার সিকদার আমাদেরকে মুসলমান বানায় এবং বলে তোমরা মুসলমান হলে বাঁচবে। নয়তো বাঁচবে না। মুক্তিযুদ্ধের পরে আমি আর মুসলমান থাকি নাই। কাউকে বলতে পারি নাই। অন্য ২ জনের একজন মারা গেছে। ভারতে চলে যায় গণেশ সাহা। লুটপাটের ৪/৫ মাস পরে অগ্রহায়ন মাসে আমার স্ত্রীর একটি বাচ্চা হয়। মেয়ে সন্তান হয়। তার নাম রাখা হয় সন্ধ্যা। মানুষে গঞ্জনা করে। তখন আমি আমার শ্যালক কার্তিক সিকদারকে বললাম কি করবো? সে বললো ভারতে নিয়ে যাই। তখন আমার স্ত্রী ও সন্তান ভারতে চলে যায়। এরপর আর তার সাথে আমার দেখা হয়নি। আমি আর বিয়ে করি নাই। তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের কাছে আমি জবানবন্দী দিয়েছি।

বেলা পৌনে ১২ টায় মধুসূধন ঘরামীর জবানবন্দী শেষ হয়। এর পরপরই তাকে জেরা করা হয়।

জেরার বিবরণ নিম্নরূপ:

প্রশ্ন : আপনার মেয়ের নাম সন্ধ্যা হিন্দু মতে রেখেছিলেন?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : আপনাকে যে মসজিদে নিয়ে যায় ঐ মসজিদের ইমাম সাহেবের নাম বলতে পারেন?

উত্তর : সে লোক মারা গেছে। নাম মনে নেই।

প্রশ্ন : মসজিদে যিনি আজান দিতেন তার নাম কি?

উত্তর : মনে পড়ে না।

প্রশ্ন : দিনে কয় বার মসজিদে আজান দিত?

উত্তর : বলতে পারবো না।

প্রশ্ন : চরখালী গ্রামের ইয়াসিন মাওলানার নাম শুনেছেন?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : উনার পারেরহাটে একটা খানকা ছিল। সেখানে মাঝে মাঝে থাকতেন?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : হাজী বাড়ির মাস্টার কাসেমকে চিনতেন? (একই গ্রাম)

উত্তর : চিনতাম।

প্রশ্ন : রাজ্জাক রাজাকারকে চিনতেন?

উত্তর : হ্যাঁ চিনতাম।

প্রশ্ন : রাজাকাররা আপনার বাড়িতে একদিনই এসেছিল?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : হোগলা বুনিয়া থেকে পারেরহাটের দূরত্ব কত হবে?

উত্তর : আধা মাইল হবে রাস্তা ধরে গেলে।

প্রশ্ন : চালনা ব্রীজ হয়ে ছাড়া আপনার বাড়ি থেকে পারেরহাট বাজারে যাওয়া যেত না সেই সময়ে?

উত্তর : সত্য নয়।

প্রশ্ন : আপনার বিয়ের আশির্বাদ বিয়ের কত দিন আগে হয়?

উত্তর : বিয়ের ২/৩ দিন আগে সম্ভবত।

প্রশ্ন : আপনার বিয়ের লগ্ন রাতে না দিনে হয়েছিল?

উত্তর : রাতে।

প্রশ্ন : বিয়ের কতদিন পরে বৌভাত হয়?

উত্তর : বৌভাত করি নাই।

প্রশ্ন : বিয়ের পরে অস্টম মঙ্গলা বা ঘুরানি-ফিরানী হয়েছিল?

উত্তর : গরীব মানুষ আমি। অষ্টম মঙ্গলা করবো কিভাবে?

প্রশ্ন : বিয়ের পরে বৌকে নিজের বাড়িতেই তুলেছিলেন?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : আপনার এলাকার (হোগলা বুনিয়ার) শহীদ উদ্দিনের ছেলে সুবহান ও সুলতানকে চিনতেন?

উত্তর : হ্যাঁ।

প্রশ্ন : যুদ্ধের ২ বছর আগে (১৯৬৯ সালে) আপনি আপনার জমি জমা, বাড়ি ভিটা সব তার কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন?

উত্তর : সত্য নয়।

প্রশ্ন : ১৯৬৯ সালে করেননি তবে তাদের ২ ভাইয়ের কাছে বাড়ি ভিটা সব বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এটা তো ঠিক?

উত্তর : আমারটুকু বিক্রি করে দিই সুলতান ও সুবহানের কাছে। একটি কাগজ দিয়েছিলাম আমার অংশ বেচার জন্য। কিন্তু সে সবার অংশ লিখে নেয়।

প্রশ্ন : জমিটা যুদ্ধের কত দিন আগে বিক্রি করেন?

উত্তর : ২ বছর আগে।

প্রশ্ন : জমি আপনার অংশ বিক্রি করার পরে আপনি আপনার মৃত ভাই (নিকুঞ্জ) সাধু ঘরামীর অংশে আছেন? এখনো সেখানে আছেন?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : একই ঘরে আপনার বৌদি অর্থাৎ সাধু ঘরামীর স্ত্রীও থাকেন?

উত্তর : জি। তিনি আমাকে লালন পালন করেছেন।

প্রশ্ন : সাধু ঘরামী আপনার চেয়ে ক'বছরের বড়?

উত্তর : ২ বছরের বড়।

প্রশ্ন : আপনার বৌদি আপনার থেকে বয়সে ছোট?

উত্তর : হতে পারে।

প্রশ্ন : আপনার স্ত্রীর বাজারে যাতায়াত ছিল না?

উত্তর : জি, ছিল না।

প্রশ্ন : যেদিন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ঐ দিন আপনার স্ত্রী ঐ ঘরেই ছিল?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : আপনি মুসলমান হওয়ার পরে আর লুকিয়ে বেড়াতেন না?

উত্তর : মুসলমান হওয়ার পরে বাড়িতেই থাকতাম। কিন্তু ৩ দিন পরে কৃষ্ণ সাহা মারা যাওয়ার পরে আমি ভয়ে পালিয়ে বেড়াতাম।

প্রশ্ন : রাতে হোগলা বুনিয়া গ্রাম থেকে ৯ জন ধরে নিয়ে যাওয়ার আগেই আপনি মুসলমান হন?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : মিলিটারিরা পারেরহাটে কবে আসে?

উত্তর : বলতে পারবো না।

প্রশ্ন : স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে পিরোজপুরে অস্ত্রাগার লুট হয়। একথা শুনেছেন?

উত্তর : শুনেছি।

প্রশ্ন : এর কিছু দিন পর অর্থ লুট হয় (ট্রেজারী থেকে) এটা শুনেছিলেন।

উত্তর : শুনেছি।

প্রশ্ন : মিলিটারীরা পিরোজপুরে অস্ত্র না টাকা লুটের পরে আসে?

উত্তর : টাকা লুটের পরে আসে।

প্রশ্ন : মিলিটারীরা আসার পরে পিস কমিটি গঠন করা হয়?

উত্তর : সত্য নয়। পিস কমিটি আগেই গঠিত হয়।

প্রশ্ন : রাজাকার বাহিনী কখন গঠিত হয়?

উত্তর : শান্তি কমিটি গঠনের সঙ্গে সঙ্গেই হয়। তারিখ স্মরণ নেই।

প্রশ্ন : পিস কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গঠন করে দানেশ মোল্লা, সেকান্দার সিকদার। দেলোয়ার সিকদার, পিতা-রসুল সিকদার পারেরহাটে রাজাকার বাহিনী গঠন করে।

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : এর সাথে রাজ্জাক রাজাকারও ছিলো?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন মোসলেম মাওলানাও এর সাথে ছিল?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : রাজ্জাক রাজাকার ও দেলোয়ার সিকদার পিতা রসুল সিকদারকে অত্যাচারের কারণে স্বাধীনতার পর মানুষ মেরে ফেলেছিল?

উত্তর : বোধ হয় পিরোজপুরে মেরে ফেলে।

প্রশ্ন : হেলাল সাহেব আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন এই খবর কি আপনাকে আগে দেয়া হয়েছিল?

উত্তর : আরো লোক ছিলো। তাদেরকে দিয়ে খবর পাঠিয়েছিল।

প্রশ্ন : হেলাল সাহেবের কাছে জবানবন্দী দেয়ার আগে আপনার এই ঘটনা সম্পর্কে আর কোথায়ও কোনো অভিযোগ করেননি বা বিবৃতি দেননি?

উত্তর : না দেইনি।

প্রশ্ন : আপনার স্ত্রী কোনো রাজাকার বা পিস কমিটির চেয়ারম্যান এদের চিনতেন না?

উত্তর : না চিনতেন না।

প্রশ্ন : আপনি হেলাল সাহেবের কাছে প্রদত্ত জবানবন্দীতে আপনার ভাই নিকুঞ্জ ১৯৭০ সালে মারা গেছে। সে কথা বলেননি?

উত্তর : বলি নাই।

প্রশ্ন : ফালগুন মাসের শেষের দিকে আপনি বিয়ে করেছিলেন এ কথা আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?

উত্তর : সত্য নয়।

প্রশ্ন : দেলোয়ারের টুকটাক দোকান ছিল। স্থায়ী ছিলো না। একথাও আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?

উত্তর : বলেছি।

প্রশ্ন : দেলোয়ারের পরে সাঈদী নাম শুনেছি। একথাও তদন্ত কর্মকর্তাকে আপনি বলেননি?

উত্তর : নাও বলে থাকতে পারি, তখন আমি অসুস্থ ছিলাম।

প্রশ্ন তরুণী সিকদারদের অপহরণের ৩/৪ দিন পরে রাজাকাররা হোগলাবুনিয়ায় আপনার বাড়িতে বিকেলে যায়। এ কথা আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি।

উত্তর : স্মরণ নেই। তখন আমি অসুস্থ ছিলাম।

প্রশ্ন : স্ত্রী আপনাকে পরে বলেছিল যে, আপনাকে যে মুসলমান করেছিল সে এসেছিল। তুমি পালাও। একথা আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?

উত্তর : স্মরণ নেই। আমি অসুস্থ ছিলাম।

প্রশ্ন : বাজারে মসজিদে বসে মুসলমান হয়েছিলেন একথাও আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি।

উত্তর : মনে নেই।

প্রশ্ন : আপনার নাম রাখা হয় আলী আশরাফ এবং কৃষ্ণ বাবুর নাম রাখা হয় আলী আকবর এরূপ কথাও আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?

উত্তর : স্মরণ নেই।

প্রশ্ন : কাসেম আলী হাওলাদার ওরফে কাসেম মাস্টার আপনার একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের পরে জেলে যান এবং ৬/৭ মাস হাজত খেটেছেন।

উত্তর : সত্য।

প্রশ্ন : আপনার স্ত্রী শেফালী ঘরামীকে ধর্ষণ করেছিল কাসেম মাস্টার। এই অভিযোগ দেয়ার কারণে কাসেম মাস্টার ৬/৭ মাস হাজত খেটেছে।

উত্তর : সত্য নয়।

প্রশ্ন : আপনার সাথে বিরোধের কারণে আপনার স্ত্রী শেফালী ঘরামী ভারতে চলে গেছে।

উত্তর : সত্য নয়।

প্রশ্ন : আপনার কথিত মতে একদিন বিকেল ৪টার পরে আপনার স্ত্রী শেফালী ঘরামীর ধর্ষিতা হওয়ার কথা সত্য নয়।

উত্তর : সত্য।

প্রশ্ন : আপনি এবং আপনার বৌদি ২০১০ সাল থেকেই বয়স্ক ভাতা পান?

উত্তর : জি। ২ বছর হলো।

প্রশ্ন : আপনি ও আপনার বৌদি একই পাকে একান্নে খান?

উত্তর : জি।

প্রশ্ন : সাক্ষী দেয়ার জন্য ঢাকায় এসেছেন ক'দিন আগে?

উত্তর : রাত-দিন আপনার কাছে সমান। ১৮/২০ দিন হবে।

প্রশ্ন : আপনি সুস্থ অবস্থায় এসেছিলেন। এই মামলায় মিথ্যা সাক্ষী দেয়ার জন্য চাপ দেয়ায় আপনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন?

উত্তর : আমি প্রায় সুস্থ অবস্থায় এসেছি। তবে সত্য নয় যে তাদের চাপে অসুস্থ হয়েছি। মিথ্যা মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য দিলাম- এটাও সত্য নয়। তবে তারা সত্য নয় এমন কিছু আমাকে দিয়ে বলাতে চেয়েছিল যা আমি বলতে রাজি হই নাই।
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×